বাংলাদেশ ০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
পিরোজপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাথে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় কয়রায় অনলাইন জুয়া ও পারিবারিক কলহে যুবকের আত্মহত্যা সিলেট বিভাগে নারী আন্দোলনের দামিনামা নিয়ে আলোচনা। বুড়িচংয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হোসেনপুরে ঈদেমিল্লাদুন্নবী উপলক্ষে হামদ নাথ কেরাত গজল প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত ০৮ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রীয় কারাগার হতে পলাতক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন আসামী গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। পিরোজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আলোচনা সভায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৭ সিরাজগঞ্জে পৃথক তিনটি অভিযানে ফিন্সিডিল ও গাঁজাসহ ৫ জন গ্রেফতার। নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে- মাওলানা শাহজাহান মুলাদী ইউএনও-এর বিরুদ্ধে দূর্ণীতিবাজ শিক্ষকের মিথ্যা মামলা দায়ের কুবিতে প্রথমবারের মত ইদে মিলাদুন্নবী পালিত উলিপুরে হিফজুল কোরআন কমপ্লেক্স এর উদ্বোধন ও ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন ফুলবাড়ীতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) অনুষ্ঠিত ফুলবাড়ীতে ওয়ান-ডে ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

ঠাকুর গাঁওয়ের পীরগন্জে সাম্মাম ফল চাষে সফল কৃষক মোন্নাফ আলী

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ মে ২০২৩
  • ১৬৩৪ বার পড়া হয়েছে
সিরাজুল ইসলাম ঠাকুর গাঁও প্রতিনিধিঃ
মরুভূমির ফল সাম্মাম দেখতে অনকটা তরমুজের মত। ঠাকুর গাঁওয়ের,
পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষক মোন্নাফ আলী দেশের মাটিতে সাম্মাম ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষক মোন্নাফ আলী মণ্ডল। উপজেলার খনগাঁও ইউনিয়নের শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোন্নাফ আলী মণ্ডল এ ফলের চাষ করেছেন। ফলটিকে ‘রকমেলন’ নামেও চেনেন অনেকেই।
নতুন জাতের এ ফল উৎপাদনের খবর পেয়ে ওই কৃষকের ক্ষেতে প্রতিদিন ভিড় করছেন আশপাশের কৃষক ও দর্শণার্থীরা। অনেকেই এ ফল খেয়ে দেখছেন, কেউবা পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তরমুজ চাষের মতো করেই সারিবদ্ধভাবে তৈরি করা হয়েছে মাটির ঢিবি। দূর থেকে যে কেউ দেখলে মনে করবেন এটা তরমুজ ক্ষেত। কিন্তু কাছে যেতেই বোঝা গেল এটি তরমুজ নয় অন্যকিছু–সাম্মাম।
মাটির উপরে মালচিং বিছিয়ে সেখানে ‘সাম্মামের চারা রোপণ করা হয়েছে। আর ছিদ্র করা মালচিং এর ফাঁকা দিয়ে গজিয়ে উঠেছে ‘সাম্মামের গাছ।
মালচিং চীন ও জাপানে ব্যবহৃত বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে যখন গাছপালার গোড়া, সবজি ক্ষেত ও বাগানের বেডের জমি বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে দেওয়া হয় তখন তাকে বলে মালচ। আর এ পদ্ধতিকে বলে মালচিং। চাষ আধুনিকীকরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিক মালচিং-এর ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে।
মোন্নাফ আলী জানান, দীর্ঘদিন ধরে তরমুজ চাষ করে আসছেন। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে মরুভূমির ফল সাম্মাম চাষ দেখে উৎসাহী হন তিনি। চুয়াডাঙ্গার এক পরিচিত কৃষকের কাছ থেকে সাম্মাম ফলের বীজ সংগ্রহ করি। সেসব বীজ থেকে বাড়িতে চারা তৈরি করি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রাথমিকভাবে চারাগুলো রোপন করি ৭৫ শতক জমিতে। তরমুজের মতো করেই মাটিতে এই ফলের চাষ করা যায়। জমিতে রোপণের দেড় মাসের মধ্যে গাছে ফল আসতে শুরু করে। তিন মাসের মধ্যে পরিপক্ব হয় সাম্মাম। তিনি আরও বলেন, বীজ, চারা তৈরি, জমি চাষ, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ আনুষঙ্গিক প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা খচর হয়েছে। মাত্র তিন মাসের মধ্যে ফলটি বাজারজাত শুরু হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এসব বিক্রি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৫০ হাজার টাকার সাম্মাম ফল বিক্রি করেছি। খেতে যে পরিমাণ ফল রয়েছে, তাতে আরও দুই লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।
কম সময়ে এ ফলের চাষ খুব লাভজনক বলে কৃষক মোন্নাফ আলী জানান,
মোন্নাফ আলী বলেন, ফলটি সর্বনিম্ন ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ফল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হয়। আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা দরে। আগে ঢাকার কাওরান বাজারে নিয়ে ফলটি বিক্রি করেছি। এখন ক্ষেত থেকেই ঢাকার পাইকার এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
দেশে এই ফলের বাজার সম্প্রসারণ হলে কৃষকরা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন।
মোন্নাফ আলীর সাম্মামের ক্ষেত দেখতে ঠাকুরগাঁও শহর থেকে গেছেন আব্দুল্লাহ আল সুমন। তিনি বলেন, ইউটিউবে মরুভূমির ফল ‘সাম্মামের অনেক ভিডিও দেখেছি। কখনও কল্পনাও করতে পারিনি এই ফলটি ঠাকুরগাঁওয়ের মাটিতে হবে। ফলটি খেতেও অনেক সুস্বাদু ও মজাদার।
স্থানীয় কৃষক জয়নাল হক জানান, মোন্নাফ আলী সবসময় নতুন জাতের ফল চাষ করে থাকেন। এবার তিনি মরুভূমির একটি ফল চাষ করেছেন। তার খেতে ফলনও ভালো হয়েছে। মোন্নফের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে আগামী মৌসুমে স্থানীয় অনেক কৃষক এই ফলটি চাষের পরিকল্পনা করছেন বলে তিনি জানান। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম,বলেন কৃষকরা এই ফলটির চাষ সম্প্রসারণ করলে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন তেমনি পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে। বিভিন্ন দেশে সাম্মাম ফলটি অনেক জনপ্রিয়। আমাদের দেশে এটি নতুন আসলেও সুপার শপগুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর এ অঞ্চলের আবহাওয়াও সাম্মাম চাষে উপযোগী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের এই বিষয়ে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।
জনপ্রিয় সংবাদ

পিরোজপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাথে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

ঠাকুর গাঁওয়ের পীরগন্জে সাম্মাম ফল চাষে সফল কৃষক মোন্নাফ আলী

আপডেট সময় ০৬:০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ মে ২০২৩
সিরাজুল ইসলাম ঠাকুর গাঁও প্রতিনিধিঃ
মরুভূমির ফল সাম্মাম দেখতে অনকটা তরমুজের মত। ঠাকুর গাঁওয়ের,
পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষক মোন্নাফ আলী দেশের মাটিতে সাম্মাম ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষক মোন্নাফ আলী মণ্ডল। উপজেলার খনগাঁও ইউনিয়নের শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোন্নাফ আলী মণ্ডল এ ফলের চাষ করেছেন। ফলটিকে ‘রকমেলন’ নামেও চেনেন অনেকেই।
নতুন জাতের এ ফল উৎপাদনের খবর পেয়ে ওই কৃষকের ক্ষেতে প্রতিদিন ভিড় করছেন আশপাশের কৃষক ও দর্শণার্থীরা। অনেকেই এ ফল খেয়ে দেখছেন, কেউবা পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তরমুজ চাষের মতো করেই সারিবদ্ধভাবে তৈরি করা হয়েছে মাটির ঢিবি। দূর থেকে যে কেউ দেখলে মনে করবেন এটা তরমুজ ক্ষেত। কিন্তু কাছে যেতেই বোঝা গেল এটি তরমুজ নয় অন্যকিছু–সাম্মাম।
মাটির উপরে মালচিং বিছিয়ে সেখানে ‘সাম্মামের চারা রোপণ করা হয়েছে। আর ছিদ্র করা মালচিং এর ফাঁকা দিয়ে গজিয়ে উঠেছে ‘সাম্মামের গাছ।
মালচিং চীন ও জাপানে ব্যবহৃত বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে যখন গাছপালার গোড়া, সবজি ক্ষেত ও বাগানের বেডের জমি বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে দেওয়া হয় তখন তাকে বলে মালচ। আর এ পদ্ধতিকে বলে মালচিং। চাষ আধুনিকীকরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিক মালচিং-এর ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে।
মোন্নাফ আলী জানান, দীর্ঘদিন ধরে তরমুজ চাষ করে আসছেন। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে মরুভূমির ফল সাম্মাম চাষ দেখে উৎসাহী হন তিনি। চুয়াডাঙ্গার এক পরিচিত কৃষকের কাছ থেকে সাম্মাম ফলের বীজ সংগ্রহ করি। সেসব বীজ থেকে বাড়িতে চারা তৈরি করি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রাথমিকভাবে চারাগুলো রোপন করি ৭৫ শতক জমিতে। তরমুজের মতো করেই মাটিতে এই ফলের চাষ করা যায়। জমিতে রোপণের দেড় মাসের মধ্যে গাছে ফল আসতে শুরু করে। তিন মাসের মধ্যে পরিপক্ব হয় সাম্মাম। তিনি আরও বলেন, বীজ, চারা তৈরি, জমি চাষ, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ আনুষঙ্গিক প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা খচর হয়েছে। মাত্র তিন মাসের মধ্যে ফলটি বাজারজাত শুরু হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এসব বিক্রি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৫০ হাজার টাকার সাম্মাম ফল বিক্রি করেছি। খেতে যে পরিমাণ ফল রয়েছে, তাতে আরও দুই লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।
কম সময়ে এ ফলের চাষ খুব লাভজনক বলে কৃষক মোন্নাফ আলী জানান,
মোন্নাফ আলী বলেন, ফলটি সর্বনিম্ন ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ফল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হয়। আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা দরে। আগে ঢাকার কাওরান বাজারে নিয়ে ফলটি বিক্রি করেছি। এখন ক্ষেত থেকেই ঢাকার পাইকার এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
দেশে এই ফলের বাজার সম্প্রসারণ হলে কৃষকরা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন।
মোন্নাফ আলীর সাম্মামের ক্ষেত দেখতে ঠাকুরগাঁও শহর থেকে গেছেন আব্দুল্লাহ আল সুমন। তিনি বলেন, ইউটিউবে মরুভূমির ফল ‘সাম্মামের অনেক ভিডিও দেখেছি। কখনও কল্পনাও করতে পারিনি এই ফলটি ঠাকুরগাঁওয়ের মাটিতে হবে। ফলটি খেতেও অনেক সুস্বাদু ও মজাদার।
স্থানীয় কৃষক জয়নাল হক জানান, মোন্নাফ আলী সবসময় নতুন জাতের ফল চাষ করে থাকেন। এবার তিনি মরুভূমির একটি ফল চাষ করেছেন। তার খেতে ফলনও ভালো হয়েছে। মোন্নফের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে আগামী মৌসুমে স্থানীয় অনেক কৃষক এই ফলটি চাষের পরিকল্পনা করছেন বলে তিনি জানান। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম,বলেন কৃষকরা এই ফলটির চাষ সম্প্রসারণ করলে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন তেমনি পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে। বিভিন্ন দেশে সাম্মাম ফলটি অনেক জনপ্রিয়। আমাদের দেশে এটি নতুন আসলেও সুপার শপগুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর এ অঞ্চলের আবহাওয়াও সাম্মাম চাষে উপযোগী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের এই বিষয়ে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।