বাংলাদেশ ১০:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করলেন বদলগাছী থানার নবাগত ওসি।  সাবেক এমপির ভাঙচুরকৃত কবর পরিদর্শনে বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ গৌরনদীতে চাঁদাবাজি মামলা করে বাদী বিপাকে পরে বসত ভিটা ছাড়ার অভিযোগ অবশেষে শিক্ষক কনিকা মুখার্জির অলিখিত সাদা কাগজে সই দিয়ে পদত্যাগ পিরোজপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাথে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় কয়রায় অনলাইন জুয়া ও পারিবারিক কলহে যুবকের আত্মহত্যা সিলেট বিভাগে নারী আন্দোলনের দামিনামা নিয়ে আলোচনা। বুড়িচংয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হোসেনপুরে ঈদেমিল্লাদুন্নবী উপলক্ষে হামদ নাথ কেরাত গজল প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত ০৮ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রীয় কারাগার হতে পলাতক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন আসামী গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। পিরোজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আলোচনা সভায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৭ সিরাজগঞ্জে পৃথক তিনটি অভিযানে ফিন্সিডিল ও গাঁজাসহ ৫ জন গ্রেফতার। নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে- মাওলানা শাহজাহান মুলাদী ইউএনও-এর বিরুদ্ধে দূর্ণীতিবাজ শিক্ষকের মিথ্যা মামলা দায়ের

ধর্ষণে রক্তক্ষরণ দেখে শিশুকে হত্যা করা হয়, হত্যার পর ফের ধর্ষণ- আদালতে চাচাতো ভাইয়ের স্বীকারোক্তি

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:৩০:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২
  • ১৭০১ বার পড়া হয়েছে

ধর্ষণে রক্তক্ষরণ দেখে শিশুকে হত্যা করা হয়, হত্যার পর ফের ধর্ষণ- আদালতে চাচাতো ভাইয়ের স্বীকারোক্তি

 

 

 

 

 নোয়াখালী প্রতিনিধি

ধর্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে স্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সেই শিশু আছমা আক্তারকে (৫)। শুধু তাই নয়, হত্যার পরও শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং পরে পাশের বাড়ির সৌচাগারের ময়লার ট্যাংকে লাশ গুম করে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার নিহত শিশু আছমা আক্তারের  চাচাতো ভাই শাহাদাত হোসেন আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বর্ণনায় এসব তথ্য দিয়েছেন।

 

গতকাল রোববার (৩এপ্রিল) দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আসামি শাহাদাত হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নবনীতা গূহ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদালতের নির্দেশে আসামি শাহাদাত হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

জানতে চাইলে শিশু আছমা আক্তারকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় গ্রেপ্তার আসামি শাহাদাত হোসেনের আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন। শাহাদাতের জবানবন্দির বরাত দিয়ে   তিনি বলেন, শাহদাত স্বীকারোক্তিতে বলেছেন নির্যাতনের শিকার শিশুটি তাঁর চাচাতো বোন। তিনি ঘটনার দিন (২৪ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে বাড়ির সামনের বরই গাছের নিচে থেকে ডেকে তাঁর ঘরে নিয়ে যান। সেখানে অন্য কেউ ছিলো না।

 

ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, শাহাদাত স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, তিনি শিশুটিকে মুখ ও হাত-পা ছেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। তখন আছমা চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করলে তার নাক-মুখ ছেপে ধরে তাকে মেরে ফেলেছেন। এরপর লাশ বস্তায় ভরে বস্তাটি নিজের কক্ষের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। পরে সন্ধ্যার দিকে পাশের বাড়ির নুর নবীর ঘরের পশ্চিম পাশের সৌচাগারের ময়লার ট্যাংকের ঢাকনা খুলে সেখানে লুকিয়ে রাখেন।

 

পুলিশ জানায়, নিখোঁজের ঘটনার ১০ দিনের মাথায় সন্দেহভাজন হিসেবে শাহাদাত হোসেনকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি আছমাকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যার ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁর দেখানো মতে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাশের বাড়ির একটি সৌচাগারের ময়লার ট্যাংক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

 

নিহত আছমা আক্তার চাটখিল উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের মেঘা গ্রামের মৃধা বাড়ির মো. শাহজাহানের মেয়ে। পাঁচ বোনের মধ্যে আছমা ছিল সবার ছোট। উদ্ধারের পর শিশু আছমার লাশ শনিবার রাতে চাটখিল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে আজ রোববার সকালে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়না তদন্তের পর জানাজা শেষে বিকেলে পারিকারিক কবরস্থানে আছমার লাশ দাফন করা হয়।

 

নিহত আছমার বাবা মো. শাহজাহান স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারো কোন শত্রুতা কিংবা বিরোধ নেই। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারী শাহাদাতের ফাঁসি চাই। আইনের ফাঁক-ফোঁকরে যাতে সে কয়দিন পর ছাড়া পেয়ে না যায়। সে ছাড়া পেলে এভাবে আরও ঘটনা ঘটাবে। কারণ সে এমনিতে খারাপ প্রকৃতির।’

 

এদিকে নিখোঁজ শিশু আছমা আক্তারের লাশ উদ্ধারের পর থেকে চাটখিলের বদলকোট ইউনিয়নের মেঘা গ্রামের মৃধা বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। আছমার চার বোন ও মা-বাবার আহাজারি থামাতে পারছেন না আশপাশের বাড়ির বাসিন্দা ও আত্মীয়-স্বজনেরাও। চাটখিল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, শিশু আছমাকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও লাশগুমের অপরাধে গ্রেপ্তার শাহাদাতের বিরুদ্ধে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেছেন।

 

 

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করলেন বদলগাছী থানার নবাগত ওসি। 

ধর্ষণে রক্তক্ষরণ দেখে শিশুকে হত্যা করা হয়, হত্যার পর ফের ধর্ষণ- আদালতে চাচাতো ভাইয়ের স্বীকারোক্তি

আপডেট সময় ০৪:৩০:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২

 

 

 

 

 নোয়াখালী প্রতিনিধি

ধর্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে স্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সেই শিশু আছমা আক্তারকে (৫)। শুধু তাই নয়, হত্যার পরও শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং পরে পাশের বাড়ির সৌচাগারের ময়লার ট্যাংকে লাশ গুম করে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার নিহত শিশু আছমা আক্তারের  চাচাতো ভাই শাহাদাত হোসেন আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বর্ণনায় এসব তথ্য দিয়েছেন।

 

গতকাল রোববার (৩এপ্রিল) দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আসামি শাহাদাত হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নবনীতা গূহ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদালতের নির্দেশে আসামি শাহাদাত হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

জানতে চাইলে শিশু আছমা আক্তারকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় গ্রেপ্তার আসামি শাহাদাত হোসেনের আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন। শাহাদাতের জবানবন্দির বরাত দিয়ে   তিনি বলেন, শাহদাত স্বীকারোক্তিতে বলেছেন নির্যাতনের শিকার শিশুটি তাঁর চাচাতো বোন। তিনি ঘটনার দিন (২৪ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে বাড়ির সামনের বরই গাছের নিচে থেকে ডেকে তাঁর ঘরে নিয়ে যান। সেখানে অন্য কেউ ছিলো না।

 

ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, শাহাদাত স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, তিনি শিশুটিকে মুখ ও হাত-পা ছেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। তখন আছমা চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করলে তার নাক-মুখ ছেপে ধরে তাকে মেরে ফেলেছেন। এরপর লাশ বস্তায় ভরে বস্তাটি নিজের কক্ষের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। পরে সন্ধ্যার দিকে পাশের বাড়ির নুর নবীর ঘরের পশ্চিম পাশের সৌচাগারের ময়লার ট্যাংকের ঢাকনা খুলে সেখানে লুকিয়ে রাখেন।

 

পুলিশ জানায়, নিখোঁজের ঘটনার ১০ দিনের মাথায় সন্দেহভাজন হিসেবে শাহাদাত হোসেনকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি আছমাকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যার ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁর দেখানো মতে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাশের বাড়ির একটি সৌচাগারের ময়লার ট্যাংক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

 

নিহত আছমা আক্তার চাটখিল উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের মেঘা গ্রামের মৃধা বাড়ির মো. শাহজাহানের মেয়ে। পাঁচ বোনের মধ্যে আছমা ছিল সবার ছোট। উদ্ধারের পর শিশু আছমার লাশ শনিবার রাতে চাটখিল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে আজ রোববার সকালে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়না তদন্তের পর জানাজা শেষে বিকেলে পারিকারিক কবরস্থানে আছমার লাশ দাফন করা হয়।

 

নিহত আছমার বাবা মো. শাহজাহান স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারো কোন শত্রুতা কিংবা বিরোধ নেই। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারী শাহাদাতের ফাঁসি চাই। আইনের ফাঁক-ফোঁকরে যাতে সে কয়দিন পর ছাড়া পেয়ে না যায়। সে ছাড়া পেলে এভাবে আরও ঘটনা ঘটাবে। কারণ সে এমনিতে খারাপ প্রকৃতির।’

 

এদিকে নিখোঁজ শিশু আছমা আক্তারের লাশ উদ্ধারের পর থেকে চাটখিলের বদলকোট ইউনিয়নের মেঘা গ্রামের মৃধা বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। আছমার চার বোন ও মা-বাবার আহাজারি থামাতে পারছেন না আশপাশের বাড়ির বাসিন্দা ও আত্মীয়-স্বজনেরাও। চাটখিল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, শিশু আছমাকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও লাশগুমের অপরাধে গ্রেপ্তার শাহাদাতের বিরুদ্ধে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেছেন।