জন জীবন ঃঃ
রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মুক্তারপুর সেতু চালুর প্রায় ১৭ বছর ধরে টোল আদায়ের পর ছাত্র-জনতার দাবি সত্ত্বেও কেন টোল আদায় বন্ধ হচ্ছে না? দৈনিক সভ্যতার আলো সম্পাদকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত।
এছাড়া মতবিনিময়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জেলার নানা অসঙ্গতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন নয়া জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে।
সভায় গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ বন্ধ থাকা ফেরি চালু, বাজার মনিটরিং জোরদার, আসন্ন আলু মৌসুমে প্রয়োজনীয় সারের বরাদ্দ নিশ্চিত, জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, আন্তঃজেলা বাস সার্ভিস চালু, চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট বন্ধ দাবি করা হলেও গণ পরিবহনের ভাড়া কমছে না কেন? মুন্সীগঞ্জে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের নামে সড়কের নামকরণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা, জেলায় খাস জমির পরিমাণ এবং কাদের লিজ দেয়া হয়েছে তার তালিকা প্রকাশ, পাসপোর্ট অফিসের অনিয়ম, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকসহ প্রবাসীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম বন্ধ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ, ভোক্তা অধিকার, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কার্যক্রমকে গতিশীল করা, শহরের ভাঙা সড়কগুলো জরুরি সংস্কার উদ্যোগ, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সংস্কার ও গণসদন পুনর্নির্মাণ, শহরে বিনোদন কেন্দ্র ও শিশু পার্ক নির্মাণ, মেঘনা ও পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন, তালতলা-গৌরগঞ্জ খালে বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করা, জেলার প্রত্নতত্ত্ব নির্দশনগুলো সংস্কার করে পর্যটনবান্ধব, জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে মাঠ পর্যায় থেকে খেলোয়াড় তৈরির উদ্যোগ নেয়া, গ্যাস সংকট নিরসনে প্রশস্ত পাইপ প্রতিস্থাপন, ধলেশ্বরী-শীতলক্ষ্যায় নদীতে জাহাজ-লাইটারের যত্রতত্র নোঙর রোধে ব্যবস্থা নেয়া, মোল্লাবাজার সেতুর নির্মাণ কাজে গতি আনা ও মুন্সীগঞ্জ শহরে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়াসহ নানা বিষয় উঠে আসে।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকরা জেলার বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর প্রশাসনের করণীয় বিষয়ে জেলা প্রশাসকের আহ্বানের প্রেক্ষিতে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। পরে জেলা প্রশাসক উত্থাপিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার আশ্বাস দেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেন।
মতবিনিময়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ও রাজস্ব) ফেরদৌস ওয়াহিদ, সহকারী কমিশনার খালিদ সাইফুল্লাহ।
গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন– মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি বাছির উদ্দিন জুয়েল, মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক আহ্বায়ক মঞ্জুর মোর্শেদ, মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক চার সভাপতি মীর নাসির উদ্দিন উজ্জ্বল, শহীদ-ই-হাসান তুহিন, কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু ও রাসেল মাহমুদ, মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি গোলজার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজন হায়দার জনি, সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান টিপু, মাহবুবুর রহমান, মাহাবুব আলম লিটন, অ্যাডভোকেট ফারহানা মির্জা ও মাইনুদ্দিন সুমন, সাংবাদিক নাদিম হোসাইন, তানজিল হাসান, ফয়সাল হোসেন, রাজিবুল হাসান জুয়েল, জুয়েল রানা, মাসুদ রানা, আরাফাত রায়হান সাকিব, জিতু রায়, শিহাব আহমেদ, হুমায়ূন কবির, রাজ মল্লিক, শাহানাজ হীরা, শ্রীকান্ত দাস ও মো. ফরহাদ মিয়া প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এই মতবিনিময়ে অংশ নেন।
এ সময় দীর্ঘ প্রায় তিনঘণ্টা গণমাধ্যমকর্মীদের মতামত মনোযোগ দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে শোনেন জেলা প্রশাসক ও জেলা মাজিস্ট্রেট ফাতেমা তুল জান্নাত এবং তিনি সবাইকে সাথে নিয়ে মুন্সীগঞ্জকে এগিয়ে নেয়ার আশা ব্যক্ত করেন।