জবি প্রতিনিধি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবির) একমাত্র ছাত্রীদের আবাসস্থল ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ‘ হলের দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
(বুধবার) বেলা দেড়টায় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
হলের দ্বারোদঘাটনের অপেক্ষায় সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সেজেগুজে ক্যাম্পাসে এসে আনন্দঘন মুহূর্তের জন্য আগ্রহ সহকারে অপেক্ষা করেন। দুপুর সাড়ে সাড়ে ১২ টা নাগাদ হলের গেট উন্মুক্ত করলে শিক্ষার্থীরা সারিবদ্ধ ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলে প্রবেশ করেন।
শিক্ষামন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ লাল ফিতা কেটে হলের দ্বার উদ্ঘাটন করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমি সরাসরি আসতে পারলে খুবই ভালো লাগতো কিন্তু জরুরি কিছু কাজ থাকার জন্য তোমাদের সাথে সুন্দর মুহুর্ত উপভোগ করার সুযোগ থেকে নিজে বঞ্চিত হয়েছি ইনশাল্লাহ তোমাদের সাথে খুব শীঘ্রই দেখা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, আমাকে এখানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আমি আমার দায়িত্বের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করবো বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের জন্য। আমরা হলে প্রযোজনে আরও আবাসিক শিক্ষক দিবো। বাংলাদেশে এ প্রথম কোনো হলে আমরা শতভাগ ডিজিটাল আইডিকার্ড পাঞ্চ করে শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ করাবো।
তিনি আরও বলেন,আজকে থেকেই আংশিক হলেও অনাবাসিক তকমা দূর হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের। এ হলে এখনো অনেক কিছুর প্রয়োজন রয়েছে আমরা দ্রুত সময়ে চেষ্টা করবো ছাত্রলীগের সাথে সবগুলো যৌক্তিক দাবি পূরণ করতে আমাদের শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ছাত্রলীগের বিক্ষোভের কথা শুনলে সবাই ভয় পাবে এখন কিন্তু তোমাদের সকল যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ করা হবে শীঘ্রই। তবে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি হলটা অর্জনের সাথে যাদের অবদান রয়েছে তাদের একটা ছবি থাকতে হবে হলে।
অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের আর কেউ অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় বলতে পারবে না। অনাবাসিকের তকমা থেকে আমরা বেরিয়ে সুন্দ একটা হলকে সবসময় আমরা সুন্দর রাখার চেষ্টা করবে তোমরা।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেন, তোমাদের হলে অনেক কিছু সীমাবদ্ধ থাকবে কিন্তু তারপরও তোমরা কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা করবা না। আমরা তোমাদের যে কোন বিষয়ে সব সময় পাশে থাকবো। তিনি আরও বলেন আমাদের ছেলেদের একটি হল হবে শীঘ্রই যার নাম হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসেন বলেন, হলের নামের আগে বেগম থাকতে পারবে না। বেগম না উঠালে ছাত্রলীগ দুর্বার আন্দোলন করবে। এই হলে কোন লিফট-ম্যান নেই, ইলেকট্রিশিয়ান নেই, লন্ডি বয় সহ আরও অনেক কিছুই নেই এভাবে তো একটা হল চলতে পারে না। আমাদের বোনদের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে দ্রুত সময়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সবাই যেভাবে পারছে শোষণ করছে এগুলো দেখার কেউ ছিলো না বিগত দিনে কিন্তু এখন ছাত্রলীগের ভাই বোনদের সাথে নিয়ে আমাদের সকল পাওনা আদায় করবো। একটা হলে দারোয়ান নেই, নিরাপত্তা কর্মী নেই, বিউটি পার্লার নেই তাহলে হল কিভাবে উদ্বোধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছাত্রলীগ জানে কিভাবে তাদের দাবি আদায় করতে হব তার পূর্বে আপনারা সকল কিছুর ব্যবস্থা করেন হলে।
সভাপতি বক্তব্য বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড.শামীমা বেগম বলেন, তোমরা হলের মধ্যে বেগম মুজিবের প্রেরণায় সুসংগঠিত হয়ে সকল ধরনের শৃঙ্খলা মেনে চলবে। হলে কোনো ধরনের সমস্যা হলে আমাদের জানাবে আমাদের আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো সকল ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য। আগামীকাল থেকে দাফে দাফে আমরা হলে তোমাদের উঠাবো।