বাংলাদেশ ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
ঢাকায় বাল্কহেডে নিহতদের স্বরনে রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন দক্ষিন শাখা শ্রমিক দলের দোয়া-মিলাদ ট্রাকে করে গাঁজা পরিবহন কালে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ০৩ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। সাংবাদিক বাহার উদ্দিন সরকারের ৮ ম মৃত্যু বার্ষিকী পালন। কচুয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত মুক্ত হত্যার খুনিদের ফাঁসির দাবিতে কচুয়ায় মানববন্ধন সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চাইলেন রায়গঞ্জের পাঙ্গাসী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মু্ক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান মল্লিক নাটোর জেলা কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সভা ও বেসিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় বিজিবির অভিযানে ভারতীয় মদ ও ফেন্সিডিলসহ আটক-০৪ হোসেনপুরে গণ অধিকার পরিষদের আনন্দ মিছিল। পোড়াদহের চিথলিয়া রেল ব্রীজ থেকে নিচে পড়ে এক শিশু নিখোঁজ, দীর্ঘ (৫-৬)ঘন্টা পর উদ্ধার ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পুজা উদযাপন পরিষদ গঠন শিক্ষার্থীদের বের করে জবির হল দখল করে কক্ষে তালা দিল ছাত্রদল ধান ক্ষেতের সাথে এ কেমন শত্রুতা লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের মধ্যে পরিত্যক্ত অবস্থায় ০৩টি শর্টগান, ৯৮ রাউন্ড কার্তুজ ও ০১টি পুলিশ বেল্ট উদ্ধার করেছে র‌্যাব। আল্লামা সাঈদীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে : নাজিরপুরে মাসুদ সাঈদী

পিরোজপুরে নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে তৈরি সূতা যাচ্ছে বিদেশে : অর্ধশত পরিবারের ভাগ্য বদল

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:১০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
  • ১৬২৫ বার পড়া হয়েছে

পিরোজপুরে নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে তৈরি সূতা যাচ্ছে বিদেশে : অর্ধশত পরিবারের ভাগ্য বদল

 

 

মামুন হোসেন স্টাফ রির্পোটার: পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নে নারিকেলের ফেলে দেয়া ছোবড়া দিয়ে সূতা তৈরি করে প্রায় অর্ধশত পরিবারের জীবন পাল্টে গেছে। এ শিল্পের সাথে জড়িত নারী- পুরুষের ভাগ্যের চাকা সচল হয়েছে। ফেলে দেয়া নারিকেলের ছোবড়া যেন তাদের কাছে সোনার হরিণ হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকাটি নারিকেলের ছোবড়া গ্রাম নামে পরিচিতি লাভ পেয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নে অর্ধশত পরিবারের নারী- পুরুষ পারিবারিভাবে এই পেশার সাথে জড়িত। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সকাল থেকে এই পেশার মানুষগুলো কাজে লেগে যান। তাদের কাজ হলো নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে সুতা তৈরি করা। আর সুতা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে পরিবারের অর্থনৈতিক চাকা সচল করছেন এ শিল্পের শ্রমিকরা। নারিকেলের ছোবরা দিয়ে তৈরি প্রতি কেজি সুতা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। বছরে এ জেলা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার সুতা বিক্রি হয়। পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই সুতো রপ্তানি হচ্ছে। প্রায় ৫০ বছর ধরে এই কাজে জড়িত ব্যবসায়ীরা নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে সুতা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদা পুরন করে আসছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারী ক্রেতারা এই সুতা দিয়ে বিভিন্ন উপকরন তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করে থাকেন। তাদের দাবি, সরকারের সহযোগিতা পেলে এ পেশার সাথে জড়িতরা স্বচ্ছলতার মুখ দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

নারী শ্রমিক লাইলী বেগম জানান, এই কাজ করতে গিয়ে আমাদের হাত প্রতিনিয়ত রক্তাত্ত হচ্ছে। তবুও আমরা কষ্ট করে সূতা তৈরির কাজ করছি। কারণ, এই আয় দিয়ে সংসার চলছে এবং ছেলে-মেয়েকে পড়াশোনা খরচ বহন করা হয়। সরকার সহ ব্যাংকগুলোর একটু সহযোগিতা পেলে আমাদের পেশায় আরও উন্নতি হতো। এ শিল্পের মাধ্যমে সরকারও লাভবান হতো।

ছোবড়া শিল্পের কারখানার কারিকর মোস্তফা জানান, আগে নারিকেলের ছোবড়ার আশঁ দিয়ে জাজিম, পাপোস, রশি, সোফা ও চেয়ারের গদিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা হতো। বেডিং শিল্পেও ছোবড়ার ব্যবহার ছিলো। আর ছোবড়া থেকে ফাইবার তৈরির সময় যে গুড়া পাওয়া যেতো তা কোন কাজে লাগতো না। কিন্তু এখন কোকো ফাইবার নামে ছোবড়ার আশঁ এবং কোকোডাস্ট নামে ছোবড়ার গুড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

এছাড়াও নারিকেলের ছোবড়া বা আঁশ দিয়ে এখন পাখির বাসা সহ মালচিং ম্যাট, কোকো পোল, বাসকেট, ল্যাম্প শেডসহ প্রায় ২০ ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। এ আশঁ পাইকারারা সংগ্রহ করে দেশে বিক্রি আর তা থেকে এসব আকর্শনী পণ্য উৎপাদক করে। এ পণ্যগুলো বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের ছোবড়া শিল্পের মালিক বৃদ্ধ আব্দুল বারেক জানান, নারিকেলের ছোবড়ার সুতা দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারী ক্রেতারা এই সুতা ক্রয় করে বিভিন্ন উপকরন তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করছেন।

তিনি আরো জানান, সে এই শিল্পের সাথে ৫০ বছর ধরে নিয়োজিত, তার বাবাও এই কাজ করতেন। কিছুদিন ধরে এই সুতো বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে তাই তারা কাজ শুরু করেছেন। ছোবড়া দিয়ে সুতা পাকিয়ে তারা ২৫০ টাকা কেজি দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। ছোবড়ার আশঁও বিভিন্ন সময় বেশ ভাল দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি এ শিল্পের সাথে টিকে থাকতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

পিরোজপুরের বিসিকের উপব্যবস্থাপক আলী আজগর নাসির জানান, পিরোজপুরে নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে সুতো তৈরি হচ্ছে এটা একটি ভাল দিক। এর মাধ্যমে বৈদেশি মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। বিসিক পিরোজপুর এর উন্নয়নের জন্য কাজ করবে। নারিকেলের ছোবাড়া দিয়ে সুতো তৈরি আনতে পারে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক মুক্তি। সরকারি একটু সহযোগিতা পেলে পরিবার গুলোতে আসবে অর্থনৈতি স্বচ্ছলতা রপ্তানিতে আসবে আরো বেশী গতি। অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা এমটাই আশা করেন এর সাথে সংশ্লিটরা।

 

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকায় বাল্কহেডে নিহতদের স্বরনে রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন দক্ষিন শাখা শ্রমিক দলের দোয়া-মিলাদ

পিরোজপুরে নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে তৈরি সূতা যাচ্ছে বিদেশে : অর্ধশত পরিবারের ভাগ্য বদল

আপডেট সময় ০৮:১০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

 

 

মামুন হোসেন স্টাফ রির্পোটার: পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নে নারিকেলের ফেলে দেয়া ছোবড়া দিয়ে সূতা তৈরি করে প্রায় অর্ধশত পরিবারের জীবন পাল্টে গেছে। এ শিল্পের সাথে জড়িত নারী- পুরুষের ভাগ্যের চাকা সচল হয়েছে। ফেলে দেয়া নারিকেলের ছোবড়া যেন তাদের কাছে সোনার হরিণ হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকাটি নারিকেলের ছোবড়া গ্রাম নামে পরিচিতি লাভ পেয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নে অর্ধশত পরিবারের নারী- পুরুষ পারিবারিভাবে এই পেশার সাথে জড়িত। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সকাল থেকে এই পেশার মানুষগুলো কাজে লেগে যান। তাদের কাজ হলো নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে সুতা তৈরি করা। আর সুতা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে পরিবারের অর্থনৈতিক চাকা সচল করছেন এ শিল্পের শ্রমিকরা। নারিকেলের ছোবরা দিয়ে তৈরি প্রতি কেজি সুতা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। বছরে এ জেলা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার সুতা বিক্রি হয়। পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই সুতো রপ্তানি হচ্ছে। প্রায় ৫০ বছর ধরে এই কাজে জড়িত ব্যবসায়ীরা নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে সুতা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদা পুরন করে আসছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারী ক্রেতারা এই সুতা দিয়ে বিভিন্ন উপকরন তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করে থাকেন। তাদের দাবি, সরকারের সহযোগিতা পেলে এ পেশার সাথে জড়িতরা স্বচ্ছলতার মুখ দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

নারী শ্রমিক লাইলী বেগম জানান, এই কাজ করতে গিয়ে আমাদের হাত প্রতিনিয়ত রক্তাত্ত হচ্ছে। তবুও আমরা কষ্ট করে সূতা তৈরির কাজ করছি। কারণ, এই আয় দিয়ে সংসার চলছে এবং ছেলে-মেয়েকে পড়াশোনা খরচ বহন করা হয়। সরকার সহ ব্যাংকগুলোর একটু সহযোগিতা পেলে আমাদের পেশায় আরও উন্নতি হতো। এ শিল্পের মাধ্যমে সরকারও লাভবান হতো।

ছোবড়া শিল্পের কারখানার কারিকর মোস্তফা জানান, আগে নারিকেলের ছোবড়ার আশঁ দিয়ে জাজিম, পাপোস, রশি, সোফা ও চেয়ারের গদিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা হতো। বেডিং শিল্পেও ছোবড়ার ব্যবহার ছিলো। আর ছোবড়া থেকে ফাইবার তৈরির সময় যে গুড়া পাওয়া যেতো তা কোন কাজে লাগতো না। কিন্তু এখন কোকো ফাইবার নামে ছোবড়ার আশঁ এবং কোকোডাস্ট নামে ছোবড়ার গুড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

এছাড়াও নারিকেলের ছোবড়া বা আঁশ দিয়ে এখন পাখির বাসা সহ মালচিং ম্যাট, কোকো পোল, বাসকেট, ল্যাম্প শেডসহ প্রায় ২০ ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। এ আশঁ পাইকারারা সংগ্রহ করে দেশে বিক্রি আর তা থেকে এসব আকর্শনী পণ্য উৎপাদক করে। এ পণ্যগুলো বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের ছোবড়া শিল্পের মালিক বৃদ্ধ আব্দুল বারেক জানান, নারিকেলের ছোবড়ার সুতা দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারী ক্রেতারা এই সুতা ক্রয় করে বিভিন্ন উপকরন তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করছেন।

তিনি আরো জানান, সে এই শিল্পের সাথে ৫০ বছর ধরে নিয়োজিত, তার বাবাও এই কাজ করতেন। কিছুদিন ধরে এই সুতো বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে তাই তারা কাজ শুরু করেছেন। ছোবড়া দিয়ে সুতা পাকিয়ে তারা ২৫০ টাকা কেজি দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। ছোবড়ার আশঁও বিভিন্ন সময় বেশ ভাল দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি এ শিল্পের সাথে টিকে থাকতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

পিরোজপুরের বিসিকের উপব্যবস্থাপক আলী আজগর নাসির জানান, পিরোজপুরে নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে সুতো তৈরি হচ্ছে এটা একটি ভাল দিক। এর মাধ্যমে বৈদেশি মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। বিসিক পিরোজপুর এর উন্নয়নের জন্য কাজ করবে। নারিকেলের ছোবাড়া দিয়ে সুতো তৈরি আনতে পারে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক মুক্তি। সরকারি একটু সহযোগিতা পেলে পরিবার গুলোতে আসবে অর্থনৈতি স্বচ্ছলতা রপ্তানিতে আসবে আরো বেশী গতি। অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা এমটাই আশা করেন এর সাথে সংশ্লিটরা।