কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের উলিপুরে শ্রী সুজিৎ চন্দ্র কর্মকার (৯০) অর্ধযুগ ধরে লোহা পিটিয়ে চালিয়ে আসছেন সংসার। তিনি প্রায় ৬০ বছর থেকে এ পেশায় কাজ করে যাচ্ছেন। বার্ধ্যক্যের হাত ছানি দিলেও জীবন বাঁচার তাগিদে তাকে লোহা পিটুনি থেকে থামিয়ে রাখতে পারেনি। এ ছাড়াও বাপ দাদার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে জীবনের সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।শারীরিক শ্রম দিয়ে প্রতিদিন দা, বটি, কুঠার, হাতুড়ি, ছেনা, চাকু ও খুন্তিসহ লোহার জিনিস পত্র তৈরি করছেন। তার ৪ ছেলে ৩ মেয়ে রয়েছে। ৪ ছেলেই একই পেশায় রয়েছেন। ৪ ছেলেই আলাদা সংসারে থাকলেও বর্তমান তিনি এবং তার স্ত্রী পুষ্প রানী একই সাথে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে শ্রী সুজিৎ চন্দ্র কর্মকার (৯০) অর্ধযুগ ধরে লোহা পিটিয়ে চালিয়ে আসছেন সংসার। তিনি প্রায় ৬০ বছর থেকে এ পেশায় কাজ করে যাচ্ছেন। বার্ধ্যক্যের হাত ছানি দিলেও জীবন বাঁচার তাগিদে তাকে লোহা পিটুনি থেকে থামিয়ে রাখতে পারেনি। এ ছাড়াও বাপ দাদার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে জীবনের সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।শারীরিক শ্রম দিয়ে প্রতিদিন দা, বটি, কুঠার, হাতুড়ি, ছেনা, চাকু ও খুন্তিসহ লোহার জিনিস পত্র তৈরি করছেন। তার ৪ ছেলে ৩ মেয়ে রয়েছে। ৪ ছেলেই একই পেশায় রয়েছেন। ৪ ছেলেই আলাদা সংসারে থাকলেও বর্তমান তিনি এবং তার স্ত্রী পুষ্প রানী একই সাথে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সরেজমিন উপজেলার পৌরসভার পূর্ব নাওডাঙ্গার বাকরের হাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রী সুজিৎ চন্দ্র কর্মকার লোহা পিটুনিতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। নীরব পরিবেশে ঠকঠক আওয়াজ। নিঃশব্দ পরিবেশটাকে ছাপিয়ে তুলছেন হাতুড়ির শব্দ আর হাঁপড়ে। যেমনি করে মুগুর উঠছে, মুগুর নামছে ভাঙছে মাটির ঢেলা। ঠিক তেমনি করেই হাঁপড় উঠছে, হাঁপড় নামছে গলছে লোহার ঢেলা। এই লোহাকে আগুনে গলিয়ে নানা আকারে তৈরি করছেন নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী।
তিনি জানান, আমার শরীরে বার্ধ্যক্যের ছাপ লাগায় আগের মত পরিশ্রম করতে পারিনা। আগের মত আয় রোজগার তেমন করতে পারিনা। যা আয় হয় তা দিয়ে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। প্রায় সময় একা একা কাজ চালিয়ে যেতে হয়। আমার সহধর্মিণী সার্বক্ষণিক আমাকে কাজের সহায়তা করেই আসছেন।
আগে দিনে, আয় হত ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। বর্তমান দিনে আয় হয় মাত্র ২ শ থেকে ২ শ ৫০ টাকা। তবে বর্তমান আধুনিক যুগে অনেক কিছুই বদলেছে। নিত্য ব্যবহার্য উপকরণ ব্যবহারে শহরাঞ্চলে নতুনত্বের ছোঁয়া লাগলেও গ্রামাঞ্চলে লোহার তৈরি বিভিন্ন উপকরণের ব্যবহার এখনো কমেনি। কারণ কৃষি থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজে প্রতিনিয়ত লোহার উপকরণের প্রয়োজন হয়। কৃষি কাজে কোদাল, লাঙ্গল, কাচি/কাস্তে, শাবল, ছেনি/নিড়ানি আর সাংসারিক কাজে দা, বটি, খুন্তি, কুড়াল, চাকু ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তবে উপকরণ ব্যবহারে পরিবর্তন না এলেও পরিবর্তন এসেছে পেশাজীবীদের। আগে যারা লোহার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তাদের এই কাজ এখন বন্ধ প্রায়।
সরকারি কোন অনুদান আমাকে দেয়া হলে বাকি জীবনটা ভালো ভাবে কাটাতে পারতাম বলে জানান তিনি।
দা ও কাস্তে তৈরি করে নিতে আসা রিয়াজুল ইসলাম (৬০) বলেন, আমি বহু বছর থেকে দা, কাস্তে তৈরি করে নেই। ওনার অনেক বয়স হয়েছে তার পরেও যত্ন সহকারে দা, কাস্তে তৈরি করে দেন। এ সকল উপকরণ তৈরি করার কর্মকার দিন দিন বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে।
দা ও কাস্তে তৈরি করে নিতে আসা রিয়াজুল ইসলাম (৬০) বলেন, আমি বহু বছর থেকে দা, কাস্তে তৈরি করে নেই। ওনার অনেক বয়স হয়েছে তার পরেও যত্ন সহকারে দা, কাস্তে তৈরি করে দেন। এ সকল উপকরণ তৈরি করার কর্মকার দিন দিন বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে।
তবে তাদেরকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান তিনি।
একই এলাকার কর্মকার পান কেষ্ট, সুধানসু, মুকুল ও নারায়ন বলেন, লোহা কয়লার দাম বেড়েছে ঠিকই কিন্তু তাদের হাতে তৈরি সরঞ্জামাদির দাম বাড়েনি। অবার অনেকে বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখার কারণে মানবেতার জীবনযাপন করছেন। তা সত্বেও গ্রামীণ মেলায় লোকজ পণ্য হিসেবে কামারদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীই আজও শোভা বর্ধণ করে আসছে।আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় নিত্য নতুন জিনিসপত্রের দাপটে ধ্বংসের পথে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কামারশিল্প। যুগের পরিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় একটু একটু করে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে হাতে তৈরি লোহার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। নতুন করে স্থান করে নিচ্ছে চায়না ও ভারত থেকে আসা অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের যন্ত্রপাতি। দাম বেশি হলেও টেকসই হওয়াতে ক্রেতারা কিনছেন স্টিলের চাকু, খুন্তি, কাস্তেসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ফলে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের যন্ত্রপাতির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে কামারশিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকেই এখন এ পেশা পরিবর্তন করে ফেলেছেন। মাথায় হাত পড়েছে বাংলার কামারদের। প্রয়োজনীয় জ্বালানি কয়লা ও লোহাজাত শিল্পে আধুনিক ব্যবস্থা প্রবর্তন হওয়ায় কামারদের সুদিন আর নেই।
একই এলাকার কর্মকার পান কেষ্ট, সুধানসু, মুকুল ও নারায়ন বলেন, লোহা কয়লার দাম বেড়েছে ঠিকই কিন্তু তাদের হাতে তৈরি সরঞ্জামাদির দাম বাড়েনি। অবার অনেকে বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখার কারণে মানবেতার জীবনযাপন করছেন। তা সত্বেও গ্রামীণ মেলায় লোকজ পণ্য হিসেবে কামারদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীই আজও শোভা বর্ধণ করে আসছে।আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় নিত্য নতুন জিনিসপত্রের দাপটে ধ্বংসের পথে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কামারশিল্প। যুগের পরিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় একটু একটু করে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে হাতে তৈরি লোহার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। নতুন করে স্থান করে নিচ্ছে চায়না ও ভারত থেকে আসা অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের যন্ত্রপাতি। দাম বেশি হলেও টেকসই হওয়াতে ক্রেতারা কিনছেন স্টিলের চাকু, খুন্তি, কাস্তেসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ফলে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের যন্ত্রপাতির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে কামারশিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকেই এখন এ পেশা পরিবর্তন করে ফেলেছেন। মাথায় হাত পড়েছে বাংলার কামারদের। প্রয়োজনীয় জ্বালানি কয়লা ও লোহাজাত শিল্পে আধুনিক ব্যবস্থা প্রবর্তন হওয়ায় কামারদের সুদিন আর নেই।
এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় পূঁজি না থাকায় ও উপকরণ সমূহ সঠিক ভাবে না পাওয়ায় তাদের এ দুরবস্থা হচ্ছে বলে জানান তারা।
উক্ত এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুকুল ইসলাম জানান, শ্রী সুজিৎ চন্দ্র কর্মকার বহুদিন ধরে এ পেশায় নিয়োজিত।তিনি এখন প্রায় কর্মক্ষম হয়ে পড়েছেন। তাকে বয়স্ক ভাতা দেয়া হয়েছে। কামারশিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে সরকারিভাবে অনুদান দিয়ে সাহায্য করলে তাদের এ পেশাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।