পঞ্চগড় প্রতনিধি :
পঞ্চগড়ে বিএনপির গণমিছিল কেন্দ্র করে পুলিশ এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তখন গণমিছিলে আসা আব্দুর রশিদ আরেফিন (৫১) নামে এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়।
পুলিশের লাঠিচার্জে ওই ব্যক্তি মারা গেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম সিরাজুল হুদা বলেছেন, বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশের মারপিটে প্রাণহানি হয়নি। আব্দুর রশিদ আরেফিন হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি এ রোগে মারা গেছেন। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। পুলিশ সুপার বলেন, ‘আব্দুর রশিদ আরেফিন দুপুর আড়াইটার দিকে পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে তাকে ইসিজি করা হয়।
পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা জেনেছি, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আমরা তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তার হার্টে বাইপাস অপারেশন করা ছিল।’ পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আজকে বিএনপির পূর্বনির্ধারিত গণমিছিল কর্মসূচি ছিল। আমরা বিএনপির লোকজনকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে অনুরোধ করি। আমরা নিরাপত্তার কারণে ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করি। কিন্তু তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি না করে লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে মিছিল করে এবং পুলিশের নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে ভাঙচুরের করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে কোনো উস্কানি ছাড়াই তারা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।’
পুলিশ সুপার বলেন, ‘যেহেতু পুলিশের উপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং রাস্তায় ভাঙচুরের চেষ্টা হচ্ছিল, তাই স্বাভাবিকভাবে পুলিশ টিয়ারশেল এবং শর্টগানের গুলি করে। নিরাপত্তারক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। এ ঘটনায় যারা মিছিল করেছেন, তাদের ২০-২৫ জন এবং পুলিশের ১০-১২ জন আহত হয়েছে। আর পুলিশি কাজে বাধা দেওয়া এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করায় আমরা লিগ্যাল প্রসেসে মামলা করবো এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।’
এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেফতার হয়নি বলেও জানান তিনি। দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে গণমিছিলের প্রস্তুতি নেয় বিএনপি। বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকে সেখানে। পরে দলটি গণমিছিল বের করলে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের হামলায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে এবং একজন মারা গেছে। মিছিলে এই আক্রমণ সুপরিকল্পিত, এটি হত্যা। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি।