মোঃ অপু খান চৌধুরী।।
আমি ৩০ টি পুকুরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করি। এর মধ্যে ২০ টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। পুকুরের চারদিকে জাল দিয়ে মাছ আটকে রাখার চেষ্টা করেছি তার মধ্যে ১০ টি রক্ষা করতে পেরেছি,২০ টি পুকুরের মাছ বন্যায় নিয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ৩ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। আমি শেষ হয়ে গেছি। ঋণ করে মাছ চাষ করেছিলাম। এখন কি করে ঋণ পরিশোধ করব?
এভাবে নিজের কষ্টের কথা গুলো বলছিলেন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাগড়া গ্রামের মৃত আবদুল রাজ্জাকের ছেলে মোঃ মোরশেদ আলম।
তিনি আরও বলেন, আমার মূল ব্যবসা মাছ চাষ।৩৫ বছর ধরে এ ব্যবসা করে যাচ্ছি। আমার পুকুরগুলো হলো নাগাইশ, পশ্চিম বাগড়া,মধ্য বাগড়া ও দক্ষিণ বাগড়া অঞ্চলে। আর এই অঞ্চলে বন্যার পানিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এপর্যন্ত যতবার বন্যা হয়েছে, এত ক্ষতি কখনো হয়নি।
এ ক্ষতি কিভাবে কাটিয়ে উঠবো এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাত কাটছে না আমার। স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়ের সংসারে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, নিজের সংসার আর ঋণের টাকা কিভাবে দেব সেই দুশ্চিন্তায় আছি।
অন্য আরেক মাছ চাষী উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের কালামকান্দি গ্রামের মৃত রব্বান মিয়ার ছেলে মোঃ জুয়েল মিয়া বলেন, আমি এ বছর ৮ টি পুকুরে মাছ চাষ করেছি। ৪ টি লিজ নেওয়া এবং ৪ টি নিজের। সবগুলো পুকুরে প্রায় ৯৫ লক্ষ টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
প্রতিটি পুকুরে বাকিতে খাদ্য ও ঋণ করে মাছ চাষ করে আসছিলাম। এখন মাছ বিক্রির সময় হয়ে আসছিল। মাছ বিক্রি করে সব ঋণ পরিশোধ করে দিতাম। বন্যায় আমার সব স্বপ্ন ভেসে নিয়ে গেল। দোকানদাররা খাদ্যের বাকি টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে, আর ঋণের টাকার জন্য বাড়িতে এসে লোক বসে থাকে। আমি এখন কি করব নিজে বুঝে উঠতে পারছি না
সরকার যদি আমাদেরকে প্রণোদনা এবং আর্থিকভাবে সহযোগিতা না করে তাহলে আমরা পথে বসে যেতে হবে। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, আমরা যেন আবার ব্যবসাটা পুনরায় ভালোভাবে করতে পারি তার জন্য সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতার আবেদন জানাই।