বাংলাদেশ ০৯:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
মোবাইল ফোন কলের মাধ্যমে ছাত্রকে ফাঁসানোর চেস্টা আপিলে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন ব্রাহ্মণপাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তাহমিনা হক পপি ভালুকায় সড়ক পরিবহন শ্রমিকলীগের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  মুলাদীর আরিয়াল-খাঁ নদীতে অভিযান পরিচালনা করে বিষ প্রয়োগ মাছ ধরা ও অবৈধ কারেন্ট জাল সহ আটক-৩ পিস্তল দিয়ে ভয় দেখানোর ঘটনা বানোয়াট-মিথ্যাচার: গালিব ভান্ডারিয়ায় সার্বজনীন পেনশন স্কিম মেলার উদ্বোধন ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ পিরোজপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামানাত বাতিল হচ্ছে ১০ প্রার্থীর নওগাঁয় বজ্রপাতে এক ধানকাটা কৃষকের মৃত্যু  ফুলবাড়ী জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ দিবসের শুভ উদ্বোধন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাত্রলীগ দখল করে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করেছে: ছাত্রদল সভাপতি ঝালকাঠিতে স্কুল ছাত্রীধর্ষণের ঘটনায় শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৮ হোসেনপুরে আবারো উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হলেন সোহেল।  অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে চাঁদাবাজ চক্রের অন্যতম মূলহোতা শশি ও হানিফ সহ ১২ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। হরিপুরে উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে পুষ্পের জয়

অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসায়ী তাজুলসহ ০২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব; বিপুল পরিমাণ অবৈধ মোবাইল সীম ও ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধার।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:৪৫:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
  • ১৬০২ বার পড়া হয়েছে

 

 

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এর সহযোগিতায় গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসায়ী তাজুলসহ ০২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব; বিপুল পরিমাণ অবৈধ মোবাইল সীম ও ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধার।

 

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, কিশোর গ্যাং, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী এবং বিভিন্ন ধরণের সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র‌্যাবের জোরালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।

এছাড়াও বিভিন্ন অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার, অবৈধ রেডিও ট্রান্সমিটার, অবৈধ মোবাইল সীম ও অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জমাদি বিক্রয়কারীদের গ্রেফতার করে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব।

বিভিন্ন সময়ে কিছু অসাধু চক্র অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আসা ও যাওয়ার পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্খিত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ।

এনটিএমসি’র সহযোগীতায় র‌্যাব জানতে পারে যে, কতিপয় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী গাজীপুরের টংগী এলাকায় অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ হতে বর্হিবিশ্বের সাথে টেলিযোগাযোগের ব্যবসা করে আসছে।

অবৈধ এসকল যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ ক্রয়-বিক্রয় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। ইতোপূর্বে র‌্যাব ফোর্সেস এসকল অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রায় ৬শত অভিযান পরিচালনা করে প্রায় হাজারের অধিক অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে।

এছাড়াও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এসকল অবৈধ ব্যবসা বন্ধের লক্ষ্যে এনটিএমসি ও বিটিআরসি এর সাথে সমন্বয়পূর্বক র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধিসহ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এর সহযোগিতায় র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গাজীপুরের টংগী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী ১। তাজুল (৪০), পিতাঃ রহমত আলী, চান্দিনা, কুমিল্লা ও তার অন্যতম সহযোগি ২। হারুন (৩৮), পিতাঃ মোঃ আব্দুর রহমান মোল্লা, সদর, ফরিদপুরদের’কে গ্রেফতার করা হয়।

এসময় তাদের নিকট থেকে উদ্ধার করা হয় ভিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহৃত ৩২টি সীম বক্স, বিভিন্ন কোম্পানীর প্রায় ১১,৫০০টি সীম, ০৩টি কম্পিউটার, ০২টি ল্যাপটপ, ০১টি মিনি পিসি, ০৭টি মডেম, ১৫টি রাউটার, ০৫টি নেটওয়ার্ক হাব ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি।

অভিযান পরবর্তী অদ্য সকাল ১০.০০ ঘটিকার সময় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি মহোদয় সরজমিনে ঘটনাস্থলে আসেন এবং এই অবৈধ ভিওআইপি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে এর আদ্যোপান্ত সম্পর্কে জানেন ও উদ্ধারকৃত সরঞ্জামাদি পরিদর্শন করেন।

এসময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় কালীন তিনি র‌্যাবের এ অভিযানের ভুয়সী প্রশংসা করেন। ভবিষ্যতে এধরণের অপরাধের সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে সমন্নিতভাবে অভিযান অব্যাহত রাখতে বলেন।

 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিটিআরসি এর চেয়ারম্যান প্রকৌঃ মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, এসবিপি, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), র‌্যাব ফোর্সেস এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল মোঃ মাহাবুব আলম, বিপিএম, পিপিএম, বিপিএমএস (বার) সহ র‌্যাব ফোর্সেস, বিটিআরসি, এনটিএমসির অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার চক্রের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃতরা ১২ বছর যাবৎ এই অবৈধ ভাবে এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃতরা প্রচলিত সফটওয়ার ভিত্তিক সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক কল রাউট করত এবং অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদির মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যান্ত্রিক, ভার্চুয়াল এবং সফটওয়্যার ভিত্তিক কৌশল অবলম্বন করে অবৈধভাবে দেশের অভ্যন্তরে সার্ভার স্থাপন করে মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও কলিং কার্ড, পেমেন্ট ও রিচার্জ সেবা প্রদান করতো বলে জনা যায়।

তাদের ব্যবহৃত সিস্টেমে বিদেশ হতে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক মিনিট কল বাংলাদেশে আসতো। যার মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতরা প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করতো বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতরা দেশের বাহির থেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে এনে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতো বলে প্রাথমিকভাবে জানায়।

গ্রেফতারকৃতরা অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এর বিপুল পরিমান রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যায়। এছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন পেমেন্টে (ইন্টারনেট ও সীম) ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করতো বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত তাজুল চক্রটির অন্যতম সদস্য। সে প্রাথমিকের গন্ডি না পেরিয়ে ২০০৭ সালে রাজধানীতে একটি আইটি কোম্পানীতে লাইনম্যান হিসেবে চাকুরী শুরু করে।

সে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত উক্ত প্রতিষ্ঠানে লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় একজন আইটি বিশেষজ্ঞের সাথে তার পরিচয় হয় এবং তার কাছ থেকে এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার ব্যাপারে হাতে কলমে শিক্ষা গ্রহণ করে। গ্রেফতারকৃত তাজুল চাকুরীর পাশাপাশি ২০১৩ সালে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সাথে জড়িত হয়।

পরবর্তীতে ২০১৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বন্ধ করে দেয়া হলে গ্রেফতারকৃত তাজুল এই কোম্পানীর সরঞ্জামাদি অবৈধভাবে সংগ্রহ করে নিজেই এনালগ সিস্টেমে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করতে থাকে।

গ্রেফতারকৃত তাজুল পূর্বে চাকুরীকৃত কোম্পানির সহকর্মীর মাধ্যমে অবৈধ সীম ব্যবসায়ী হারুন নামক এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয়। ২০১৯ সাল থেকেই গ্রেফতারকৃত তাজুল গ্রেফতারকৃত হারুনের নিকট হতে নিয়মিত অবৈধ সীম ক্রয় করতো। এ পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত তাজুল গ্রেফতারকৃত হারুনের কাছ থেকে আনুমানিক ৩৫-৪০ হাজার অবৈধ সীম ক্রয় করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত তাজুল বিগত ০৫ বছরে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করতো বলে জানায়। গ্রেফতারকৃত তাজুল অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জিত টাকা দিয়ে ২০২০ সালে টঙ্গী এলাকায় অগ্রণী টাওয়ারের ১২ তলায় দুইটি ফ্ল্যাট ক্রয় করে এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কাজে ব্যবহার করতো।

এছাড়াও তার ব্যবসায়ীক সহযোগীর সাথে টঙ্গী এলাকায় আরও একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করে। মানুষ যেন তাকে সন্দেহ না করে সে জন্য তার বাসায় প্রতারণার মাধ্যমে স্বনামধন্য একটি দেশের রাষ্ট্রদূত এর সাথে নিজের ছবি দেয়ালে টাঙিয়ে রাখে।

সে কারো সাথে কখনোই সরাসরি যোগাযোগ রাখত না এবং কাট আউট সিস্টেমে এই ব্যবসা পরিচালনা করত বলে জানা যায়। সে সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে চলার জন্য ফ্ল্যাটের সার্ভিস চার্জসহ আনুষাঙ্গিক খরচ সময়মতো প্রদান করতো এবং কারো সাথে যোগাযোগ রাখতো না বিধায় অগ্রণী টাওয়ারের অধিকাংশ লোকই তার ব্যাপারে তেমন কিছু জানতো না।

গ্রেফতারকৃত হারুন ২০১০ সালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় একটি মোবাইল এক্সোসরিজের দোকানে চাকুরী নেয়। গ্রেফতারকৃত হারুন উক্ত দোকানে বিভিন্ন বাটনফোন, সীম, মোবাইল এক্সোসরিজ বিক্রয় এর পাশাপাশি ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা পরিচালনা করতো।

গ্রেফতারকৃত হারুন প্রথমে সেলসম্যান হিসেবে চাকুরী শুরু করলেও পরবর্তীতে দোকানের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতো। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর কারণে দোকানটি বন্ধ হয়ে যায়। চাকুরী হারানোর পর গ্রেফতারকৃত হারুন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে এবং একইসাথে অবৈধ সিম বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। গ্রেফতারকৃত হারুন একাধিক ব্যক্তির নিকট হতে অবৈধ সীম সংগ্রহ করতো বলে জানায়।

গ্রেফতারকৃত হারুন মূলত রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেট, টঙ্গী স্টেশন রোড এবং ফুটপাতে সীম বিক্রি করা বিভিন্ন সীম অপারেটরের সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভদের নিকট থেকে অবৈধভাবে সীম সংগ্রহ করতো। গ্রেফতারকৃত হারুন প্রতিটি সীম ৬৮ টাকায় ক্রয় করতো এবং গ্রেফতারকৃত তাজুল এর নিকট প্রতিটি সীম ৭০-৭২ টাকায় বিক্রি করতো বলে জানা যায়।

প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, কিছু মোবাইল অপারেটর সীমের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। এ ব্যাপারে বিটিআরসি ও এনটিএমসি’র তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কিছু কিছু রিটেইলার এর তথ্য বের হয়ে আসে, যারা অবৈধভাবে বিপুল পরিমানে সীম সরবরাহ করতো তাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দারা কাজ করছে।

এছাড়াও এই চক্রের যে সকল সদস্য দেশে-বিদেশে অবস্থান করছে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দারা কাজ করছে।

গ্রেফতারকৃতদের ব্যাংক হিসাব নম্বরের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য এবং তাদের ব্যাংক হিসাব নম্বরে যারা লেনদেন করেছে তাদেরও তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

 

 

 

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

মোবাইল ফোন কলের মাধ্যমে ছাত্রকে ফাঁসানোর চেস্টা

অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসায়ী তাজুলসহ ০২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব; বিপুল পরিমাণ অবৈধ মোবাইল সীম ও ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধার।

আপডেট সময় ০৪:৪৫:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

 

 

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এর সহযোগিতায় গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসায়ী তাজুলসহ ০২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব; বিপুল পরিমাণ অবৈধ মোবাইল সীম ও ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধার।

 

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, কিশোর গ্যাং, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী এবং বিভিন্ন ধরণের সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র‌্যাবের জোরালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।

এছাড়াও বিভিন্ন অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার, অবৈধ রেডিও ট্রান্সমিটার, অবৈধ মোবাইল সীম ও অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জমাদি বিক্রয়কারীদের গ্রেফতার করে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব।

বিভিন্ন সময়ে কিছু অসাধু চক্র অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আসা ও যাওয়ার পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্খিত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ।

এনটিএমসি’র সহযোগীতায় র‌্যাব জানতে পারে যে, কতিপয় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী গাজীপুরের টংগী এলাকায় অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ হতে বর্হিবিশ্বের সাথে টেলিযোগাযোগের ব্যবসা করে আসছে।

অবৈধ এসকল যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ ক্রয়-বিক্রয় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। ইতোপূর্বে র‌্যাব ফোর্সেস এসকল অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রায় ৬শত অভিযান পরিচালনা করে প্রায় হাজারের অধিক অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে।

এছাড়াও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এসকল অবৈধ ব্যবসা বন্ধের লক্ষ্যে এনটিএমসি ও বিটিআরসি এর সাথে সমন্বয়পূর্বক র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধিসহ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এর সহযোগিতায় র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গাজীপুরের টংগী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী ১। তাজুল (৪০), পিতাঃ রহমত আলী, চান্দিনা, কুমিল্লা ও তার অন্যতম সহযোগি ২। হারুন (৩৮), পিতাঃ মোঃ আব্দুর রহমান মোল্লা, সদর, ফরিদপুরদের’কে গ্রেফতার করা হয়।

এসময় তাদের নিকট থেকে উদ্ধার করা হয় ভিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহৃত ৩২টি সীম বক্স, বিভিন্ন কোম্পানীর প্রায় ১১,৫০০টি সীম, ০৩টি কম্পিউটার, ০২টি ল্যাপটপ, ০১টি মিনি পিসি, ০৭টি মডেম, ১৫টি রাউটার, ০৫টি নেটওয়ার্ক হাব ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি।

অভিযান পরবর্তী অদ্য সকাল ১০.০০ ঘটিকার সময় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি মহোদয় সরজমিনে ঘটনাস্থলে আসেন এবং এই অবৈধ ভিওআইপি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে এর আদ্যোপান্ত সম্পর্কে জানেন ও উদ্ধারকৃত সরঞ্জামাদি পরিদর্শন করেন।

এসময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় কালীন তিনি র‌্যাবের এ অভিযানের ভুয়সী প্রশংসা করেন। ভবিষ্যতে এধরণের অপরাধের সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে সমন্নিতভাবে অভিযান অব্যাহত রাখতে বলেন।

 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিটিআরসি এর চেয়ারম্যান প্রকৌঃ মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, এসবিপি, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), র‌্যাব ফোর্সেস এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল মোঃ মাহাবুব আলম, বিপিএম, পিপিএম, বিপিএমএস (বার) সহ র‌্যাব ফোর্সেস, বিটিআরসি, এনটিএমসির অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার চক্রের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃতরা ১২ বছর যাবৎ এই অবৈধ ভাবে এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃতরা প্রচলিত সফটওয়ার ভিত্তিক সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক কল রাউট করত এবং অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদির মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যান্ত্রিক, ভার্চুয়াল এবং সফটওয়্যার ভিত্তিক কৌশল অবলম্বন করে অবৈধভাবে দেশের অভ্যন্তরে সার্ভার স্থাপন করে মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও কলিং কার্ড, পেমেন্ট ও রিচার্জ সেবা প্রদান করতো বলে জনা যায়।

তাদের ব্যবহৃত সিস্টেমে বিদেশ হতে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক মিনিট কল বাংলাদেশে আসতো। যার মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতরা প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করতো বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতরা দেশের বাহির থেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে এনে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতো বলে প্রাথমিকভাবে জানায়।

গ্রেফতারকৃতরা অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এর বিপুল পরিমান রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যায়। এছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন পেমেন্টে (ইন্টারনেট ও সীম) ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করতো বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত তাজুল চক্রটির অন্যতম সদস্য। সে প্রাথমিকের গন্ডি না পেরিয়ে ২০০৭ সালে রাজধানীতে একটি আইটি কোম্পানীতে লাইনম্যান হিসেবে চাকুরী শুরু করে।

সে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত উক্ত প্রতিষ্ঠানে লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় একজন আইটি বিশেষজ্ঞের সাথে তার পরিচয় হয় এবং তার কাছ থেকে এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার ব্যাপারে হাতে কলমে শিক্ষা গ্রহণ করে। গ্রেফতারকৃত তাজুল চাকুরীর পাশাপাশি ২০১৩ সালে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সাথে জড়িত হয়।

পরবর্তীতে ২০১৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বন্ধ করে দেয়া হলে গ্রেফতারকৃত তাজুল এই কোম্পানীর সরঞ্জামাদি অবৈধভাবে সংগ্রহ করে নিজেই এনালগ সিস্টেমে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করতে থাকে।

গ্রেফতারকৃত তাজুল পূর্বে চাকুরীকৃত কোম্পানির সহকর্মীর মাধ্যমে অবৈধ সীম ব্যবসায়ী হারুন নামক এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয়। ২০১৯ সাল থেকেই গ্রেফতারকৃত তাজুল গ্রেফতারকৃত হারুনের নিকট হতে নিয়মিত অবৈধ সীম ক্রয় করতো। এ পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত তাজুল গ্রেফতারকৃত হারুনের কাছ থেকে আনুমানিক ৩৫-৪০ হাজার অবৈধ সীম ক্রয় করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত তাজুল বিগত ০৫ বছরে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করতো বলে জানায়। গ্রেফতারকৃত তাজুল অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জিত টাকা দিয়ে ২০২০ সালে টঙ্গী এলাকায় অগ্রণী টাওয়ারের ১২ তলায় দুইটি ফ্ল্যাট ক্রয় করে এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কাজে ব্যবহার করতো।

এছাড়াও তার ব্যবসায়ীক সহযোগীর সাথে টঙ্গী এলাকায় আরও একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করে। মানুষ যেন তাকে সন্দেহ না করে সে জন্য তার বাসায় প্রতারণার মাধ্যমে স্বনামধন্য একটি দেশের রাষ্ট্রদূত এর সাথে নিজের ছবি দেয়ালে টাঙিয়ে রাখে।

সে কারো সাথে কখনোই সরাসরি যোগাযোগ রাখত না এবং কাট আউট সিস্টেমে এই ব্যবসা পরিচালনা করত বলে জানা যায়। সে সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে চলার জন্য ফ্ল্যাটের সার্ভিস চার্জসহ আনুষাঙ্গিক খরচ সময়মতো প্রদান করতো এবং কারো সাথে যোগাযোগ রাখতো না বিধায় অগ্রণী টাওয়ারের অধিকাংশ লোকই তার ব্যাপারে তেমন কিছু জানতো না।

গ্রেফতারকৃত হারুন ২০১০ সালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় একটি মোবাইল এক্সোসরিজের দোকানে চাকুরী নেয়। গ্রেফতারকৃত হারুন উক্ত দোকানে বিভিন্ন বাটনফোন, সীম, মোবাইল এক্সোসরিজ বিক্রয় এর পাশাপাশি ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা পরিচালনা করতো।

গ্রেফতারকৃত হারুন প্রথমে সেলসম্যান হিসেবে চাকুরী শুরু করলেও পরবর্তীতে দোকানের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতো। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর কারণে দোকানটি বন্ধ হয়ে যায়। চাকুরী হারানোর পর গ্রেফতারকৃত হারুন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে এবং একইসাথে অবৈধ সিম বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। গ্রেফতারকৃত হারুন একাধিক ব্যক্তির নিকট হতে অবৈধ সীম সংগ্রহ করতো বলে জানায়।

গ্রেফতারকৃত হারুন মূলত রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেট, টঙ্গী স্টেশন রোড এবং ফুটপাতে সীম বিক্রি করা বিভিন্ন সীম অপারেটরের সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভদের নিকট থেকে অবৈধভাবে সীম সংগ্রহ করতো। গ্রেফতারকৃত হারুন প্রতিটি সীম ৬৮ টাকায় ক্রয় করতো এবং গ্রেফতারকৃত তাজুল এর নিকট প্রতিটি সীম ৭০-৭২ টাকায় বিক্রি করতো বলে জানা যায়।

প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, কিছু মোবাইল অপারেটর সীমের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। এ ব্যাপারে বিটিআরসি ও এনটিএমসি’র তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কিছু কিছু রিটেইলার এর তথ্য বের হয়ে আসে, যারা অবৈধভাবে বিপুল পরিমানে সীম সরবরাহ করতো তাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দারা কাজ করছে।

এছাড়াও এই চক্রের যে সকল সদস্য দেশে-বিদেশে অবস্থান করছে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দারা কাজ করছে।

গ্রেফতারকৃতদের ব্যাংক হিসাব নম্বরের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য এবং তাদের ব্যাংক হিসাব নম্বরে যারা লেনদেন করেছে তাদেরও তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।