নিজস্ব প্রতিবেদক।।
প্রথম কিস্তির পর
চেরাগ পাওয়ার কাহিনী:
২০১০ সাল।বালিয়াডাঙ্গী সেন্টার (ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্র)মাঠে গণউন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি নামে একটি সমিতির সুচনা হয়।সমিতির নেতৃত্ব দেন বেলাল উদ্দিন।সিদ্ধান্ত হয় প্রতিদিন প্রতি সদস্য দুই টাকা করে সঞ্চয় জমা করার।কয়েক বছর চলার পর সমিতির মুল সদস্যদের বাদ দিয়ে বেলালের পরিবারের সদস্যসহ তার আঞ্জাবহ কিছু সদস্য দিয়ে সমবায় অধিদপ্তর থেকে একটি নিবন্ধন নেন।ধীরে ধীরে পূর্বের সদস্যদের বের করে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু করে।
সমিতির কার্যক্রম শুরু করে ঢেকনাপাড়াস্থ আনিসুর রহমান (চা দোকান দার) এর বাড়ীর একটি রুম ভাড়া নিয়ে। সেখান থেকে শুরু হয় চড়া সুদের ব্যবসা।শুরু হয় চেক ও স্ট্যাম্প জমা নিয়ে টাকা সমিতির পাশাপাশি সুদ লেনদেনের ব্যবসা। মানুষের কাছ থেকে ক্ষুদ্র সঞ্চয়, এককালীন সঞ্চয় ও ডিপিএস জমার কার্যক্রম শুরু করে মানুষের দৃষ্টি কারেন বেলাল। শুরু করেন ব্যাংকিং কার্যক্রম। জায়গা জমি কেনা ও মানুষের জমি ও বাড়ী বন্ধক নেওয়া শুরু হয় তার। প্রথম বন্ধক শুরু হয় তার ভাড়া বাড়ী আনিস চায়ের দোকানদারের বাড়ীটি। টাকা সমিতির কিন্তু রেজিষ্ট্রি হয় তার ও তার বাবাসহ পরিবারের লোকজনের নামে। জমিতে সমিতির নামে সাইনবোর্ড লাগালে মানুষের বিশ্বাস বাড়তে থাকে সমিতির প্রতি। এতে পরিধিও বাড়ে। পরে বালিয়াডাঙ্গীস্থ কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির যায়গা ও গোডাউনটি ভাড়া নিয়ে সমিতির কার্যক্রম শুরু করে। এতে মানুষের দৃষ্টি পরে সমিতির উপর।ব্যপকহারে মানুষ টাকা জমা করা শুরু করে।
মানুষের মোগজ ধোলায়ের কৌশল:
জানাগেছে, সমিতির টাকা দিয়ে জমি কিনে নিজ ও পরিবারের লোকজনের নামে রেজিষ্ট্রি করে সমিতির নামে জমিতে সাইনবোর্ড টাংগিয়ে লোকজনকে বোকা বানানো বা মোগজ ধোলাই করার কৌশল তার অনেক পুরোনো। গণউন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির নামে ব্র্যাক সংলগ্ন জমিটিতে অনেক দিন সমিতির সাইনবোর্ড থাকলেও পরে জানাগেছে সেটিও তার ও তার পরিবারের নামে রেজিষ্ট্রি করা। একই রকম ঘটনা ঘটেছে বালিয়াডাঙ্গী আলী প্রেট্রোল পাম্পের উত্তর পাশে, শুকানী, সোনাকান্দর (ভাটা নামক স্থানে), লাহিড়ী, সাইফুল লোহা দোকানের পূর্বপাশে, বালিয়াডাঙ্গী সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন জমি ও বালিয়াডাঙ্গী পল্লী বিদ্যুৎ নামক স্থানে যেখানে মাছের পোনা উৎপাদনের হ্যাচারী করেছে।
জানাগেছে একই রকম কাজ করেছে সদরের হরিহরপুর, পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড, শহরের ঘোয়ালপাড়া, সরকারপাড়া ও সালন্দর সিংপাড়াতেও। এছাড়াও সদস্যদের বোকা বানানোর আরো কৌশল হচ্ছে নতুন নতুন মডেলের দুই চাকা ও চার চাকার গাড়ী কিনে চমক দেখানো। সদস্যদের বোঝানো হয় গাড়ীগুলো সমিতির। এতে মানুষের গভীর বিশ্বাস তৈরী করে মানুষের কাছ থেকে দীর্ঘ মেয়াদী আমানত সংগ্রহ করে চরা সুদের ব্যবসায় খাটানো হয়। মানুষের মোগজ ধোলায়ের জন্য প্রথমে ৪লক্ষ ৯০হাজার টাকায় একটি মোটর সাইকেল কিনে সমিতির মোটরসাইকেল হিসেবে ব্যবহার করেন। তখন এই এলাকায় ওটিই ছিল সবচেয়ে দামী মোটরসাইকেল। তার পরে মরহুম সাবেক ইউপি জামাল উদ্দীনের প্রাইভেট কারটি কিনেন। যেটির গাঁয়ে গণউন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিখে এলাকায় দাপিয়ে চলেন।তার পরে একটি কালো রংগের Rash জীপ গাড়ী কিনলেন। এখন একটি সাদা রং এর কোটি টাকা মূল্যের গাড়ী নিয়ে এলাকায় ঘুরেন। প্রতিটি গাড়ীই সদস্যদের কাছে বা এলাকাবাসীর কাছে সমিতির গাড়ী।আসলে ঘটনাটি উল্টো। বেলাল মানুষের দৃষ্টি কারার জন্যই এসব নাটক করেন একাধীক সুত্রে জানাগেছে। চলবে।