বাংলাদেশ ০১:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের প্ররোচনায় বেসরকারি শিক্ষকদেরকে মাঠে নামিয়ে সরকারকে বিব্রত করা পতিত স্বৈরাচারী সরকারকে পুনর্বাসনের নতুন কোনো অপচেষ্টা নয়তো? গৌরীপুরের মিঠু হত্যার মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়ার দাবি জানিয়েছে পরিবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রাহুল হত্যা মামলার আসামী ইমাম আবু জাফর রজ্জবকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। বিপুল পরিমাণে ফেনসিডিলসহ ০২ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। ভান্ডারিয়ায় সংবাদকর্মী বেলায়েত মুন্সীর ইন্তেকাল বোয়ালখালীতে ছাত্রদলের কর্মী সম্মেলন নদীভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে: পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান শরীয়তপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি আমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল। মান্দায় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত সিংগাইরে বড় ভাইয়ের বসতভিটায় জোরপূর্বক বিল্ডিং করার অভিযোগ রায়পুরায় ২০ কেজি গাঁজাসহ ২ নারী আটক বিসিএ শেফ অব দ্যা ইয়ার প্রতিযোগিতায় ৭৫ জন উদিয়মান শেফ এর অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত শলী বনানী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ চাহিদা অনুযায়ী নেই বিদ্যুৎ; তবু গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি বিল ধনবাড়ীতে উপ‌জেলা বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রামে বোয়ালখালী কালের সাক্ষী স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজ 

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:০৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩
  • ১৬০৬ বার পড়া হয়েছে
এম মনির চৌধুরী রানা 
চট্টগ্রামে বোয়ালখালী মাথা উঁচু করে শতাব্দীর ধরে দাঁড়িয়ে আছে বহুকালের ইতিহাস ঐতিহ্য ভাষা আন্দোলন স্বাধীনতা আন্দোলন ও বহু ঘটনার নীরব স্বাক্ষী স্যার আশুতোষ কলেজ,কলেজের প্রতিষ্ঠাতা রেবতী রমণ দত্ত।
এই কলেজ থেকে কত শিক্ষক, কত প্রফেসার, অধ্যাপক, অধ্যক্ষ,ডক্টর, এডভোকেট, ইনজ্ঞিনিয়ার, ব্যবসায়ি, রাজনীতিবীদ, এম.পি, মন্ত্রী, চেয়ারম্যান, মেম্বার জম্ম দিয়েছে তার হিসাব নেই, বতর্মানের এই কলেজ এক প্রকার অভিভাবক হীন, কলেজে প্রচুর জায়গায় বর্তমানে বেদখল চলে গেছে ভূমি খোরদের পেটে, উদ্ধারে নেই কোন উদ্যাগ। ১৮৮৫ খৃষ্টাব্দের ২২ জুলাই বোয়ালখালী উপজেলার অর্ন্তগত কানুনগোপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯০৮ খৃষ্টাব্দে তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্কশাস্ত্রে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন।
স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের অত্যন্ত প্রিয় ছাত্র ছিলেন, রেবতী রমণ দত্ত। স্যার আশুতোষের ইচ্ছা ছিল তিনি যেন অঙ্কশান্ত্রে গবেষণা শুরু করেন। কিন্ত কনিষ্ঠ ভ্রাতাদের পড়াশুনার জন্য তাঁর পক্ষে গবেষণা কাজে যোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। একই বৎসর রেবতী রমণ দত্ত বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উর্ত্তীণ হন এবং সরকারি চাকুরীতে যোগদান করেন।
স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের যোগ্য ছাত্র হিসেবে শিক্ষা বিশেষ করে ইংরেজি শিক্ষার সম্প্রসারণে রেবতী রমণ দত্ত বিশেষভাবে আগ্রহী হয়ে পড়েন এবং এক্ষেত্রেই তিনি স্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। শহরাঞ্চল অপেক্ষা পল্লী অঞ্চলেই শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠায় রেবতীরমণ অধিক আগ্রহী ছিলেন। দেশের শতকরা পঁচানব্বিই জন অধিবাসীকে পল্লী অঞ্চলে অশিক্ষার অন্ধকারে রেখে সমাজ কোনদিন উন্নত হতে পারে না। এ উদ্দেশ্যে তিনি গ্রামের অন্যান্য সমাজসেবীদের সহযোগিতায় ১৯৩০ এর দশকের গোড়ার দিকে ‘কানুনগোপাড়া এডুকেশন সোসাইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিলে গ্রামে প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চতর পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে রেবতী দত্তের সর্বাপেক্ষা বড় কৃতিত্ব ছিল স্বগ্রাম কানুন গোপাড়াতে উচ্চ শিক্ষার জন্য কলেজ প্রতিষ্ঠা। কানুনগোপাড়া এডুকেশন সোসাইটি’র সহযোগিতায় ১৯৩৯ খৃষ্টাব্দে এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজের নামকরণ করা হয় তাঁরই পরম শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক এবং কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের নামে।
১৯৩৯ খৃষ্টাব্দের ১৪ আগস্ট কলেজে পাঠাদানের শুভ উদ্ধোধন করা হয়। শ্যামাপদ বাবুর লজিকের ক্লাশ দিয়েই পাঠদানের সূচনা হলো। কলেজের ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হবার আগেই পাঠদান শুরু হয়েছিল।
ছাত্রদের বিজ্ঞান শিক্ষা দানের জন্য ১৯৪৫ খৃষ্টাব্দে স্যার আশুতোষ কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ খোলা হয়। বিজ্ঞান ভবন নির্মাণের প্রাথমিক কাজের জন্য জ্যৈষ্ঠপুরা নিবাসী নীরেন্দ্রলাল সেনগুপ্ত প্রয়োজনীয় অর্থদান করেন। বিজ্ঞানের প্রথম অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন জগৎচন্দ্র চৌধুরী। ইতিপূর্বে তিনি রেঙ্গুন কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।
সাধারণ অবস্থা থেকে বিজ্ঞান খুব তাড়াতাড়ি উন্নতি করতে থাকে। বি.এসসি পড়াবার জন্য ভবনটির দোতলা নির্মাণের কাজ খুব দ্রুত সমাপ্ত হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে উচ্চ শিক্ষার প্রতি জনগণের আগ্রহে উৎসাহিত হয়ে রেবতী রমণ দত্ত কলেজে অর্নাস পাঠক্রম চালু করতে অভিলাষী হয়ে পড়লেন। অর্থনীতি এবং আরও কয়েকটি বিষয়ে অর্নাস পড়ানো আরম্ভ হয়। অর্থনীতিতে পরীক্ষায় ছাত্র ছাত্রীরা মোটামুটি ভাল ফল করলো। পরীক্ষার্থীদের সবাই দ্বিতীয় শ্রেণি লাভ করলেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় কিছুদিনের মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোরতর রূপ ধারণ করে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে জাপানি বোমা বর্ষিত হয়। এর প্রায় সাথে সাথে আরম্ভ হয় তেতাল্লিশের ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ। জনজীবনে অস্তিরতার ছাপ পড়লো শিক্ষা ক্ষেত্রে। ছাত্রদের নিটক থেকে বেতন আদায় অনিশ্চিত হয়ে উঠে। বাধ্য হয়ে অর্নাস পাঠদান বন্ধ করে দিতে হলো।
স্যার আশুতোষ কলেজ চট্টগ্রামের সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ বেসরকারি কলেজ ছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কলেজটি গ্রামাঞ্চলে একটি দর্শনীয় স্থান ছিল। কলেজের ভবনসমূহ, বিশাল খেলার মাঠ, পাকাঘাট সমেত একাধিক পুষ্করিনী, আবাসিক ছাত্রদের ছাত্রাবাস এ সমস্তই দশকদের চমৎকৃত করে তুলতো। বিশ্বাসই করা যেতো না পল্লী অঞ্চলে কিভাবে এত বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে।
কলেজ প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রথিতযশা ব্যক্তি কলেজ পরিদর্শনে এসেছিলেন। কলেজের শুভারম্ভের অল্পকালের মধ্যেই কলেজ পরিদর্শনে আগমন করেছিলেন আর্ন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন দার্শনিক ও পরবর্তীকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। ১৯৪৬ খৃষ্টাব্দে স্যার আশুতোষের কন্যা এবং জামাতা ও তৎকালের কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর খ্যাতনামা ঐতিহাসিক ডঃ প্রথম নাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজের বিজ্ঞান ভবনের দ্বারোদঘাটন উপলক্ষে কলেজে আগমণ করেন। একই বৎসব দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেন গুপ্তের পত্নী এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেস দলের সভাপতি নেলী সেনগুপ্তা কলেজ পরিদর্শন এবং ছাত্রনেতাদের এক বিরাট সমাবেশে বক্তৃতা করেন। ১৯৫৪ খৃষ্টাব্দে র্পূব পাকিস্তানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খান কলেজ পরিদর্শন করেন। কেন্দ্রয়ি বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণার ডিরেক্টর এবং দেশের অন্যতম নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞানী ডঃ কুদরৎ-ই-খুদী কলেজ পরিদর্শন করে এর বিজ্ঞান শিক্ষাদানের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। দেশের অন্যতম খ্যাতনামা বৈজ্ঞানিক ো সুসাহিত্যক এবং তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ডৰ কাজী মোতাহার হোসেন দু’বার কলেজ পরিদর্শন করেন। একবার তাঁর সঙ্গে কবি বেগম সুফিয়া কামাল কলেজ পরিদর্শন করে নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে কলেজের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ১৯৬৩ খৃষ্টাব্দে তৎকালীন পাকিস্তানের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ফজলুল কাদের চৌধুরী কলেজ পরিদর্শন এবং জনসভায় বক্তৃতা করেন। ১৯৬৫ খৃষ্টাব্দে তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শিল্পমন্ত্রী এ কে খান কলেজে শুভাগমন করেন। ১৯৬৫ খৃষ্টাব্দে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আণবিক শক্তি কেন্দ
জনপ্রিয় সংবাদ

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের প্ররোচনায় বেসরকারি শিক্ষকদেরকে মাঠে নামিয়ে সরকারকে বিব্রত করা পতিত স্বৈরাচারী সরকারকে পুনর্বাসনের নতুন কোনো অপচেষ্টা নয়তো?

চট্টগ্রামে বোয়ালখালী কালের সাক্ষী স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজ 

আপডেট সময় ০৫:০৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩
এম মনির চৌধুরী রানা 
চট্টগ্রামে বোয়ালখালী মাথা উঁচু করে শতাব্দীর ধরে দাঁড়িয়ে আছে বহুকালের ইতিহাস ঐতিহ্য ভাষা আন্দোলন স্বাধীনতা আন্দোলন ও বহু ঘটনার নীরব স্বাক্ষী স্যার আশুতোষ কলেজ,কলেজের প্রতিষ্ঠাতা রেবতী রমণ দত্ত।
এই কলেজ থেকে কত শিক্ষক, কত প্রফেসার, অধ্যাপক, অধ্যক্ষ,ডক্টর, এডভোকেট, ইনজ্ঞিনিয়ার, ব্যবসায়ি, রাজনীতিবীদ, এম.পি, মন্ত্রী, চেয়ারম্যান, মেম্বার জম্ম দিয়েছে তার হিসাব নেই, বতর্মানের এই কলেজ এক প্রকার অভিভাবক হীন, কলেজে প্রচুর জায়গায় বর্তমানে বেদখল চলে গেছে ভূমি খোরদের পেটে, উদ্ধারে নেই কোন উদ্যাগ। ১৮৮৫ খৃষ্টাব্দের ২২ জুলাই বোয়ালখালী উপজেলার অর্ন্তগত কানুনগোপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯০৮ খৃষ্টাব্দে তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্কশাস্ত্রে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন।
স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের অত্যন্ত প্রিয় ছাত্র ছিলেন, রেবতী রমণ দত্ত। স্যার আশুতোষের ইচ্ছা ছিল তিনি যেন অঙ্কশান্ত্রে গবেষণা শুরু করেন। কিন্ত কনিষ্ঠ ভ্রাতাদের পড়াশুনার জন্য তাঁর পক্ষে গবেষণা কাজে যোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। একই বৎসর রেবতী রমণ দত্ত বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উর্ত্তীণ হন এবং সরকারি চাকুরীতে যোগদান করেন।
স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের যোগ্য ছাত্র হিসেবে শিক্ষা বিশেষ করে ইংরেজি শিক্ষার সম্প্রসারণে রেবতী রমণ দত্ত বিশেষভাবে আগ্রহী হয়ে পড়েন এবং এক্ষেত্রেই তিনি স্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। শহরাঞ্চল অপেক্ষা পল্লী অঞ্চলেই শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠায় রেবতীরমণ অধিক আগ্রহী ছিলেন। দেশের শতকরা পঁচানব্বিই জন অধিবাসীকে পল্লী অঞ্চলে অশিক্ষার অন্ধকারে রেখে সমাজ কোনদিন উন্নত হতে পারে না। এ উদ্দেশ্যে তিনি গ্রামের অন্যান্য সমাজসেবীদের সহযোগিতায় ১৯৩০ এর দশকের গোড়ার দিকে ‘কানুনগোপাড়া এডুকেশন সোসাইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিলে গ্রামে প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চতর পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে রেবতী দত্তের সর্বাপেক্ষা বড় কৃতিত্ব ছিল স্বগ্রাম কানুন গোপাড়াতে উচ্চ শিক্ষার জন্য কলেজ প্রতিষ্ঠা। কানুনগোপাড়া এডুকেশন সোসাইটি’র সহযোগিতায় ১৯৩৯ খৃষ্টাব্দে এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজের নামকরণ করা হয় তাঁরই পরম শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক এবং কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের নামে।
১৯৩৯ খৃষ্টাব্দের ১৪ আগস্ট কলেজে পাঠাদানের শুভ উদ্ধোধন করা হয়। শ্যামাপদ বাবুর লজিকের ক্লাশ দিয়েই পাঠদানের সূচনা হলো। কলেজের ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হবার আগেই পাঠদান শুরু হয়েছিল।
ছাত্রদের বিজ্ঞান শিক্ষা দানের জন্য ১৯৪৫ খৃষ্টাব্দে স্যার আশুতোষ কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ খোলা হয়। বিজ্ঞান ভবন নির্মাণের প্রাথমিক কাজের জন্য জ্যৈষ্ঠপুরা নিবাসী নীরেন্দ্রলাল সেনগুপ্ত প্রয়োজনীয় অর্থদান করেন। বিজ্ঞানের প্রথম অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন জগৎচন্দ্র চৌধুরী। ইতিপূর্বে তিনি রেঙ্গুন কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।
সাধারণ অবস্থা থেকে বিজ্ঞান খুব তাড়াতাড়ি উন্নতি করতে থাকে। বি.এসসি পড়াবার জন্য ভবনটির দোতলা নির্মাণের কাজ খুব দ্রুত সমাপ্ত হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে উচ্চ শিক্ষার প্রতি জনগণের আগ্রহে উৎসাহিত হয়ে রেবতী রমণ দত্ত কলেজে অর্নাস পাঠক্রম চালু করতে অভিলাষী হয়ে পড়লেন। অর্থনীতি এবং আরও কয়েকটি বিষয়ে অর্নাস পড়ানো আরম্ভ হয়। অর্থনীতিতে পরীক্ষায় ছাত্র ছাত্রীরা মোটামুটি ভাল ফল করলো। পরীক্ষার্থীদের সবাই দ্বিতীয় শ্রেণি লাভ করলেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় কিছুদিনের মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোরতর রূপ ধারণ করে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে জাপানি বোমা বর্ষিত হয়। এর প্রায় সাথে সাথে আরম্ভ হয় তেতাল্লিশের ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ। জনজীবনে অস্তিরতার ছাপ পড়লো শিক্ষা ক্ষেত্রে। ছাত্রদের নিটক থেকে বেতন আদায় অনিশ্চিত হয়ে উঠে। বাধ্য হয়ে অর্নাস পাঠদান বন্ধ করে দিতে হলো।
স্যার আশুতোষ কলেজ চট্টগ্রামের সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ বেসরকারি কলেজ ছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কলেজটি গ্রামাঞ্চলে একটি দর্শনীয় স্থান ছিল। কলেজের ভবনসমূহ, বিশাল খেলার মাঠ, পাকাঘাট সমেত একাধিক পুষ্করিনী, আবাসিক ছাত্রদের ছাত্রাবাস এ সমস্তই দশকদের চমৎকৃত করে তুলতো। বিশ্বাসই করা যেতো না পল্লী অঞ্চলে কিভাবে এত বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে।
কলেজ প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রথিতযশা ব্যক্তি কলেজ পরিদর্শনে এসেছিলেন। কলেজের শুভারম্ভের অল্পকালের মধ্যেই কলেজ পরিদর্শনে আগমন করেছিলেন আর্ন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন দার্শনিক ও পরবর্তীকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। ১৯৪৬ খৃষ্টাব্দে স্যার আশুতোষের কন্যা এবং জামাতা ও তৎকালের কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর খ্যাতনামা ঐতিহাসিক ডঃ প্রথম নাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজের বিজ্ঞান ভবনের দ্বারোদঘাটন উপলক্ষে কলেজে আগমণ করেন। একই বৎসব দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেন গুপ্তের পত্নী এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেস দলের সভাপতি নেলী সেনগুপ্তা কলেজ পরিদর্শন এবং ছাত্রনেতাদের এক বিরাট সমাবেশে বক্তৃতা করেন। ১৯৫৪ খৃষ্টাব্দে র্পূব পাকিস্তানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খান কলেজ পরিদর্শন করেন। কেন্দ্রয়ি বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণার ডিরেক্টর এবং দেশের অন্যতম নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞানী ডঃ কুদরৎ-ই-খুদী কলেজ পরিদর্শন করে এর বিজ্ঞান শিক্ষাদানের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। দেশের অন্যতম খ্যাতনামা বৈজ্ঞানিক ো সুসাহিত্যক এবং তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ডৰ কাজী মোতাহার হোসেন দু’বার কলেজ পরিদর্শন করেন। একবার তাঁর সঙ্গে কবি বেগম সুফিয়া কামাল কলেজ পরিদর্শন করে নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে কলেজের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ১৯৬৩ খৃষ্টাব্দে তৎকালীন পাকিস্তানের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ফজলুল কাদের চৌধুরী কলেজ পরিদর্শন এবং জনসভায় বক্তৃতা করেন। ১৯৬৫ খৃষ্টাব্দে তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শিল্পমন্ত্রী এ কে খান কলেজে শুভাগমন করেন। ১৯৬৫ খৃষ্টাব্দে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আণবিক শক্তি কেন্দ