গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির
আজ ১৮ মার্চ, শুক্রবার মহিমান্বিত রজনী শবে বরাত। হিজরী চন্দ্র বর্ষের অষ্টম মাস হলো ‘শাবান’। এই মাসটি বিশেষ মর্যাদা ও ফজিলতপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই মাসে সবচেয়ে বেশী মুস্তাহাব নামাজ, ইবাদত এবং রোজা রাখতেন। এই শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ ১৫ তারিখের রাতকে ‘শবে বরাত’ বলা হয়।
শবে বরাত কথাটি ফার্সী ভাষা থেকে এসেছে। শব মানে রাত বা রজনী আর বরাত অর্থ ভাগ্য। সুতরাং শবে বরাত অর্থ হলো ভাগ্য নির্ধারণের রাত। ‘শবে বরাত’-এর আরবী হলো ‘লাইলাতুল বারাত’, তথা ভাগ্য নির্ধারণের রজনী। হাদীস শরীফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ, ইরানসহ পৃথিবীর অনেক দেশের ফার্সী, উর্দু, বাংলা, হিন্দি সহ নানা ভাষাভাষী মানুষের কাছে এটি ‘শবে বরাত’ নামেই সমধিক পরিচিত। উক্ত তারিখে বেশ কিছু আমল বর্ণিত হয়েছে যেমন: এই তারিখে রাত্রি জাগরণের জন্য তাকিদ করা হয়েছে।
ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: ইমাম বাকের (আ.) কে উক্ত রাত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তরে বলেন: ১৫ই শাবানের রাত হচ্ছে শবে ক্বদরের পরে সবচেয়ে ফযিলতপূর্ণ রাত। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর অপার দয়ায় তাঁর বান্দাদেরকে দান করেন এবং তাদেরকে ক্ষমা করেন সুতরাং তোমরা উক্ত রাতে এমনভাবে আল্লাহর কাছে দোয়া চাও যেন তিনি তোমাদের দোয়া কবুল করেন।
কেউ যদি এ রাতে অবৈধ কিছু না চায় তাহলে আল্লাহ তার দোয়া সমূহকে কবুল করেন।
এ রাত হচ্ছে এমন এক রাত যা আল্লাহ তার বান্দাদেরকে দান করেছেন। উক্ত রাতটি শবে ক্বদরের ন্যায় ফযিলতপূর্ণ একটি রাত সুতরাং তোমরা এ রাতে আল্লাহর ইবাদত কর এবং নিজেদের জন্য দোয়া চাও। আর রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের সওগাত নিয়ে আগত মাহে রমজান কে স্বাগত জানাতে এবং প্রস্তুতি নিতে এখন থেকেই আমাদের মনে-প্রাণে সচেতন থাকতে হবে।
মাহে রমজান যে উদ্দেশ্য, সংযম ও আত্মশুদ্ধির প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রতিবছর আমাদের কাছে আগমন করে থাকে, সেই উদ্দেশ্য অর্জন করে যাবতীয় পাপমুক্ত জীবন ধারণ করে পূতঃপবিত্র চরিত্র গঠন করলেই রোজা ও মাহে রমজানের আগমন সার্থক হবে আমাদের জীবনে। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে যাবতীয় পাপ ও গুনাহমুক্ত জীবন গঠন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।