মোঃ রেজাউল করিম, রাজশাহী বিভাগীয় প্রধানঃ
বর্তমান প্রযুক্তির এই যুগে, মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, কম্পিউটার – এই ডিভাইসগুলো সৃজনশীল এবং সুবিধাজনক। তবে শিশুদের জন্য এটা খুব বিপজ্জনক। মোবাইলের অত্যধিক ব্যবহারের কারণে এটি শিশুদের মানসিক বিকাশে অত্যন্ত বিরূপ প্রভাব ফেলে। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, টিভি, মোবাইল গেম বা ভার্চুয়াল বিনোদনের যেকোনো রূপ দেখার সময় আমাদের মস্তিষ্কের কোষ থেকে সীমাহীন ডোপামিন নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসৃত হয়। যা তাৎক্ষণিক তৃপ্তির মতো মনে হলেও স্বাস্থ্যের জন্য এটা অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই মোবাইল ব্যবহারে শিশুদের সতর্ক রাখুন।
মোবাইল ফোনে আসক্তির পরিণতি:
মোবাইল ফোনে আসক্তির অন্যতম পরিণতি হলো – শিশু সময়মতো খেতে চাইবে না। এর ফলে শিশু অপুষ্টিতে ভুগতে পারে। তাছাড়া সারাক্ষণ বসে থেকে থেকে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে।
একটানা ব্যবহারে চোখে জ্বালা পড়া হবে। এমনকি দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহারে চোখ লালচে হতে পারে। এছাড়া ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথার অনুভূতি হতে পারে ।
মোবাইল ফোনে আসক্তি হলে শিশু একগেয়েমি ও অস্থির স্বভাবের হয়ে উঠবে।
শিশুর মৌলিক শিক্ষা ও কর্মজীবনের মান হ্রাস পাবে। ফলে শিশুরা পরিপূর্ণ কাজে মনোযোগ হারাবে।
মানসিক ব্যাধির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন : উদ্বেগ, বিষণ্নতা, তিরিক্ষি মেজাজ এবং তীব্র চাপ।
ইন্টারনেট বা গেমের বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে, শিশুর আচরণ পরিবর্তন হতে পারে এবং আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে। ফলে শিশুরা একটুতেই রেগে যাবে।
শিশুদের মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে বাঁচাতে করণীয়-
শিশুর মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
মাঝে মাঝে বাচ্চাদের সাথে খেলুন।
শিশুকে খাওয়ানোর সময় বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি করে গল্প বলুন।
সপ্তাহের একদিন সময় করে শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন বিনোদন পার্কে ঘুরে আসুন। এতে করে শিশুরা প্রশ্ন করতে শিখবে এবং তাদের চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে পারবে।
শিশুদের ঘরের কাজে ব্যস্ত রাখতে পারেন। বিশেষ করে মায়েরা তাদের সন্তানদের ছোট ছোট কাজে সহযোগিতা করতে শেখাতে পারেন। এতে করে আপনার সন্তান গৃহকর্মে আগ্রহী হবে এবং মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে থাকবে।
পরিশেষে বলতে চাই, একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে আপনার দায়িত্ব ও কতর্ব্য হলো নিজের বাচ্চাদের নিয়মিত সময় দেওয়া। তাদের কথা শোনা। তাদের পছন্দ-অপছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া। এমনকি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ভাল-মন্দ সম্পর্কে শিশুদের সবসময় সঠিক পরামর্শ দেয়া ।