স্টাফ রিপোর্টারঃ
পিরোজপুর দুই থানার ওসিদের দায়ী করে চিরকুট লিখে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে, পিরোজপুর সদর থানার ঝাড়ুদার আল মামুন। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার বাসিন্দা আল মামুনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইনচার্জ এর বিচার দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দাবী এ বিষয়ে সুষ্ঠ তদন্ত করে অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় আনা হোক। তবে ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইনচার্জ এ ঘটনার সাথে তারা কোন ভাবেই জড়িত নয় বলে দাবী করেছে, চিরকুটে আল মামুন লিখেছেন আমি নিরদোশ (নির্দোষ) আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ইন্দুরকানী থানার ওসি এনামুল হক আর পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মোঃ হোসেন। আমি ইন্দুরকানী থানার ওসির টাকা চুরি করি নাই আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি মরার পর আমার লাশটা পোশমর্টাম (পোস্টমর্টেম) করবেন না। লাশটা আমার মামার বাড়ি দাফোন (দাফন) করবেন।
এভাবেই পিরোজপুরের দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দায়ী করে চিরকূট লিখে তাতে স্বাক্ষর করে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে, পিরোজপুর সদর থানার এক ঝাড়ুদার আল মামুন, সোমবার সকালে বিষপানের পর রাতে ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যায় আল মামুন (৪০) নামের ওই ঝাড়–দার। মামুন ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের গাবগাছিয়া গ্রামের আবুল কালাম এর ছেলে। প্রায় ১০ বছর ইন্দুরকানী থানায় চাকুরী করার পর প্রায় দুই মাস আগে ইন্দুরকানী থেকে পিরোজপুর সদর থানায় বদলী করা হয় মামুনকে। তার লেখা ওই চিরকুট ছড়িয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে। এদিকে মামুন মারা যাবার খবর ছরিয়ে পড়লে ইন্দুরকানী থানার ওসির বিচার দাবী করে ইন্দুরকানীতে মামুনের বাড়ির এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। তাদের দাবী অচিরেই দোষী ব্যাক্তিকে আইনের আওতায় আনা হোক।
মামুনের স্ত্রী মরিয়ম অভিযোগ করে বলেন, ইন্দুরকানী থানায় থাকাকালীন ওই থানার ওসি এনামুল হক তার স্বামীর উপর বিভন্নভাবে নির্যাতন করত। তার স্বামী মামুনকে ওসি এনামুল হক বিভিন্ন ভাবে শারিরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতেন। তাকে দিয়ে দিন রাত অনেক কাজ করাতেন ওভারটাইম করতে না চাইলে মামুনকে মারধর করা হতো। তাকে চুরিরও অপবাদ দেন ইন্দুরকানী থানার ওসি এসব সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমরা পরিবাবের সদস্যরা এই ওসির বিচার চাই। অনেক বার মোবাইল ফেনে ফোন করে পাওয়া গেলেও এ বিষয়ে ইন্দুরকানী থানার ওসি এনামুল হক এনাম কোন কথা বলতে রাজি হননি।
পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, ঝাড়–দার আল মামুনের সাথে সদর থানার কোন কর্মকর্তা কখনো খারাপ ব্যবহার করেনি। এখানে একাধিক কাজের লোক রয়েছে তাই কারো সাথে কোন খারাপ ব্যবহারের প্রশ্নই আসেনা। এমন কোন অভিযোগও মামুন আমার কাছে বা উর্ধ্বতন কর্মকতাদের কাছে করেনি।
পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান জানান, মামুনের লেখা চিরকূটের বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জেনেছেন। মামুন এ বিষয়ে আগে কখনো তার কাছে কোন অভিযোগও করে নাই। চিরকূটের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। এ ঘটনায় কেউ দায়ী থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।