প্রেস বিজ্ঞপ্তি
র্যাবের অভিযানে রাজধানীর রমনা এলাকা হতে সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্রের ০২ সদস্য গ্রেফতার।
এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহিৃতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। বর্তমান সময়ে মানবপাচাকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ফাঁদ, যেমন বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ জনগণের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণীর সুযোগ সন্ধানী মানবপাচারকারী চক্র। এ ধরনের মানবপাচারকারী চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা সচেষ্ট।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর আভিযানিক দল রমনা এলাকায় ১৪/০৩/২০২২ তারিখ ১৫৩০ ঘটিকার সময় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারীর চক্রের সদস্য ১। ইফতাফ শাহীন (৩৮), সাং-পুকুরিয়া, থানা-ঘিওর, জেলা-মানিকগঞ্জ এবং ২। মোঃ মিজানুর রহমান (৩২), সাং-বারইখালি, থানা-মোরেলগঞ্জ, জেলা-বাগেরহাটদ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, ধৃত আসামীরা সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের সদস্য। উক্ত চক্রের মূলহোতা মোঃ সজিবুল ইসলাম (৩৫) সাং-ছোট কয়ারিয়া, থানা-কালকিনী, জেলা- মাদারীপুর। বর্তমানে সে তুরস্কে অবস্থান করছে। উক্ত চক্র ভিকটিমকে সার্বিয়াতে ৬০,০০০ টাকা বেতনের চাকুরী এবং থাকা খাওয়া ফ্রি, বাৎসরিক দুইটি বোনাসসহ ভালো কাজের ভিসা আছে এবং সার্বিয়াতে গিয়ে কোন সমস্যা হলে তারা তাকে তাৎক্ষণিক দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে ভিক্টিমকে সার্বিয়া প্রেরণ করে। উক্ত চক্র সার্বিয়া যাওয়ার খরচ বাবদ ভিক্টিমের নিকট থেকে ছয় লক্ষ টাকা আদায় করে। গত ১৭/১১/২০২১ তারিখে ভিকটিম সার্বিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। সার্বিয়া পৌছার পর ভিক্টিম দালালদের প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী কোন কাজ পাননি। সেখানে কাজ না পেয়ে ভিক্টিম মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকেন এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।
সার্বিয়াতে কোন কাজের সন্ধান না পাওয়ায় উক্ত চক্র ভিক্টিমকে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। গত ০৭/০৩/২০২২ দুপুর ০২০০ ঘটিকার সময় একটি ফোনের মাধ্যমে ভিক্টিমের স্ত্রী জানতে পারেন যে, তার স্বামী সার্বিয়াতে মারা গেছেন। উক্ত চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষকে থাকা-খাওয়াসহ উচ্চ বেতনে উন্নত জীবন-যাপনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা মূলকভাবে দেশি-বিদেশী পাচারকারীদের সহায়তায় মানব পাচারের মতো জঘন্য অপরাধ করে আসছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ১০০ জনকে পাচার করে ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করে। ধৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মোঃ খায়রুল কবীর
সহকারী পুলিশ সুপার
স্টাফ অফিসার (অপস্ ও ইন্ট শাখা)
পক্ষে পরিচালক