তাজুল ইসলাম, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর জলঢাকা মীরগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের ম্যানেজিং কমিটি আদিপাত্য নিয়ে দু’গ্রুফের মুখোমুখি অবস্থানের সংর্ঘষে উভয়পক্ষের প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতরা জলঢাকা ৫০শষ্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয় এবং চিকিৎসা নিয়ে অনেক জন নিজ বাড়িতে চলে যায়। এ ব্যাপারে জালঢাকা থানা পুলিশ একজনকে আটক করেন। সোমবার দুপুরে কলেজ চত্বরের এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ৫ মার্চ অধ্যাপক খয়রাত হোসেন কে গভর্নিং বডির ২(দুই) বছর মেয়াদে সভাপতি মনোনয়ন দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিন্তু কমিটির মেয়াদ ১১মাস বাকী থাকা অবস্থায় ৩১/০৩/২২ইং তারিখে কমিটির শুধুমাত্র সভাপতি পরিবর্তন করে আবুল কামাল আজাদকে মনোনয়ন দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবুল কামাল আজাদকে কেউ মেনে নিতে না পারায় কলেজে কোন মিটিং করতে পারেনি।
এমতাবস্থায় ৩১/০৩/২২ ইং তারিখ থেকে কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ আছে। পরবর্তীতে কলেজের গভর্নিং বডির মেয়াদ ১৩/০৩/২৩ তারিখ শেষ হলে এমপি মেজর রানা মোঃ সোহেল এডহক কমিটির জন্য ডিও লেটার দেন। কিন্তু আবুল কামাল আজাদ সাবেক সংসদ সদস্য ও জলঢাকা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব উদ্দিন আহমেদ এর ডিও লেটার নিয়ে কোন প্রকার ভোট তফসিল ও রেজুলেশন না করে জাল কাগজ পত্র জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিয়ে আবুল কামাল আজাদ ২৭/০৩/২৩ ইং তারিখে ২(দুই) বছর মেয়াদী নিয়মিত গভর্নিং বডি অনুমোদন নিয়ে আসেন। নতুন কমিটির সভা অনুষ্ঠানের জন্য সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কলেজ চত্বরে সভাপতি আবুল কালাম আজাদসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত হন।
এসময় সেখানে উপস্থিত স্থানীয় লোকজন, কলেজ প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতাগন ওই ভুয়া কাগজপত্র তৈরীর বিষয়টি জানতে চাইলে সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ক্ষিপ্ত হয়ে তার নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
বিলুপ্ত কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য মাহবুবার রহমান বলেন, আবুল কালাম আজাদ সভাপতি হয়ে আসার পর তাকে কেউ মেনে নেইনি। যার কারণে বিগত ১১ মাস ওই কমিটির কোন সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। এরই মধ্যে গত ১৩ মার্চ কমিটির মেয়াদ শেষ হলে আবুল কালাম আজাদ ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে গত ২৭ মার্চ সভাপতি হিসেবে দুই বছর মেয়াদে নতুন একটি নতুন কমিটির অনুমোদন নেন।’
তিনি আরো বলেন, নুতন কমিটির জন্য সভার মাধ্যমে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, নির্বাচনী তফশীল ঘোষণা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হয়। কিন্তু কিছুই জানেন না পুরাতন কমিটির সদস্যরা। এতে করে পুরাতন কমিটির সদস্য, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
সাবেক সদস্য মালেকুজ্জামান বলেন, আবুল কালাম আজাদ কলেজে সভা করতে আসেন। এসময় পুরাতন কমিটির সকল সদস্য ও কিছু অভিভাবকসহ এলাকার মানুষজন কমিটি গঠনের বিষয়টি জানতে চান আবুল কালাম আজাদের কাছে। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। পরে বিক্ষুদ্ধ লোকজনের তোপের মুখে পড়েন তারা।
জানতে চাইলে জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ কবির বলেন, এঘটনায় আবুল কালাম আজাদ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে।