বাংলাদেশ ০৫:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
বালিয়াডাঙ্গী কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির ৩৯শতক জমি ও বিলাশবহুল ভবনটি বেলাল কৃর্তক আত্মসাৎ করার চেস্টা! কাউখালীতে খাদ্য গুদামে দুই যুগেরও  জেটি নির্মিত হয়নি,ঝুঁকি নিয়ে মালামাল ওঠানামা করতে হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের আরেক মাফিয়া -২ আলাদিনের চেরাগ পাওয়া বালিয়াডাঙ্গীর বেলাল দুদকের নজদারীতে উত্তর টাঙ্গাইল সাংবাদিক ফোরামের উদ্যোগে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পা‌লিত। নেত্রকোনায় ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত কাউখালীতে বিষ পানে গৃহবধূর আত্মহত্যা।  সিংড়ায় শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ফুলবাড়ীতে বিষ প্রয়োগে ৬ বিঘা জমির ধান নষ্টের অভিযোগ জাতীয় মানবাধিকার অ্যাসোসিয়েশন বগুড়া জেলা কমিটি মাসিক সভা ও আইডি কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠিত। ফারাক্কার প্রভাবে পদ্মার মরণদশা,৪৯ বছরে পদ্মা হারিয়েছে তার স্বাভাবিক নাব্য ক্যাম্পাস চালুসহ পাঁচ দফা দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন রানীশংকৈলে চোলাই মদসহ আটক -১ মধুখালির ঘটনায় খুনিদের গ্রেফতার করতে না পারা প্রশাসনের ব্যর্থতা।  বিতর্কে জয়ী রাবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল  ট্রাকের চাকায় পৃষ্ট হয়ে মোটরসাইকেল আরোহী ঘটনাস্থলে নিহত

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসতৃপ্তি ছিল, আনন্দ ছিল যে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:৪৬:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১৬৪৪ বার পড়া হয়েছে

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসতৃপ্তি ছিল, আনন্দ ছিল যে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন

 

 

 

 

 

 

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসতৃপ্তি ছিল, আনন্দ ছিল যে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন
আর একদিন পরই ১০ই জানুয়ারি। সেদিনের সেই উচ্ছাস, আনন্দ সম্পর্কে এখনো স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছে। ৯ম শেণীতে পড়ি। এতো বছর আগের কথা কিভাবে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিলাম মনে নেই। সেদিনের ঢাকা ছিল উৎসবের নগরী। মহাবীর বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে আসবেন। এই অনুভূতির একটি আলদা মাত্রা ছিল।
আমরা প্রতিনিয়তই খবরে দেখেছিলাম কিভাবে বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন তরান্বিত হচ্ছে। একবার সন্দেহ হতো বর্বর পাকিস্তানীরা হয়তো বঙ্গবন্ধুকে ফিরিয়ে দিবে না। আবার মনে হতো সোভিয়েত রাশিয়া, ভারত তো আমাদের সঙ্গে আছে। ইতিমধ্যে ব্রিটেনর প্রধানমন্ত্রী ও যে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির এই প্রক্রিয়ায় ছিলেন তাও অনেক পরে বুঝতে পেরেছিলাম। এখনকার মতো তো এত রাজনৈতিক বিশ্লেষনে পারদর্শী ছিলাম না। শুধু ভাবতাম কখন তিনি বাংলাদেশে আসবেন। পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এক ধরনের খেলায় মেতেছিল। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম ছিল যে তোমরা আমাদের ৯০ হাজার সৈন্য ফেরত দাও,আমরা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিব। অনেকটা দর কষাকষির পর্যায়ে ছিল। শেষ পর্যন্ত অনেক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে এর একটি  সমাধান হয়। এক্ষেত্রে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণের  অকৃত্রিম বন্ধু মিসেস ইন্দিরা গান্ধী অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। 
যাহোক  সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কথায় আসি। প্রায় লক্ষাদিক মানুষ। কখন বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠবেন। নতুন দিকনির্দেশনা দিবেন। পুরানো তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান শুধু লোকে – লোকারণ্য। কোথাও তিল ধরনের ঠাঁই নেই। ভেবেছিলাম মঞ্চের কাছে বসবো কিন্তু যেতে পারিনি। মঞ্চের পূর্ব পাশে ঘাসের উপর বসে পড়লাম। বয়সের কোন বালাই ছিল না। সব বয়সের মানুষের অপেক্ষা, কখন বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠবেন। যেই সময় বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠার কথা, সেই সময় উঠতে পারেননি। শুধু শুনছিলাম এই তো হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এর সামনে চলে এসেছেন। সোহরাওয়ার্দির মাঠে এত বড় সমাবেশ।
কোন বিশৃঙ্খলা নেই, কোন হট্টগোল, সবার নজর শুধু একটি ব্যক্তির দিকে। কখন তিনি আসবেন। ধৈর্য হারাও কেউ হচ্ছে না,মঞ্চে থেকে মাঝেমধ্যে ঘোষনা আসছিল বঙ্গবন্ধুর অবস্থান সম্পর্কে জানান দেওয়ার জন্য। বঙ্গবন্ধু আসতে আসতে বিকেল গড়িয়ে এলো বঙ্গবন্ধুর মঞ্চে ওঠার পর সেই যে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। নেতা ফিরে এসেছেন, এবার যদি আমাদের মাথা উঁচু করার ঠাঁই হয়। 
ভাষণের সারাক্ষণই তিনি আবেগপ্রবণ ছিলেন, কান্না বিজড়িত কন্ঠে তাঁর কথাগুলো বললেন। কিভাবে তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেওয়ার জন্য পাকিস্তানিরা প্রস্তুতি নিয়েছিল তার বর্ণনা দিলেন। কি করবেন তার একটি ধারণা দিলেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন দিয়েছিলেন তাদের প্রতি। বিশেষভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি এবং তার জনগণের প্রতি। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধীকারীদের বিরুদ্ধেও তার উচ্চারণ ছিল পরিষ্কার। তাদের ক্ষমা করার কোন ইঙ্গিত তাঁর ভাষণে ছিল না।
তাঁর বহু কাঙ্খিত সোনার বাংলা কিভাবে বিনির্মাণ করবেন তার একটি ইঙ্গিত সেই ভাষণে ছিল। স্কুলে পড়ি, তারপরও সেই ভাষণের মর্মার্থ বুঝতে অসুবিধা হয়নি। একপর্যায়ে পেছন ফিরে দেখি আমার এক স্কুল শিক্ষক মামা বসা। উনার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিল। আমি কিন্তু একাই ছিলাম। সাধারণত আমি এসব সমাবেশ, মিছিল  র্যা লিতে একাই যেতাম। শুধু তত্বাবধায়ক সরকারের দাবির আন্দোলনে জামাত, শিবিরের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ২০0৭ সালে আমার এক বন্ধু ডাক্তার ইকবাল পাশে ছিলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে কিভাবে পুরনো ঢাকার বাসায় ফিরে এসেছিলাম মনে নেই। তবে এক ধরনের তৃপ্তি ছিল, আনন্দ ছিল যে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন। এখন আমরাও উন্নত বিশ্বের কাতারে যাবো।
বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে কেমন যেন এক শূন্যতা সর্বত্র ছিল। সাধারণত যুদ্ধের পরে এক ধরনের অরাজকতা থাকে। বিশৃঙ্খলা তো ছিলই। আর যুদ্ধের পর এইরকম থাকাই স্বাভাবিক। তারপর ছিল একেক রকমের গুজব। তখন এই গুজবই ছিল পরাজিত পাকিস্তানপন্থী রাজাকার, আলবদর, আল শামস, জামাত, মুসলিম লীগের হাতিয়ার যারা ধর্মকে আবার টেনে নিয়ে আনার প্রচেষ্টা শুরু হলো। যেই ভারত এত বড় ট্যাগ করলো তাদের বিরুদ্ধে শুরু হলো ষড়যন্ত্র, গুজব। এমনও শুনেছি কোথায় যেন মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। লুটপাটও হয়েছিল। তখন আমাদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি ছিল খুবই আকাঙ্ক্ষিত, খুবই আশ্বস্ত ছিলাম আমাদের অভিভাবক ফিরে এসেছেন আমাদের মাঝে। এবার আর আমাদের কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।
৭৫ এর ১৫ -ই আগস্ট জিয়া- মোস্তাক- ডালিম- ফারুক চক্রান্ত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর বাঙালিকে দাবায় রাখতে জামাত, মুসলিম লীগের হাতিয়ার ধর্মকে আবার টেনে নিয়ে আবার প্রচেষ্টা শুরু হলো। সেই ভারত এত বড় ট্যাগ করলো তাদের বিরুদ্ধে শুরু হলো ষড়যন্ত্র, গুজব। এমনও শুনেছি কোথায় যেন মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে, লুটপাট ও হয়েছিল। তখন আমাদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি ছিল খুবই আকাঙ্ক্ষিত, খুবই আশ্বস্ত ছিলাম আমাদের অভিভাবক ফিরে এসেছেন আমাদের মাঝে। এবার আর আমাদের কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। ৭৫ এর ১৫ -ই আগস্ট জিয়া- মোস্তাক- ডালিম- ফারুক চক্রা বঙ্গবন্ধু তার পরিবার ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর বাঙালিকে দাবায় রাখতে প্রচেষ্টা করেছিল। 
আল্লাহর অশেষ রহমত যে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বেঁচে আছেন। তাঁরা আমাদের অনুপ্রেরণা ও  মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের শক্তির জায়গা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দূরদর্শী উন্নয়ন কার্যক্রম আমাদের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সেই ঐতিহাসিক আবেগপ্রবণ ভাষণ আবেগকে শক্তিতে রূপান্তরিত করার অনুপ্রেরণা। স্বাধীনতা বিরোধী ও তাদের আল বদর জামাত বিএনপি এখনো সেই পাকিস্তানী ধারায় হুমকি, গুজব অব্যাহত রেখেছে। আজকের দিনে শপথ হোক এই শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে এবং বাঙালি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মোকাবেলার।
লেখক: 
অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ
কোষাধ্যক্ষ, 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
জনপ্রিয় সংবাদ

বালিয়াডাঙ্গী কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির ৩৯শতক জমি ও বিলাশবহুল ভবনটি বেলাল কৃর্তক আত্মসাৎ করার চেস্টা!

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসতৃপ্তি ছিল, আনন্দ ছিল যে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন

আপডেট সময় ০২:৪৬:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

 

 

 

 

 

 

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসতৃপ্তি ছিল, আনন্দ ছিল যে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন
আর একদিন পরই ১০ই জানুয়ারি। সেদিনের সেই উচ্ছাস, আনন্দ সম্পর্কে এখনো স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছে। ৯ম শেণীতে পড়ি। এতো বছর আগের কথা কিভাবে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিলাম মনে নেই। সেদিনের ঢাকা ছিল উৎসবের নগরী। মহাবীর বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে আসবেন। এই অনুভূতির একটি আলদা মাত্রা ছিল।
আমরা প্রতিনিয়তই খবরে দেখেছিলাম কিভাবে বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন তরান্বিত হচ্ছে। একবার সন্দেহ হতো বর্বর পাকিস্তানীরা হয়তো বঙ্গবন্ধুকে ফিরিয়ে দিবে না। আবার মনে হতো সোভিয়েত রাশিয়া, ভারত তো আমাদের সঙ্গে আছে। ইতিমধ্যে ব্রিটেনর প্রধানমন্ত্রী ও যে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির এই প্রক্রিয়ায় ছিলেন তাও অনেক পরে বুঝতে পেরেছিলাম। এখনকার মতো তো এত রাজনৈতিক বিশ্লেষনে পারদর্শী ছিলাম না। শুধু ভাবতাম কখন তিনি বাংলাদেশে আসবেন। পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এক ধরনের খেলায় মেতেছিল। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম ছিল যে তোমরা আমাদের ৯০ হাজার সৈন্য ফেরত দাও,আমরা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিব। অনেকটা দর কষাকষির পর্যায়ে ছিল। শেষ পর্যন্ত অনেক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে এর একটি  সমাধান হয়। এক্ষেত্রে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণের  অকৃত্রিম বন্ধু মিসেস ইন্দিরা গান্ধী অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। 
যাহোক  সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কথায় আসি। প্রায় লক্ষাদিক মানুষ। কখন বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠবেন। নতুন দিকনির্দেশনা দিবেন। পুরানো তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান শুধু লোকে – লোকারণ্য। কোথাও তিল ধরনের ঠাঁই নেই। ভেবেছিলাম মঞ্চের কাছে বসবো কিন্তু যেতে পারিনি। মঞ্চের পূর্ব পাশে ঘাসের উপর বসে পড়লাম। বয়সের কোন বালাই ছিল না। সব বয়সের মানুষের অপেক্ষা, কখন বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠবেন। যেই সময় বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠার কথা, সেই সময় উঠতে পারেননি। শুধু শুনছিলাম এই তো হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এর সামনে চলে এসেছেন। সোহরাওয়ার্দির মাঠে এত বড় সমাবেশ।
কোন বিশৃঙ্খলা নেই, কোন হট্টগোল, সবার নজর শুধু একটি ব্যক্তির দিকে। কখন তিনি আসবেন। ধৈর্য হারাও কেউ হচ্ছে না,মঞ্চে থেকে মাঝেমধ্যে ঘোষনা আসছিল বঙ্গবন্ধুর অবস্থান সম্পর্কে জানান দেওয়ার জন্য। বঙ্গবন্ধু আসতে আসতে বিকেল গড়িয়ে এলো বঙ্গবন্ধুর মঞ্চে ওঠার পর সেই যে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। নেতা ফিরে এসেছেন, এবার যদি আমাদের মাথা উঁচু করার ঠাঁই হয়। 
ভাষণের সারাক্ষণই তিনি আবেগপ্রবণ ছিলেন, কান্না বিজড়িত কন্ঠে তাঁর কথাগুলো বললেন। কিভাবে তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেওয়ার জন্য পাকিস্তানিরা প্রস্তুতি নিয়েছিল তার বর্ণনা দিলেন। কি করবেন তার একটি ধারণা দিলেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন দিয়েছিলেন তাদের প্রতি। বিশেষভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি এবং তার জনগণের প্রতি। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধীকারীদের বিরুদ্ধেও তার উচ্চারণ ছিল পরিষ্কার। তাদের ক্ষমা করার কোন ইঙ্গিত তাঁর ভাষণে ছিল না।
তাঁর বহু কাঙ্খিত সোনার বাংলা কিভাবে বিনির্মাণ করবেন তার একটি ইঙ্গিত সেই ভাষণে ছিল। স্কুলে পড়ি, তারপরও সেই ভাষণের মর্মার্থ বুঝতে অসুবিধা হয়নি। একপর্যায়ে পেছন ফিরে দেখি আমার এক স্কুল শিক্ষক মামা বসা। উনার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিল। আমি কিন্তু একাই ছিলাম। সাধারণত আমি এসব সমাবেশ, মিছিল  র্যা লিতে একাই যেতাম। শুধু তত্বাবধায়ক সরকারের দাবির আন্দোলনে জামাত, শিবিরের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ২০0৭ সালে আমার এক বন্ধু ডাক্তার ইকবাল পাশে ছিলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে কিভাবে পুরনো ঢাকার বাসায় ফিরে এসেছিলাম মনে নেই। তবে এক ধরনের তৃপ্তি ছিল, আনন্দ ছিল যে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন। এখন আমরাও উন্নত বিশ্বের কাতারে যাবো।
বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে কেমন যেন এক শূন্যতা সর্বত্র ছিল। সাধারণত যুদ্ধের পরে এক ধরনের অরাজকতা থাকে। বিশৃঙ্খলা তো ছিলই। আর যুদ্ধের পর এইরকম থাকাই স্বাভাবিক। তারপর ছিল একেক রকমের গুজব। তখন এই গুজবই ছিল পরাজিত পাকিস্তানপন্থী রাজাকার, আলবদর, আল শামস, জামাত, মুসলিম লীগের হাতিয়ার যারা ধর্মকে আবার টেনে নিয়ে আনার প্রচেষ্টা শুরু হলো। যেই ভারত এত বড় ট্যাগ করলো তাদের বিরুদ্ধে শুরু হলো ষড়যন্ত্র, গুজব। এমনও শুনেছি কোথায় যেন মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। লুটপাটও হয়েছিল। তখন আমাদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি ছিল খুবই আকাঙ্ক্ষিত, খুবই আশ্বস্ত ছিলাম আমাদের অভিভাবক ফিরে এসেছেন আমাদের মাঝে। এবার আর আমাদের কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।
৭৫ এর ১৫ -ই আগস্ট জিয়া- মোস্তাক- ডালিম- ফারুক চক্রান্ত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর বাঙালিকে দাবায় রাখতে জামাত, মুসলিম লীগের হাতিয়ার ধর্মকে আবার টেনে নিয়ে আবার প্রচেষ্টা শুরু হলো। সেই ভারত এত বড় ট্যাগ করলো তাদের বিরুদ্ধে শুরু হলো ষড়যন্ত্র, গুজব। এমনও শুনেছি কোথায় যেন মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে, লুটপাট ও হয়েছিল। তখন আমাদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি ছিল খুবই আকাঙ্ক্ষিত, খুবই আশ্বস্ত ছিলাম আমাদের অভিভাবক ফিরে এসেছেন আমাদের মাঝে। এবার আর আমাদের কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। ৭৫ এর ১৫ -ই আগস্ট জিয়া- মোস্তাক- ডালিম- ফারুক চক্রা বঙ্গবন্ধু তার পরিবার ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর বাঙালিকে দাবায় রাখতে প্রচেষ্টা করেছিল। 
আল্লাহর অশেষ রহমত যে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বেঁচে আছেন। তাঁরা আমাদের অনুপ্রেরণা ও  মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের শক্তির জায়গা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দূরদর্শী উন্নয়ন কার্যক্রম আমাদের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সেই ঐতিহাসিক আবেগপ্রবণ ভাষণ আবেগকে শক্তিতে রূপান্তরিত করার অনুপ্রেরণা। স্বাধীনতা বিরোধী ও তাদের আল বদর জামাত বিএনপি এখনো সেই পাকিস্তানী ধারায় হুমকি, গুজব অব্যাহত রেখেছে। আজকের দিনে শপথ হোক এই শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে এবং বাঙালি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মোকাবেলার।
লেখক: 
অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ
কোষাধ্যক্ষ, 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।