বাংলাদেশ ১০:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
শরীয়তপুর ২২ বছরের স্বামীর বাড়িতে ৪৩ বছর বয়সী স্ত্রীর অনশন। রাজশাহীতে সক্রিয় আমের সিন্ডিকেট, দাম হবে দ্বিগুন আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে চেয়ারম্যান প্রার্থীকে শোকাজ। সরকারী সফরে আসছেন পুলিশ প্রধান বৃহত্তর সি‌লে‌টের কৃতি সন্তান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ইসলাম অবমাননায় সাময়িক বহিষ্কার কুবি শিক্ষার্থী স্বপ্নীল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় তার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল নাইক্ষংছড়িতে নির্বাচন হবে স্বচ্ছ-সুষ্ঠ-অবাধ-নিরপেক্ষ ব্যতায় ঘটলে দায়ী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা রাঙ্গাবালী থানার কর্মকর্তার সাথে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সৌজন্য সাক্ষাৎ ড. সজীবকে সমর্থন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ালেন গিয়াস উদ্দিন  ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরীর পক্ষে নাইঘর বাসীর একাত্মতা প্রকাশ প্লাস্টিক বর্জ্যের বিনিময়ে পরিবেশ বান্ধব গাছ উপহার দিলো ঐক্য-বন্ধন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সেবন নিয়ে মারামারি সালথার তরুণ কবি নাইমের কবিতা, আমিও মানুষ। রাজশাহীতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার শীর্ষক অ্যাডভোকেসী সম্মেলন রাঙ্গাবালীতে চেয়াম্যান প্রার্থীর ভাইয়ের মৃতুতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে নির্বাচনী প্রচারণা

কালের পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের রামগঞ্জ থেকে বিলুপ্তির পথে বাবুই পাখি॥

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:৫৩:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ অক্টোবর ২০২২
  • ১৬৬২ বার পড়া হয়েছে

কালের পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের রামগঞ্জ থেকে বিলুপ্তির পথে বাবুই পাখি॥

 

 

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ

কালের পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের রামগঞ্জ থেকে বিলুপ্তির পথে বাবুই পাখি॥

 

 

 

একটা সময় বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দে গ্রাম বাংলার মানুষের সকালবেলার ঘুম ভাঙতো। এক যুগ আগেও গ্রাম-গঞ্জের তাল গাছে দেখা যেত এদের নিপুণ শৈল্পিকতায় তৈরি বাসা। চমৎকার বাসা বুনে বাস করায় এ পাখির পরিচিতি বিশ্বজোড়া। কালের পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে হারাতে বসেছে এই দৃষ্টিনন্দন পাখির  বাসা।

 

 

 

বাবুই পাখি সাধারণত গ্রামের নারকেল, খেজুর, রেইনট্রি, আখ খেতে এবং বিশেষ করে তাল গাছে দল বেঁধে বাসা বোনে। এরা সাধারণত বিভিন্ন ফসলের বীজ, ধান, পোকা, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের মধু ও রেণু প্রভৃতি খেয়ে জীবনধারণ করে।
কবির ভাষায় ‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই।’

 

 

 

বাসা তৈরিতে যার নিপুণ কাজ সে তো শিল্পের বড়াই করতেই পারে। কিন্তু কবি রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী কবিতাটির নায়ক গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাবুই পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। তাল গাছের স্বল্পতা ও প্রকৃতিক বিপর্যয়ের কারণেই এমনটি হচ্ছে। একসময় গ্রাম্য বাড়ির বাইর উঠানে তালগাছের পাতায় পাতায় দেখা যেত বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা; কিন্তু গ্রামের পথ ধরে অনেকসময় হাঁটলেও এখন বাবুই ও তার বাসা চোখে মেলা ভার।

 

 

 

বাবুই সাধারণত খড়, ঝাউ, তালপাতার আঁশ ও কাশবনের আঁশ দিয়েই উঁচু তালগাছের ডগার মাথায় ঝুলন্ত পাতায় এবং খেজুরগাছে বাসা বাঁধে। বাসা বানাতে বাবুই খুবই পরিশ্রম করে থাকে। ঠোঁট দিয়ে বনজাতীয় ঘাস ও কাশবনের চিকন চিকন আস্তরণ দিয়ে বাসা বোনে বাবুই। বাসা পেট দিয়ে ঘষে অর্থাৎ পলিশ করে মসৃণ করে থাকে। শক্ত বুননের সাথে শিল্পের অনন্য সমন্বয় বাসাকে দেখতে খুব সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে। এতটাই মজবুত যা প্রবল বাতাসেও ছিঁড়ে পড়ে না।

 

 

 

মাত্র ১৫-১৬ বছর আগেও গ্রামের তালগাছে চোখে পড়ত বাবুই পাখির বাসা। গোশত সুস্বাদু বলে শিকারিদের সেরা তালিকায় বাবুই। নির্বিচারে তালগাছসহ বাবুই পাখির বাসা বানানোর গাছ কাটায় বসবাস উপযোগী পরিবেশ কমেছে।

 

 

 

কীটনাশকের অবাধ ব্যবহার, শিকারিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবেই আজ এসব পাখি বিলুপ্তির পথে বলে ধারণা গবেষকদের। সাধারণত তিন প্রজাতির বাবুই দেখা যায়। দেশী, দাগি এবং বাংলা। তার মধ্যে দাগি এবং বাংলা বাবুই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে দেশী বাবুই এখনো কিছু কিছু চোখে পড়ে।

 

 

 

পরিবেশবিদরা মনে করেন, শুধু বাবুই পাখির শৈল্পিক নিদর্শন টিকিয়ে রাখতে নয়; বরং আমাদের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতেই বাবুইকে টিকিয়ে রাখতে হবে। বাবুইসহ অন্যান্য প্রাণী ও পাখি যখন পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে তখন এই পরিবেশ যে দিন দিন মানুষের জন্যেও অনুপযোগী হচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

 

 

 

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা বলেন,  গ্রামাঞ্চলে বাবুই পাখিসহ বিভিন্ন প্রাণী খাদ্য সংকট ও অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহারের কারণে আজ বিলুপ্তির পথে। সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সচেতনতাই পারে এদের রক্ষা করতে। প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা আরও বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা, প্রকৃতির বাস্তুসংস্থান (ইকো সিস্টেম) ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় ও পরিবেশ দূষণের ফলে বাবুইসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি আজ বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

শরীয়তপুর ২২ বছরের স্বামীর বাড়িতে ৪৩ বছর বয়সী স্ত্রীর অনশন।

কালের পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের রামগঞ্জ থেকে বিলুপ্তির পথে বাবুই পাখি॥

আপডেট সময় ০৩:৫৩:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ অক্টোবর ২০২২

 

 

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ

কালের পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের রামগঞ্জ থেকে বিলুপ্তির পথে বাবুই পাখি॥

 

 

 

একটা সময় বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দে গ্রাম বাংলার মানুষের সকালবেলার ঘুম ভাঙতো। এক যুগ আগেও গ্রাম-গঞ্জের তাল গাছে দেখা যেত এদের নিপুণ শৈল্পিকতায় তৈরি বাসা। চমৎকার বাসা বুনে বাস করায় এ পাখির পরিচিতি বিশ্বজোড়া। কালের পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে হারাতে বসেছে এই দৃষ্টিনন্দন পাখির  বাসা।

 

 

 

বাবুই পাখি সাধারণত গ্রামের নারকেল, খেজুর, রেইনট্রি, আখ খেতে এবং বিশেষ করে তাল গাছে দল বেঁধে বাসা বোনে। এরা সাধারণত বিভিন্ন ফসলের বীজ, ধান, পোকা, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের মধু ও রেণু প্রভৃতি খেয়ে জীবনধারণ করে।
কবির ভাষায় ‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই।’

 

 

 

বাসা তৈরিতে যার নিপুণ কাজ সে তো শিল্পের বড়াই করতেই পারে। কিন্তু কবি রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী কবিতাটির নায়ক গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাবুই পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। তাল গাছের স্বল্পতা ও প্রকৃতিক বিপর্যয়ের কারণেই এমনটি হচ্ছে। একসময় গ্রাম্য বাড়ির বাইর উঠানে তালগাছের পাতায় পাতায় দেখা যেত বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা; কিন্তু গ্রামের পথ ধরে অনেকসময় হাঁটলেও এখন বাবুই ও তার বাসা চোখে মেলা ভার।

 

 

 

বাবুই সাধারণত খড়, ঝাউ, তালপাতার আঁশ ও কাশবনের আঁশ দিয়েই উঁচু তালগাছের ডগার মাথায় ঝুলন্ত পাতায় এবং খেজুরগাছে বাসা বাঁধে। বাসা বানাতে বাবুই খুবই পরিশ্রম করে থাকে। ঠোঁট দিয়ে বনজাতীয় ঘাস ও কাশবনের চিকন চিকন আস্তরণ দিয়ে বাসা বোনে বাবুই। বাসা পেট দিয়ে ঘষে অর্থাৎ পলিশ করে মসৃণ করে থাকে। শক্ত বুননের সাথে শিল্পের অনন্য সমন্বয় বাসাকে দেখতে খুব সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে। এতটাই মজবুত যা প্রবল বাতাসেও ছিঁড়ে পড়ে না।

 

 

 

মাত্র ১৫-১৬ বছর আগেও গ্রামের তালগাছে চোখে পড়ত বাবুই পাখির বাসা। গোশত সুস্বাদু বলে শিকারিদের সেরা তালিকায় বাবুই। নির্বিচারে তালগাছসহ বাবুই পাখির বাসা বানানোর গাছ কাটায় বসবাস উপযোগী পরিবেশ কমেছে।

 

 

 

কীটনাশকের অবাধ ব্যবহার, শিকারিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবেই আজ এসব পাখি বিলুপ্তির পথে বলে ধারণা গবেষকদের। সাধারণত তিন প্রজাতির বাবুই দেখা যায়। দেশী, দাগি এবং বাংলা। তার মধ্যে দাগি এবং বাংলা বাবুই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে দেশী বাবুই এখনো কিছু কিছু চোখে পড়ে।

 

 

 

পরিবেশবিদরা মনে করেন, শুধু বাবুই পাখির শৈল্পিক নিদর্শন টিকিয়ে রাখতে নয়; বরং আমাদের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতেই বাবুইকে টিকিয়ে রাখতে হবে। বাবুইসহ অন্যান্য প্রাণী ও পাখি যখন পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে তখন এই পরিবেশ যে দিন দিন মানুষের জন্যেও অনুপযোগী হচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

 

 

 

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা বলেন,  গ্রামাঞ্চলে বাবুই পাখিসহ বিভিন্ন প্রাণী খাদ্য সংকট ও অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহারের কারণে আজ বিলুপ্তির পথে। সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সচেতনতাই পারে এদের রক্ষা করতে। প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা আরও বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা, প্রকৃতির বাস্তুসংস্থান (ইকো সিস্টেম) ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় ও পরিবেশ দূষণের ফলে বাবুইসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি আজ বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে।