বাংলাদেশ ০২:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
ভ্রাম্যমাণ যৌন কর্মীদের কাছ থেকে সাংবাদিক ও পুলিশ চাঁদা আদায়-১ মহাসড়কে পণ্যবাহী যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি চক্রের ১১ জনকে আটক করেছে র‌্যাব। শ্রীমঙ্গলে আড়াই বছরের প্রতিবন্ধী শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা কালকিনিতে স্ত্রীর জন্য শিক্ষকদের কাছে ভোট চাওয়ার অভিযোগ সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন- ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা নব-নির্বাচিত ময়না চেয়ারম্যানকে গণসংবর্ধনা রাবি শিক্ষার্থী জিসানের শতাধিক নিরীক্ষাধর্মী ছবি নিয়ে একক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী রাবি সায়েন্স ক্লাবের ” Win the Career Race” কর্মশালার আয়োজন অনিয়মের অভিযোগে ইটভাটায় অর্থদন্ড করে ভ্রাম্যমাণ আদালত রাবিতে শুরু হল দুই দিনব্যাপী আরিইউসিসি জব ফেয়ার কেন্দ্রীয় ম‌হিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠ‌নিক সৈয়দা রা‌জিয়া মোস্তফা’র পৈত্রিক বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড যতদিন বাচবো মুলাদীর মানুষের সাথে থাকবো-মিঠু খান মির্জাগঞ্জের উপজেলা নির্বাচনে, প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটের মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা কয়রায় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত আট বছরের ঘুমন্ত শিশুকে কোলে করে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা

ভূঞাপুরে সহশ্রাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন, দিশেহারা গ্রামবাসী

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:২৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২২
  • ১৬৮৯ বার পড়া হয়েছে

ভূঞাপুরে সহশ্রাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন, দিশেহারা গ্রামবাসী

 

মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
চলতি বর্ষা মৌসুমে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী, গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নের সহশ্রাধিক বাড়িঘর ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।ইতিমধ্যে কয়েক দিনের ভাঙনে যমুনার পূর্ব পাড়ের চিতুলিয়াপাড়া অংশে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ফসলি জমিসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি। যমুনার এমন ভাঙনে দিশেহারা পুরো গ্রামবাসী। হুমকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী চিতুলিয়াপাড়া গ্রাম, নদী রক্ষা বাধঁ হিসেবে ব্যবহারের উচুঁ সড়ক সহ অসংখ্য স্থাপনা।

গেল এক সপ্তাহে চিতুলিয়াপাড়া এলাকার প্রায় ১ থেকে দেড়শ ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। গত কয়েক বছরের ভাঙনে যমুনা পূর্ব পাড়ের খানুরবাড়ি, বেপারি পাড়া, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়া পাড়া এলাকার হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ও ফসলের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা তীরবর্তী চিতুলিয়াপাড়া অংশে প্রায় ৫’শ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ঘরবাড়ি। নিজেদের চোখের সামনেই বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি। বুকফাঁটা আর্তনাদ নিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখছে পরিবারের লোকজন। চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে এসব মানুষ। তাদের এই অসহায়ত্ব দেখার কেউ নেই। এরমধ্যে অনেকে আবার ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কারো কারো আসবাবপত্র সহ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে চলতি বছরে বন্যার প্রথম ধাপে বেশ কয়েকটি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সে সময়  নিজেদের বসতভিটা রক্ষার জন্য নিজ উদ্যোগে প্লাস্টিকের বস্তা ফেলছে স্থানীয়রা। পানি কমে গেলে নদী ভাঙন কিছুটা কমে আসে। সে সময় তারা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার দাবি জানান।কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন না করায় গত কয়েকদিন ধরে ঐ এলাকায় আবারও নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। 
ভূঞাপুরের চিতুলিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ মোহাম্মদ আলী বলেন, এর আগেও কোনাবাড়ি চরে আমার বাড়ি আছিল, তহন হেইডা ভাইঙ্গা গেলে এইখানে বাড়ি করি গো বাপু। নদী আমার ব্যাবাক কিছু শ্যাষ কইরা দিছে। এই বাড়িডাও শ্যাষম্যাষ ঠেকাইতে পারবো না। হারা রাইত পার দিয়া ঘুরছি আর কান্দিছি। এহনো কান্দিতাছি। কি করমু বাহে, যামু কনে? এভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
মোঃ দুলাল বলেন, আমার ৪ টি ঘর নদীগর্ভে  চলে গেছে। অন্য দুই ভাইয়ের ৩টি ঘর গেছে। সড়কের ধারে থাকা ছাড়া উপায় নাই। কোনো সাহায্য সহযোগিতা এখন পর্যন্ত পাই নাই। ছেলেমেয়ে নিয়া কতদিন সড়কের ধারে অস্থায়ী ভাবে থাকবো।

আলামিন বলেন, গত বছরে ২০০ এর মতো ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এবারও ১ থেকে দেড়শ বাড়ি নদীতে চলে গেছে।বাপ মায়ের তো অনেক টেহা পয়সা নাই যে জায়গা কিনা আবার নতুন বাড়ি করবো।আমগোর এহন কি হবো।
বৃদ্ধা খোদেজা বেগম বলেন, এই বয়সে থাকমু কই, চোখে দেখি না। বাবারে যাওয়ার জায়গা নাই। এহন আমরা কি করমু? বাহে মরার আগে একটা স্থায়ী বাঁধ দেহার খুব ইচ্ছা আছিল গো।
গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ দুলাল হোসেন চকদার বলেন, ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ ইসরাত জাহান বলেন, যমুনার পূর্বপাড়ে ভাঙনের বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আমাদের কথা হয়েছে।ইতিমধ্যে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভাঙন রোধে উপজেলার বিভিন্ন অংশে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলোর কাজ খুব দ্রুত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। এছাড়া ভূঞাপুরের যমুনার পূর্ব পাড়ে শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

ভ্রাম্যমাণ যৌন কর্মীদের কাছ থেকে সাংবাদিক ও পুলিশ চাঁদা আদায়-১

ভূঞাপুরে সহশ্রাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন, দিশেহারা গ্রামবাসী

আপডেট সময় ১১:২৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২২

 

মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
চলতি বর্ষা মৌসুমে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী, গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নের সহশ্রাধিক বাড়িঘর ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।ইতিমধ্যে কয়েক দিনের ভাঙনে যমুনার পূর্ব পাড়ের চিতুলিয়াপাড়া অংশে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ফসলি জমিসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি। যমুনার এমন ভাঙনে দিশেহারা পুরো গ্রামবাসী। হুমকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী চিতুলিয়াপাড়া গ্রাম, নদী রক্ষা বাধঁ হিসেবে ব্যবহারের উচুঁ সড়ক সহ অসংখ্য স্থাপনা।

গেল এক সপ্তাহে চিতুলিয়াপাড়া এলাকার প্রায় ১ থেকে দেড়শ ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। গত কয়েক বছরের ভাঙনে যমুনা পূর্ব পাড়ের খানুরবাড়ি, বেপারি পাড়া, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়া পাড়া এলাকার হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ও ফসলের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা তীরবর্তী চিতুলিয়াপাড়া অংশে প্রায় ৫’শ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ঘরবাড়ি। নিজেদের চোখের সামনেই বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি। বুকফাঁটা আর্তনাদ নিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখছে পরিবারের লোকজন। চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে এসব মানুষ। তাদের এই অসহায়ত্ব দেখার কেউ নেই। এরমধ্যে অনেকে আবার ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কারো কারো আসবাবপত্র সহ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে চলতি বছরে বন্যার প্রথম ধাপে বেশ কয়েকটি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সে সময়  নিজেদের বসতভিটা রক্ষার জন্য নিজ উদ্যোগে প্লাস্টিকের বস্তা ফেলছে স্থানীয়রা। পানি কমে গেলে নদী ভাঙন কিছুটা কমে আসে। সে সময় তারা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার দাবি জানান।কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন না করায় গত কয়েকদিন ধরে ঐ এলাকায় আবারও নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। 
ভূঞাপুরের চিতুলিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ মোহাম্মদ আলী বলেন, এর আগেও কোনাবাড়ি চরে আমার বাড়ি আছিল, তহন হেইডা ভাইঙ্গা গেলে এইখানে বাড়ি করি গো বাপু। নদী আমার ব্যাবাক কিছু শ্যাষ কইরা দিছে। এই বাড়িডাও শ্যাষম্যাষ ঠেকাইতে পারবো না। হারা রাইত পার দিয়া ঘুরছি আর কান্দিছি। এহনো কান্দিতাছি। কি করমু বাহে, যামু কনে? এভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
মোঃ দুলাল বলেন, আমার ৪ টি ঘর নদীগর্ভে  চলে গেছে। অন্য দুই ভাইয়ের ৩টি ঘর গেছে। সড়কের ধারে থাকা ছাড়া উপায় নাই। কোনো সাহায্য সহযোগিতা এখন পর্যন্ত পাই নাই। ছেলেমেয়ে নিয়া কতদিন সড়কের ধারে অস্থায়ী ভাবে থাকবো।

আলামিন বলেন, গত বছরে ২০০ এর মতো ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এবারও ১ থেকে দেড়শ বাড়ি নদীতে চলে গেছে।বাপ মায়ের তো অনেক টেহা পয়সা নাই যে জায়গা কিনা আবার নতুন বাড়ি করবো।আমগোর এহন কি হবো।
বৃদ্ধা খোদেজা বেগম বলেন, এই বয়সে থাকমু কই, চোখে দেখি না। বাবারে যাওয়ার জায়গা নাই। এহন আমরা কি করমু? বাহে মরার আগে একটা স্থায়ী বাঁধ দেহার খুব ইচ্ছা আছিল গো।
গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ দুলাল হোসেন চকদার বলেন, ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ ইসরাত জাহান বলেন, যমুনার পূর্বপাড়ে ভাঙনের বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আমাদের কথা হয়েছে।ইতিমধ্যে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভাঙন রোধে উপজেলার বিভিন্ন অংশে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলোর কাজ খুব দ্রুত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। এছাড়া ভূঞাপুরের যমুনার পূর্ব পাড়ে শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।