যোগ হল প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এক বিশেষ ধরনের শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা। এর উদ্দেশ্য মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বিধান। আর তাই যোগ অনুশীলন এবং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার সামগ্রিক পদ্ধতির বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিবছর ২১ জুন পালন করা হয় আন্তর্জাতিক যোগ দিবস।

যোগের ভিন্নার্থ  আত্মা, মন এবং শরীরের সমন্বয়, চিন্তা ও কর্মের একতা ইত্যাদি। অনেকের মতে, ‘যোগ’ শব্দটি দু’টি সংস্কৃত শব্দ ‘য়ুজ’ এবং ‘য়ুজির’ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। যার অর্থ ‘এক সঙ্গে’ বা ‘একত্র হওয়া’।যোগের উৎপত্তি হাজার হাজার বছর আগে। ঋগ্বেদ অনুযায়ী, ভগবান শিব ছিলেন প্রথম যোগী এবং তিনি যোগ সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান ‘সপ্ত ঋষিদের’ কাছে স্থানান্তরিত করেছিলেন। সপ্তর্ষিরা যোগের জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ করেছিলেন।

তবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের সূচনা মাত্র কয়েক বছর আগে। ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রসঙ্ঘের

সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ধারণার প্রস্তাব পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে ২১ জুনকে ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার বিষয়ে সচেতনতা বিস্তারের আলোকে যোগ দিবসের তাৎপর্য দেখা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের লক্ষ্য মানসিক শান্তি এবং আত্ম-সচেতনতার জন্য ধ্যানের অভ্যাস গড়ে তোলা যা একটি চাপমুক্ত পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয়।

আর তাই কোভিড মহামারির সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষের জীবনযাপনে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিলো যোগচর্চা। বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব ও মানসিক চাপের মতো চ্যালেঞ্জ কাটানোর ক্ষেত্রে যোগচর্চা বড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।মানবতার দুঃখ-কষ্ট দূর করতে যোগ বড়ো ভূমিকা নিয়েছিল। তা কারো আজানা নয়।সে কথা ছুঁয়ে গিয়েছে এ বারের থিমে।আর তাই অষ্টম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে- “মানবতার জন্য যোগ”।

ভারতীয় উপমহাদেশে যোগের উদ্ভাবন হলেও পশ্চিমা দেশগুলিতেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে  যোগচর্চা ।

কালের  বিবর্তনে বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইয়োগা এবং মেডিটেশন। দেশে এটি এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং মানসিক স্বাস্থ্যের এক পরিপূরক চিকিৎসাসেবা এই যোগচর্চা।