বাংলাদেশ ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
প্রচারণার শেষ দিনে ধনবাড়ীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব হারুনার-রশিদ হীরার পথসভা ও মিছিল অনু‌ষ্ঠিত। সলঙ্গায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিনা মির্জা মুক্তির নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন  আগামী ৮ তারিখে তানোরে ভালোবাসার জয় হবে নির্বাচনি জনসভায় ময়না বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটামে কুবি শিক্ষক সমিতির অবস্থান কর্মসূচি কন্যাদায়গ্রস্থ আছাতনের পাশে “প্রিয় সলঙ্গার গল্প” গ্রুপ ভালুকায় চুরি যাওয়া অটোরিকশা উদ্ধার, গ্রেপ্তার-০২ পার্বতীপুরের মধ্যপাড়ায় কুচক্রিমহলের মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সচেতন মহলের তীব্র নিন্দা রাজশাহীতে দেশ-বিদেশের দুষ্প্রাপ্য ডাকটিকিটের প্রদর্শনী পীরগঞ্জে গৃহবধূকে মারপিট; থানায় অভিযোগ!  বুড়িচং মডেল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-এর ১ম ও ২য় ব্যাচের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত পিরোজপুরে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ পক্ষ থেকে তীব্র তাপদাহের জনসাধারণের মধ্যে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ ভালুকায় বিভিন্ন দাবিতে কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ ইবি বিজনেস ক্লাবের সভাপতি নাজিম, সম্পাদক রাফায়েল পদ্মা নদী তীর রক্ষা করতে জিও ব্যাগ ব্যবহারে অনিয়ম সিলেটে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার বাড়ছে।

সংঘবদ্ধ মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ১৮ জন গ্রেফতার; অজ্ঞান ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিষাক্ত মলম ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৪৫:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২
  • ১৬৭৩ বার পড়া হয়েছে

সংঘবদ্ধ মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ১৮ জন গ্রেফতার; অজ্ঞান ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিষাক্ত মলম ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

র‌্যাবের অভিযানে রাজধানীর শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, পল্টন এবং মতিঝিল এলাকা হতে সংঘবদ্ধ মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ১৮ জন গ্রেফতার; অজ্ঞান ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিষাক্ত মলম ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার।

 

এলিট ফোর্স হিসেবে র‌্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। বর্তমান সময়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসী, প্রতারক চক্র, চাঁদাবাজ, ধর্ষণকারী, নৈরাজ্যকারী, বিভিন্ন মামলার আসামী, অপহরণকারী, মানবপাচারকারী, জালনোট ব্যবসায়ী এবং ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র‌্যাব সদা সচেষ্ট।

 

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী ও পথচারী অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে জখমপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন। এসব ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগই কোন আইন শৃংখলা বাহিনীর দারস্থ হয় না। ফলে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের প্রায় সকলেই মাদকাসক্ত। সাম্প্রতিককালে অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়টি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। ফলশ্রæতিতে র‌্যাব উক্ত অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

 

এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব-৩ এর আভিযানিক দল রাজধানীর শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, পল্টন এবং মতিঝিল থানাধীন এলাকায় ১৯/০৬/২০২২ তারিখ রাতে অভিযান পরিচালনা করে অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য ১। মোঃ রাজু (৩৫), সাং-প্রশন্নপুর, থানা-মুকশেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ, ২। মোঃ ফিরোজ হোসেন বাবু (২৮), সাং-বাংলাবাজার, থানা-মুন্সিগঞ্জ সদর, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ৩। মোঃ ওহিদ (৫৩), সাং-পাটাভোগ, থানা-শ্রীনগর, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ৪। মোঃ আল আমিন হোসেন (৩০), সাং-তোলাতুলি, থানা-বোরহানউদ্দিন, জেলা-ভোলা, ৫। মোঃ রাজু (৩৮), সাং-ছোট শালগড়, থানা-দেবীদ্বার, জেলা-কুমিল্লা, ৬। মোঃ শুকুর আলী (৩৫), সাং-গুলিস্থান, থানা-পল্টন মডেল, ডিএমপি, ঢাকা, ৭। মোঃ সিয়াম (১৯), সাং-নন্দীপাড়া, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়ণগঞ্জ, ৮। মোঃ হাসনাত (১৯), সাং-বড়খাল, থানা-দোয়ারাবাজার, জেলা-সুনামগঞ্জ, ৯। মোঃ নুর  আলম (২৫), সাং-রততুল্লদী, থানা-গলাচিপা, জেলা-পটুয়াখালী, ১০। মোঃ মনির হোসেন (৪২), সাং-তারপুরচান্দি, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর, ১১। মোঃ রকি (১৯), সাং-গড়জরিপা, থানা-শ্রীবর্দী, জেলা-শেরপুর, ১২। মোঃ তোফাজ্জল হোসেন (২৪), সাং-শলাকুড়ি, থানা-মধুপুর, জেলা-টাঙ্গাইল, ১৩। মোঃ রাসেল (২০), সাং-বরবড়িয়া, থানা-রানী নগর, জেলা-নওগাঁ, ১৪। মোঃ রফিক (২০), সাং-চর ডানুকাটি, চৌকিদার বাড়ী, থানা-ডামুড্যা, জেলা-শরীয়তপুর, ১৫। পারভেজ (২২), সাং-পল্টন, থানা-পল্টন, ডিএমপি, ঢাকা, ১৬। মোঃ রিপন (২৪), সাং-পল্টন, থানা-পল্টন, ডিএমপি, ঢাকা, ১৭। মোঃ ফয়সাল (১৯), সাং-পল্টন, থানা-পল্টন, ডিএমপি, ঢাকা এবং ১৮। মোঃ খোকন (৩৮), সাং-পল্টন, থানা-পল্টন, ডিএমপি, ঢাকাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকালে উক্ত আসামীদের নিকট হতে সুইচ গিয়ার ০২ টি, চাকু ০৩ টি, ক্ষুর ০১ টি, এন্টিকাটার ০৪ টি, কেচি ০১ টি, বেøড ০১ টি, বিষাক্ত মলম ০৬ টি, মোবাইল ফোন ০৪ টি এবং নগদ ৮,৭৬৯/-টাকা উদ্ধার করা হয়।

 

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। তারপর সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনও তাদেরকে ডাব, কোমল পানীয় কিংবা পানির সাথে বিষাক্ত চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। আবার কখনও যাত্রীবেশে বাস ও ট্রেনে চড়ে যাত্রীদের পাশে বসে তাদের নাকের কাছে চেতনানাশক ঔষধে ভেজানো রুমাল দিয়ে যাত্রীদের অজ্ঞান করে থাকে।

 

 

উক্ত বিষাক্ত পানীয় সেবন করার বা বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণ নেওয়ার পর উক্ত যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এছাড়াও কখনও ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে যাত্রীদের যন্ত্রণায় কাতর করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এরপর কোন সহৃদয় ব্যক্তি উক্ত অজ্ঞান বা অসুস্থ যাত্রীকে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে। চেতনানাশকের পরিমান বেশী হলে উক্ত ভুক্তভোগীর জ্ঞান ফিরতে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত লেগে থাকে। অজ্ঞানপার্টির শিকার ব্যক্তি শারিরীকভাবে দুর্বল ও বয়স্ক হলে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

 

 

অন্যদিকে ভূক্তভোগীর চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম লাগানোর ফলে তার দৃষ্টিশক্তি চিরতরে হারানোর সম্ভাবনা থেকে যায়। অজ্ঞানপার্টির শিকার ভূক্তভোগীর চেতনা না থাকায় তিনি পরিবারের সাথে জ্ঞান ফেরার পূর্ব পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারেননা। উক্ত সময়ে ভূক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা সীমাহীন দূর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তারা স্বজনদের খোঁজে দিশাহারা হয়ে দ্বিগবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। এসব অজ্ঞানপার্টির সদস্যদের ভূক্তভোগীরা খুব কম ক্ষেত্রেই সনাক্ত করতে পারেন। ফলে এসব অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা নির্বিঘেœ তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

 

অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি গলিতে উৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

 

 

তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করেনা। খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালবার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি পরিলক্ষিত হয়।

 

এ সকল অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনার ফলে পথচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যাতে নিরাপদে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করে নির্বিঘেœ স্বস্তির সাথে বাড়ী ফিরে যেতে পারেন এলক্ষ্য নিয়ে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বীণা রানী দাস, পিপিএম (বার)
পুলিশ সুপার
স্টাফ অফিসার (অপস্ ও ইন্ট শাখা)
পক্ষে পরিচালক

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

প্রচারণার শেষ দিনে ধনবাড়ীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব হারুনার-রশিদ হীরার পথসভা ও মিছিল অনু‌ষ্ঠিত।

সংঘবদ্ধ মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ১৮ জন গ্রেফতার; অজ্ঞান ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিষাক্ত মলম ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার।

আপডেট সময় ০৫:৪৫:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

র‌্যাবের অভিযানে রাজধানীর শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, পল্টন এবং মতিঝিল এলাকা হতে সংঘবদ্ধ মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ মোট ১৮ জন গ্রেফতার; অজ্ঞান ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিষাক্ত মলম ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার।

 

এলিট ফোর্স হিসেবে র‌্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। বর্তমান সময়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসী, প্রতারক চক্র, চাঁদাবাজ, ধর্ষণকারী, নৈরাজ্যকারী, বিভিন্ন মামলার আসামী, অপহরণকারী, মানবপাচারকারী, জালনোট ব্যবসায়ী এবং ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র‌্যাব সদা সচেষ্ট।

 

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী ও পথচারী অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে জখমপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন। এসব ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগই কোন আইন শৃংখলা বাহিনীর দারস্থ হয় না। ফলে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের প্রায় সকলেই মাদকাসক্ত। সাম্প্রতিককালে অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়টি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। ফলশ্রæতিতে র‌্যাব উক্ত অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

 

এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব-৩ এর আভিযানিক দল রাজধানীর শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, পল্টন এবং মতিঝিল থানাধীন এলাকায় ১৯/০৬/২০২২ তারিখ রাতে অভিযান পরিচালনা করে অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য ১। মোঃ রাজু (৩৫), সাং-প্রশন্নপুর, থানা-মুকশেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ, ২। মোঃ ফিরোজ হোসেন বাবু (২৮), সাং-বাংলাবাজার, থানা-মুন্সিগঞ্জ সদর, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ৩। মোঃ ওহিদ (৫৩), সাং-পাটাভোগ, থানা-শ্রীনগর, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ৪। মোঃ আল আমিন হোসেন (৩০), সাং-তোলাতুলি, থানা-বোরহানউদ্দিন, জেলা-ভোলা, ৫। মোঃ রাজু (৩৮), সাং-ছোট শালগড়, থানা-দেবীদ্বার, জেলা-কুমিল্লা, ৬। মোঃ শুকুর আলী (৩৫), সাং-গুলিস্থান, থানা-পল্টন মডেল, ডিএমপি, ঢাকা, ৭। মোঃ সিয়াম (১৯), সাং-নন্দীপাড়া, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়ণগঞ্জ, ৮। মোঃ হাসনাত (১৯), সাং-বড়খাল, থানা-দোয়ারাবাজার, জেলা-সুনামগঞ্জ, ৯। মোঃ নুর  আলম (২৫), সাং-রততুল্লদী, থানা-গলাচিপা, জেলা-পটুয়াখালী, ১০। মোঃ মনির হোসেন (৪২), সাং-তারপুরচান্দি, থানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর, ১১। মোঃ রকি (১৯), সাং-গড়জরিপা, থানা-শ্রীবর্দী, জেলা-শেরপুর, ১২। মোঃ তোফাজ্জল হোসেন (২৪), সাং-শলাকুড়ি, থানা-মধুপুর, জেলা-টাঙ্গাইল, ১৩। মোঃ রাসেল (২০), সাং-বরবড়িয়া, থানা-রানী নগর, জেলা-নওগাঁ, ১৪। মোঃ রফিক (২০), সাং-চর ডানুকাটি, চৌকিদার বাড়ী, থানা-ডামুড্যা, জেলা-শরীয়তপুর, ১৫। পারভেজ (২২), সাং-পল্টন, থানা-পল্টন, ডিএমপি, ঢাকা, ১৬। মোঃ রিপন (২৪), সাং-পল্টন, থানা-পল্টন, ডিএমপি, ঢাকা, ১৭। মোঃ ফয়সাল (১৯), সাং-পল্টন, থানা-পল্টন, ডিএমপি, ঢাকা এবং ১৮। মোঃ খোকন (৩৮), সাং-পল্টন, থানা-পল্টন, ডিএমপি, ঢাকাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকালে উক্ত আসামীদের নিকট হতে সুইচ গিয়ার ০২ টি, চাকু ০৩ টি, ক্ষুর ০১ টি, এন্টিকাটার ০৪ টি, কেচি ০১ টি, বেøড ০১ টি, বিষাক্ত মলম ০৬ টি, মোবাইল ফোন ০৪ টি এবং নগদ ৮,৭৬৯/-টাকা উদ্ধার করা হয়।

 

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। তারপর সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনও তাদেরকে ডাব, কোমল পানীয় কিংবা পানির সাথে বিষাক্ত চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। আবার কখনও যাত্রীবেশে বাস ও ট্রেনে চড়ে যাত্রীদের পাশে বসে তাদের নাকের কাছে চেতনানাশক ঔষধে ভেজানো রুমাল দিয়ে যাত্রীদের অজ্ঞান করে থাকে।

 

 

উক্ত বিষাক্ত পানীয় সেবন করার বা বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণ নেওয়ার পর উক্ত যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এছাড়াও কখনও ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে যাত্রীদের যন্ত্রণায় কাতর করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এরপর কোন সহৃদয় ব্যক্তি উক্ত অজ্ঞান বা অসুস্থ যাত্রীকে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে। চেতনানাশকের পরিমান বেশী হলে উক্ত ভুক্তভোগীর জ্ঞান ফিরতে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত লেগে থাকে। অজ্ঞানপার্টির শিকার ব্যক্তি শারিরীকভাবে দুর্বল ও বয়স্ক হলে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

 

 

অন্যদিকে ভূক্তভোগীর চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম লাগানোর ফলে তার দৃষ্টিশক্তি চিরতরে হারানোর সম্ভাবনা থেকে যায়। অজ্ঞানপার্টির শিকার ভূক্তভোগীর চেতনা না থাকায় তিনি পরিবারের সাথে জ্ঞান ফেরার পূর্ব পর্যন্ত যোগাযোগ করতে পারেননা। উক্ত সময়ে ভূক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা সীমাহীন দূর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তারা স্বজনদের খোঁজে দিশাহারা হয়ে দ্বিগবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। এসব অজ্ঞানপার্টির সদস্যদের ভূক্তভোগীরা খুব কম ক্ষেত্রেই সনাক্ত করতে পারেন। ফলে এসব অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা নির্বিঘেœ তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

 

অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি গলিতে উৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

 

 

তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করেনা। খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালবার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি পরিলক্ষিত হয়।

 

এ সকল অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনার ফলে পথচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যাতে নিরাপদে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করে নির্বিঘেœ স্বস্তির সাথে বাড়ী ফিরে যেতে পারেন এলক্ষ্য নিয়ে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বীণা রানী দাস, পিপিএম (বার)
পুলিশ সুপার
স্টাফ অফিসার (অপস্ ও ইন্ট শাখা)
পক্ষে পরিচালক