মো নাহিদুর রহমান শামীম
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর তীর রক্ষা কাজে নিম্নমানের জিও ব্যাগ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, জেলার পানি উন্নয়ন বিভাগের ব্যবস্থাপনায়, ফ্লাড অ্যান্ড রিভার ব্যাংক ইরোশন রিস্ক ম্যানেজম্যান্ট, ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম প্রকল্পের, আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে হরিরামপুর উপজেলার, গোপীনাথপুর উজানপাড়া থেকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের বৌদ্ধকান্দি পর্যন্ত পদ্মা নদী ভাঙনরোধে, নদীর তীর রক্ষায় চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু হয়।
এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৩২ লাখ ৭ হাজার ২০২ টাকা। যা ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার শর্ত রয়েছে। উল্লেখিত ব্যয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার শর্তে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান, মেসার্স এমএ এন্টারপ্রাইজ কার্যক্রম শুরু করে। যা এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
শর্তাবলী মোতাবেক পাঁচ স্তরে জিও ব্যাগ ফেলার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও চার স্তর আবার কোথাও কোথাও দুই থেকে তিন স্তর জিও ব্যাগ ফেলানো সম্পূর্ণ হয়েছে। এতে তিন এবং চার স্তরের অধিকাংশ জিও ব্যাগই নিম্নমানের হওয়ায় ব্যাগগুলো ফেটে বালি বের হয়ে আসছে। আর এ ব্যাগগুলো সাপ্লাই দিয়েছে আরএম জিওটেক্স লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি।
স্থানীয়রা জানান, পনেরো দিন আগে যে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে তা ৪-৫ দিন যেতে না যেতেই একাই বস্তাগুলো ফেটে বালি বের হয়ে আসছে। ব্যবহৃত ব্যাগগুলোতে কোনো রকমে আলতো টান দিলেই ছিঁড়ে যাচ্ছে। নদী শাসন কাজে এমন নিম্নমানের জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ করায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন জানান, জিও ব্যাগগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড দিয়েছে। কিছু জিও ব্যাগ খারাপ আছে, যেগুলো আমরা রেখে দিয়েছি। আরও কিছু নতুন ব্যাগ পাঠাবে। তবে রোদের টেম্পাচারের কারণেও কিছু ক্ষতি হয়। রোদের কারণে ক্ষতি হবে বলে আমরা মাটি ফেলে দিয়েছি।
কাজের সময়সীমার বিষয়ে তিনি জানান, মে মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আশা করি, এর মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দীন জানান, জিও ব্যাগগুলো আলাদাভাবে টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। এখানে দুটি কোম্পানি ব্যাগগুলো সরবরাহ করছে। তার মধ্যে আর এম জিওটেক্স লিমিটেডের ব্যাগগুলো বেশি নষ্ট বের হচ্ছে। আমরা কোম্পানিকে নষ্ট ব্যাগগুলোর ভর্তুকির ব্যবস্থা করছি। আর অনাবৃষ্টির কারণে ব্যাগগুলো বেশি নষ্ট হয়েছে। জিও ব্যাগ গুলো পানিতে টেকসই হয়। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না থাকায় এ সমস্যাটা আরও বেশি হয়েছে।