বাংলাদেশ ১১:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
শ্রীমঙ্গলে আড়াই বছরের প্রতিবন্ধী শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা কালকিনিতে স্ত্রীর জন্য শিক্ষকদের কাছে ভোট চাওয়ার অভিযোগ সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন- ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা নব-নির্বাচিত ময়না চেয়ারম্যানকে গণসংবর্ধনা রাবি শিক্ষার্থী জিসানের শতাধিক নিরীক্ষাধর্মী ছবি নিয়ে একক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী রাবি সায়েন্স ক্লাবের ” Win the Career Race” কর্মশালার আয়োজন অনিয়মের অভিযোগে ইটভাটায় অর্থদন্ড করে ভ্রাম্যমাণ আদালত রাবিতে শুরু হল দুই দিনব্যাপী আরিইউসিসি জব ফেয়ার কেন্দ্রীয় ম‌হিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠ‌নিক সৈয়দা রা‌জিয়া মোস্তফা’র পৈত্রিক বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড যতদিন বাচবো মুলাদীর মানুষের সাথে থাকবো-মিঠু খান মির্জাগঞ্জের উপজেলা নির্বাচনে, প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটের মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা কয়রায় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত আট বছরের ঘুমন্ত শিশুকে কোলে করে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা নাগরপুরে নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির নেতাদের সাথে মতবিনিময় করলেন – পান্না সিলেট আসার পথে দুর্ঘটনায় ব্যান্ড শিল্পী আহসান তানভীর পিয়াল নিহত।

ধনকুবের নির্ঘুম চোখ, রিকশাওয়ালার শান্তির ঘুম!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:০০:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২
  • ১৭১৩ বার পড়া হয়েছে

ধনকুবের নির্ঘুম চোখ, রিকশাওয়ালার শান্তির ঘুম!

 সোহেল সানি  

একজন রিকশা্ওয়ালা প্রাত্যহিক হয়তো ৩০০ টাকা রোজগার করেন। বাস করেন বস্তিতে। কিন্তু নুন্যতম তিনবেলা পেটপুরে খেয়ে একবেলা শান্তিতে ঘুমান। হোক সে রাতে কিংবা দিনে। বিদেশী ধনকুবদের আয়ের ফিরিস্তি কী আর টানবো, আমাদের দেশেই অনেক ধনকুবে আছেন, যারা প্রাত্যহিক ৩ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। রাতে ফেরেন প্রাসাদত্তোম বাড়িতে। কিন্তু আয়েশি বিছানায় শুয়ে শান্তিতে একটু ঘুমানোর জন্য দু’চোখের পাতাকে এক করতে পারেন না।

 

 

আমাদের দেশের ধনকুবদের ক্ষেত্রে কারো কারো হয়তোবা এর ব্যতিক্রম থাকলে থাকতেও পারে, কিন্তু পৃথিবীর গ্রেট বলে  পরিচিতি অনেকের সঙ্গে পরিচয় ঘটলে ভেসে উঠবে তাদের নিঃসঙ্গতার চিত্র। পৃথিবীতে যে ক’জন মানুষকে গ্রেট বলা হয়, তার মধ্যে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট নিশ্চয়ই অন্যতম। তিনি নিজের জীবন সম্পর্কে যা বলেছেন তা সত্যিই বিস্ময়কর।

 

নেপোলিয়ন বলেছিলেন, “পুরো পৃথিবীকেই হয়ত আমি আমার পায়ের তলে রাখতে পারি, কিন্তু জীবনে আমার এমনই দুর্ভাগ্য যে মাত্র একটি দিনও শান্তিতে ঘুমোতে পারিনি, আমি এক করতে পারিনি আমার দুটি চোখের পাতাকে।

 

 

আমার ক্ষমতা বেড়েছে, খ্যাতিও বেড়েছে, শুধু বাড়েনি এতটুকু শান্তি! গ্রেটদের অভিব্যক্তি যেনো এমনই ভালো টাকা, ভালো বিছানা দেয়, কিন্তু ভালো ঘুম তো দেয়না! স্বাস্থ্য বীমা দেয়, কিন্তু সুস্বাস্থ্য দেয়না! ভাল খাবার স্বাদ দেয়, কিন্তু হজম শক্তি-তো দেয় না!

 

পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তিদের কিসের অভাব? আকর্ষণীয় বাড়ি, দামী গাড়ি কিংবা খ্যাতি, যশ? কিছুরই তো কমতি থাকে না। হ্যাঁ একটা জিনিষেরই শুধু কমতি থাকে সেটা হল শান্তি। দার্শনিকদের মতে, মানুষ যখন কাজ করে, তখন সেটাকে বলে লেবার। হাতের সঙ্গে যখন মাথা যুক্ত হয়, তখন সেটা হয় স্কিল। হাত ও মাথার সঙ্গে যখন হার্ট যুক্ত হয়, তখন সেটা হয়ে যায় আর্ট। আর আর্টের সঙ্গে স্পিরিচুয়ালিটির যোগ হলে তখনই আসে শান্তি।

 

 

এই স্পিরিচুয়ালিটি বা আধ্যাত্মিকতা মানুষকে নিয়ে যায় স্রষ্টার কাছে। তখনই মানুষ বুঝতে পারে জীবনে চাই চাই করতে নেই। কারণ জীবনে সব পাওয়া হয়ে গেলে তখন আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে না। গ্রেট ডেল কার্নেগীও সারাজীবন মানুষকে গল্প শুনিয়ে নিজেই অকালে চলে গেছেন। শান্তিতে তিনিও ঘুমাতে পারেনি মানুষকে শান্তি দিতে গিয়ে।

 

 

মাইকেল জ্যাকসন লক্ষ ডলারের বিছানায় গা ভাসাতেন। চোখ পাতা এক করার জন্য দশটা পিল খেয়েও দু’ঘন্টা ঘুমোতে পারতেন না। দেড়শো বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসকদল যার চারপাশে ঘুরঘুর করতো। মানবদেহের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্রয় করে রেখেছিলেন। কিডনি, হার্ট কত কি! কিন্তু মাত্র ৫০ বছর বয়সেই পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পপ সম্রাট মাইকেল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

 

 

এলভিস প্রিসলিকে পৃথিবীর কে না চেনে? রক এন্ড রোলের জনক। ৩১ বছর বয়সে যার নামে ৭১টি ব্রান্ড চালু ছিল পৃথিবীর প্রথম শিল্পী হিসাবে তিনি প্রাইভেট জেটে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি যে লিমোজিনে চলতেন, তাতে ডায়মন্ডের পাত বসানো ছিল। ৫০০ মিলিয়ন রেকর্ড বিক্রির রেকর্ড যার নামের পাশে। কনসার্টের সময় নিজের জ্যাকেট দর্শকদের উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে দিলে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যেতো। সেই এলভিস একদিন সকালে ঘরে বসে টিউন করছিলেন। তাঁর সেক্রেটারি জিজ্ঞেস করলেন, স্যার খ্যাতির এমন তুঙ্গে উঠে কেমন অনুভব করছেন?

 

দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে এলভিস বলেন, একা, আমি ভীষণ একা। দুপুরের খাঁখাঁ রোদেলা আকাশে উড়তে থাকা চিলের মতো একা। লাখো দর্শক যার কনসার্টের অপেক্ষা করতো, যার হাতের একটু স্পর্শে দর্শকরা পাগল হয়ে যেতো, কিন্তু সেই মানুষটিই বলছেন, তিনি বড় একা! একাকীত্বের জন্যই এলভিস মাদকের দিকে বেশী ঝুঁকে পড়েছিলেন। মাত্র ৪২ বছর বয়সে নিয়তি তাঁকে টেনে নেয় মৃত্যুর কাছে। জীবন এরকমই এক অনিশ্চয়তার, স্রষ্টার ইচ্ছা-অনিচ্ছায় যার পরিচালন এবং প্রতিপালন।

লেখকঃ সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

 

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীমঙ্গলে আড়াই বছরের প্রতিবন্ধী শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা

ধনকুবের নির্ঘুম চোখ, রিকশাওয়ালার শান্তির ঘুম!

আপডেট সময় ১০:০০:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২

ধনকুবের নির্ঘুম চোখ, রিকশাওয়ালার শান্তির ঘুম!

 সোহেল সানি  

একজন রিকশা্ওয়ালা প্রাত্যহিক হয়তো ৩০০ টাকা রোজগার করেন। বাস করেন বস্তিতে। কিন্তু নুন্যতম তিনবেলা পেটপুরে খেয়ে একবেলা শান্তিতে ঘুমান। হোক সে রাতে কিংবা দিনে। বিদেশী ধনকুবদের আয়ের ফিরিস্তি কী আর টানবো, আমাদের দেশেই অনেক ধনকুবে আছেন, যারা প্রাত্যহিক ৩ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। রাতে ফেরেন প্রাসাদত্তোম বাড়িতে। কিন্তু আয়েশি বিছানায় শুয়ে শান্তিতে একটু ঘুমানোর জন্য দু’চোখের পাতাকে এক করতে পারেন না।

 

 

আমাদের দেশের ধনকুবদের ক্ষেত্রে কারো কারো হয়তোবা এর ব্যতিক্রম থাকলে থাকতেও পারে, কিন্তু পৃথিবীর গ্রেট বলে  পরিচিতি অনেকের সঙ্গে পরিচয় ঘটলে ভেসে উঠবে তাদের নিঃসঙ্গতার চিত্র। পৃথিবীতে যে ক’জন মানুষকে গ্রেট বলা হয়, তার মধ্যে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট নিশ্চয়ই অন্যতম। তিনি নিজের জীবন সম্পর্কে যা বলেছেন তা সত্যিই বিস্ময়কর।

 

নেপোলিয়ন বলেছিলেন, “পুরো পৃথিবীকেই হয়ত আমি আমার পায়ের তলে রাখতে পারি, কিন্তু জীবনে আমার এমনই দুর্ভাগ্য যে মাত্র একটি দিনও শান্তিতে ঘুমোতে পারিনি, আমি এক করতে পারিনি আমার দুটি চোখের পাতাকে।

 

 

আমার ক্ষমতা বেড়েছে, খ্যাতিও বেড়েছে, শুধু বাড়েনি এতটুকু শান্তি! গ্রেটদের অভিব্যক্তি যেনো এমনই ভালো টাকা, ভালো বিছানা দেয়, কিন্তু ভালো ঘুম তো দেয়না! স্বাস্থ্য বীমা দেয়, কিন্তু সুস্বাস্থ্য দেয়না! ভাল খাবার স্বাদ দেয়, কিন্তু হজম শক্তি-তো দেয় না!

 

পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তিদের কিসের অভাব? আকর্ষণীয় বাড়ি, দামী গাড়ি কিংবা খ্যাতি, যশ? কিছুরই তো কমতি থাকে না। হ্যাঁ একটা জিনিষেরই শুধু কমতি থাকে সেটা হল শান্তি। দার্শনিকদের মতে, মানুষ যখন কাজ করে, তখন সেটাকে বলে লেবার। হাতের সঙ্গে যখন মাথা যুক্ত হয়, তখন সেটা হয় স্কিল। হাত ও মাথার সঙ্গে যখন হার্ট যুক্ত হয়, তখন সেটা হয়ে যায় আর্ট। আর আর্টের সঙ্গে স্পিরিচুয়ালিটির যোগ হলে তখনই আসে শান্তি।

 

 

এই স্পিরিচুয়ালিটি বা আধ্যাত্মিকতা মানুষকে নিয়ে যায় স্রষ্টার কাছে। তখনই মানুষ বুঝতে পারে জীবনে চাই চাই করতে নেই। কারণ জীবনে সব পাওয়া হয়ে গেলে তখন আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে না। গ্রেট ডেল কার্নেগীও সারাজীবন মানুষকে গল্প শুনিয়ে নিজেই অকালে চলে গেছেন। শান্তিতে তিনিও ঘুমাতে পারেনি মানুষকে শান্তি দিতে গিয়ে।

 

 

মাইকেল জ্যাকসন লক্ষ ডলারের বিছানায় গা ভাসাতেন। চোখ পাতা এক করার জন্য দশটা পিল খেয়েও দু’ঘন্টা ঘুমোতে পারতেন না। দেড়শো বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসকদল যার চারপাশে ঘুরঘুর করতো। মানবদেহের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্রয় করে রেখেছিলেন। কিডনি, হার্ট কত কি! কিন্তু মাত্র ৫০ বছর বয়সেই পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পপ সম্রাট মাইকেল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

 

 

এলভিস প্রিসলিকে পৃথিবীর কে না চেনে? রক এন্ড রোলের জনক। ৩১ বছর বয়সে যার নামে ৭১টি ব্রান্ড চালু ছিল পৃথিবীর প্রথম শিল্পী হিসাবে তিনি প্রাইভেট জেটে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি যে লিমোজিনে চলতেন, তাতে ডায়মন্ডের পাত বসানো ছিল। ৫০০ মিলিয়ন রেকর্ড বিক্রির রেকর্ড যার নামের পাশে। কনসার্টের সময় নিজের জ্যাকেট দর্শকদের উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে দিলে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যেতো। সেই এলভিস একদিন সকালে ঘরে বসে টিউন করছিলেন। তাঁর সেক্রেটারি জিজ্ঞেস করলেন, স্যার খ্যাতির এমন তুঙ্গে উঠে কেমন অনুভব করছেন?

 

দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে এলভিস বলেন, একা, আমি ভীষণ একা। দুপুরের খাঁখাঁ রোদেলা আকাশে উড়তে থাকা চিলের মতো একা। লাখো দর্শক যার কনসার্টের অপেক্ষা করতো, যার হাতের একটু স্পর্শে দর্শকরা পাগল হয়ে যেতো, কিন্তু সেই মানুষটিই বলছেন, তিনি বড় একা! একাকীত্বের জন্যই এলভিস মাদকের দিকে বেশী ঝুঁকে পড়েছিলেন। মাত্র ৪২ বছর বয়সে নিয়তি তাঁকে টেনে নেয় মৃত্যুর কাছে। জীবন এরকমই এক অনিশ্চয়তার, স্রষ্টার ইচ্ছা-অনিচ্ছায় যার পরিচালন এবং প্রতিপালন।

লেখকঃ সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট।