মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ সেমি পাকা ৩ রুমের ভবনটিতে বৃষ্টি হলে পানি পড়ে, দেয়ালের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। পিলার গুলোতে ফাটল ধরেছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় পরিত্যক্ত এ ভবনে ৬ বছর যাবত ক্লাশ নেওয়া হচ্ছে। ভবনটি এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে সব সময় আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মধ্য ভাদুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেনী কক্ষ সংকটে ঝুঁকিপূর্ন ভবনে তবুও চলছে পাঠদান।
অপরদিকে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকরাও। ফলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ২০১৬ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা একাধীকবার পরিদর্শন করলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সদস্যদের। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একটি দুই কক্ষ ভবনের একটি কক্ষে অফিস রুম ও আরেকটি কক্ষে পাক প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেনীর ক্লাশ চলছে। পাশ্ববর্তি তিন কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা জরাজীর্ন এ ভবনে চলছে দ্বিতীয় থেকে ৫ম শ্রেণীর ক্লাশ। এ ভবনের উপরে বেশীভাগ স্থানে টিন নেই, দেয়ালের পলেস্তারা উঠে গেছে, দরজা জানালা গুলো ভাঙ্গাচুরা। এ সময় বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সাকিব জানায়, বৃষ্টির হলে পানি পড়ে বই-খাতা ভিজে যায়। প্রায়ই পলেস্তারা খসে বেঞ্চে পড়ে থাকে। তাই স্কুলে আসতে ভয় করে।
একই কথা জানালো দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মোহনাসহ আরও কয়েক শিক্ষার্থী। ছাত্রছাত্রীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুন্দর একটি স্কুল ভবন দাবী করে। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জেসমিন আক্তার জানান, ছয় বছর ঝুঁকি নিয়ে পাঠ দান করতে হচ্ছে।যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুশ্চিতায় আছেন। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদেরকে বিদ্যালয়ে আসতে দিতে চায় না। এতে দিন দিন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম জানায়, আমি ২০বছর যাবত এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকা হিসেবে কর্মরত আছি। সেমি পাকা ভবনটি ১৯৯০ সালে করা হয়। ভবনের কাজের গুনগতমান ত্রুটিপূর্ন হওয়ায় দ্রুত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ২০১৬ সালে তৎকালিন উপজেলা শিক্ষা ও উপজেলা প্রকৌশলী অফিস কর্তৃপক্ষ ভবনটি পরিদর্শন করে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেন।
এরপর থেকে বার বার নতুন ভবন ও বিকল্প ব্যবস্থা জন্য আবেদন করে আসছি। কর্মকর্তারা একাধীকবার পরিদর্শন করলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই ঝুঁকিপূর্ন জেনেও ক্লাশ চালিয়ে নিতে হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা ভয়ে বিদ্যালয়ে আসতে চায় না, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের অন্যত্রে নিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ভূইয়া জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই তিনি দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন ও নতুন ভবন নির্মানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানিয়েছেন। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার মোঃ আবদুল মোয়াইমেন জানান, বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়ে ভবনটি যে ঝঁকিপূর্ন তা দেখে এসেছি। আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিগত ২ বছর যাবত নতুন ভবনের কোন তালিকা নিচ্ছে না। তাই জরুরি ভিত্তিতে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দিয়ে ক্লাশ চালু রাখার বিকল্প রুমের ব্যবস্থা করা হবে।