বাংলাদেশ ০৫:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
এসএসসি (ভোকেশনাল) বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলে ধনবাড়ীর শিক্ষার্থী ফাতেমা সারাদেশে দ্বিতীয় ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ কতৃক -৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার, ৯ টি ওয়ারেন্ট নিষ্পত্তি প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তরে ঔষধ ও মেডিক্যাল সামগ্রী ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্রতারণা ও জালিয়াতির প্রতারক চক্রের মূলহোতা সহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। স্কুলে শিক্ষাথীর সংখ্যা ১১,এসএসসিতে অকৃতকার্য ১১ ঠাকুরগাঁওয়ে ভূট্রা ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি পাঠাগারের নতুন সভাপতি জহির ও সাধারণ সম্পাদক লিটন এবার চার বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি। বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ ১ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার। অভিনব কায়দায় পাচারের সময় গাঁজাসহ ০১ জন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। কুবিতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন অ্যাসাইলাম আবেদন প্রত্যাখান হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আ.লীগের সংস্কৃতি-বিষয়ক উপকমিটির সদস্য হলেন রাবির ড. সুজন সেন দেশে গণমানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে: রাবি উপ-উপাচার্য হিন্দু শিক্ষার্থীকে শিবির আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি রাবি ছাত্রলীগ নেতার আবারো তাজা প্রাণ গেল এক যুবকের।

র‌্যাবের অভিযানে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতাসহ ০৪ জন প্রতারক গ্রেফতার: বিপুল পরিমাণ ভূয়া নিয়োগপত্র, জাল অফিস আদেশ ও সিল উদ্ধার।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:২০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২
  • ১৬৬৭ বার পড়া হয়েছে

র‌্যাবের অভিযানে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতাসহ ০৪ জন প্রতারক গ্রেফতার: বিপুল পরিমাণ ভূয়া নিয়োগপত্র, জাল অফিস আদেশ ও সিল উদ্ধার।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

র‌্যাবের অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হতে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতাসহ ০৪ জন প্রতারক গ্রেফতার: বিপুল পরিমাণ ভূয়া নিয়োগপত্র, জাল অফিস আদেশ ও সিল উদ্ধার।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র‌্যাব বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়াল ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী আলোচিত বেশ কয়েকটি প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় এনে সর্বস্তরের জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব।

 

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল জানতে পারে যে, রাজধানীর মিরপুর এবং মতিঝিল এলাকায় চাকুরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াত চক্রের কতিপয় সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায় ও দুস্থ মানুষদেরকে হয়রানি ও কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে ৩১/০৫/২০২২ তারিখ রাতে রাজধানীর মিরপুর এবং মতিঝিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারণা ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতা (১) মোঃ হেলাল উদ্দিন (৫১), সাং-বাওইটোনা, থানা-সোনাতলা, জেলা-বগুড়া ও তার সহযোগী (২) মোঃ মফিজুল ইসলাম @ লেবু (৪৭), সাং-রামেশ্বর শর্মা, থানা-উলিপুর, জেলা-কুড়িগ্রাম, (৩) মোঃ খন্দকার মারুফ (৩৭), সাং-পাচুরিয়া, থান-গোপালগঞ্জ, জেলা-গোপালগঞ্জ এবং (৪) মোঃ আব্দুল কাদের @ রাজু (২৯), সাং-মুক্তারাম, থানা-কুড়িগ্রাম সদর, জেলা-কুড়িগ্রামদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। উক্ত অভিযানে বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সিলমোহর ২৪ টি, ভূয়া নিয়োগপত্র ১১ পাতা, নিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তিপত্র ০৩ পাতা, মোবাইল ফোন ০৮ টি এবং নগদ ২১,৫০০/-টাকা উদ্ধার করা হয়।

 

ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত মোঃ হেলাল উদ্দিন প্রতারণা ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতা। সে বিভিন্ন লোকের কাছে মোহাম্মদপুর থানার ওসি, কোথাও থানার এসআই হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে আসছে। সে ভুক্তভোগীদের সাথে অত্যন্ত চতুরতার আশ্রয় নিয়ে কথার জালে ফাঁসিয়ে, চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত। জালিয়াত চক্রের প্রধান হিসেবে সে বিভিন্ন লোকের নিকট হতে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যা পরবর্তীতে প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের মাঝে ভাগাভাগি করে নিত। চাকুরিপ্রার্থী ভুক্তভোগীদের আর্থিক অবস্থানভেদে সে প্রার্থী প্রতি পাঁচ লক্ষ থেকে নয় লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়ে আসছে।

 

 

গ্রেফতারকৃত মোঃ মফিজুল ইসলাম লেবু এবং মোঃ আব্দুল কাদের রাজু দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে লালমনিরহাট, বগুড়া, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকুরিপ্রার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের মোঃ হেলাল উদ্দিন এর কাছে নিয়ে আসতো। মূলহোতা হেলাল উদ্দিন বস সেজে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ভুক্তভোগীদের ইন্টারভিউ নিত। পরবর্তীতে উবারের একটি গাড়ি ভাড়া করে, যা সে নিজের গাড়ি বলে দাবি করে সরকারি বিভিন্ন অফিসে সামনে নিয়ে সে গাড়ি থেকে নেমে অফিসের ভিতরে প্রবেশ ও বাহির হয়ে চাকুরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করত।

 

 

অতঃপর বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সিলমোহর ও উর্দ্ধতন কর্মকর্তার ভূয়া স্বাক্ষর সম্বলিত বিভিন্ন অফিস আদেশ এবং ভুয়া নিয়োগপত্র খামে বন্দি করে ভুক্তভোগীদের হাতে ধরিয়ে দিত। ভুক্তভোগীদের সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপন ও বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য চাকুরির মেডিকেলের নামে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়ে যেত। প্রথমে তারা প্রতিশ্রæতি দিত যে, চাকুরি হওয়ার পর টাকা নেয়া হবে। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন অজুহাতে চাকুরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের নিকট হতে অগ্রীম টাকা গ্রহণ করত এবং ভূয়া নিয়োগ দেয়ার পূর্বের রাত্রে তারা বলত যে, আরো টাকা দিতে হবে, না হলে আগামীকাল চাকুরি কনফার্ম করা যাবে না। ভুক্তভোগীরা চাকুরি পাওয়ার আশায় তাদের চাহিদামত অগ্রীম টাকা প্রদান করতে বাধ্য হতো।

 

গ্রেফতারকৃত খন্দকার মারুফ উক্ত চক্রের মূলহোতা মোঃ হেলাল উদ্দিনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে। চাকুরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের অধিক বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মোঃ হেলাল উদ্দিন, খন্দকার মারুফ এর সহায়তা নিত। মারুফ কথা বলার মাঝেই অত্যন্ত চতুরতার সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা এবং একটি বিশেষ অঞ্চলের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেকে জাহির করে আরও বিশ্বস্থতা অর্জনে মোঃ হেলাল উদ্দিনকে সহায়তা করতো।

 

এভাবেই এই চক্রটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার চাকুরি প্রার্থীদের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছে। যদিও তারা কোন ব্যক্তিকে চাকুরি দিতে সক্ষম হয় নাই। গত ০৫ বছর যাবৎ এই চক্রটি ৫০ জন চাকুরিপ্রার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে এভাবে প্রতারণা করে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা প্রত্যেকেই আর্থিক লাভের আশায় এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে মর্মে তাদের কৃতকর্মের বিষয়টি স্বীকার করেছে।

 

 

ধৃত মোঃ হেলাল উদ্দিন বগুড়ার একটি কলেজ থেকে ডিগ্রী পাশ করেছে। সে নিজেকে মোহাম্মদপুর থানার অবসর প্রাপ্ত ওসি হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। ধৃত মোঃ খন্দকার মারুফ এইচএসসি পাশ। সে অত্যন্ত চতুরতার সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা এবং একটি বিশেষ অঞ্চলের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেকে জাহির করে আরও বিশ্বস্থতা অর্জনে মোঃ হেলাল উদ্দিনকে সহায়তা করতো।

 

 

ধৃত মোঃ মফিজুল ইসলাম @ লেবু এসএসসি পাশ। সে কুড়িগ্রাম জেলার অলিপুর থানার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার। ধৃত মোঃ আব্দুল কাদের @ রাজু একটি বেসরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠান হতে ডিপ্লোমা পাশ। মোঃ মফিজুল ইসলাম লেবু এবং মোঃ আব্দুল কাদের রাজু দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে লালমনিরহাট, বগুড়া, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকুরি প্রার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের মোঃ হেলাল উদ্দিন এর কাছে নিয়ে আসত। ধৃত আসামীদের বর্তমানে কোন দৃশ্যমান পেশা নেই। প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎই তাদের বর্তমান পেশা। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বীণা রানী দাস, পিপিএম, পিপিএম (সেবা)
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
সহকারী পরিচালক (অপস্ ও ইন্ট শাখা)
পক্ষে পরিচালক

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

এসএসসি (ভোকেশনাল) বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলে ধনবাড়ীর শিক্ষার্থী ফাতেমা সারাদেশে দ্বিতীয়

র‌্যাবের অভিযানে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতাসহ ০৪ জন প্রতারক গ্রেফতার: বিপুল পরিমাণ ভূয়া নিয়োগপত্র, জাল অফিস আদেশ ও সিল উদ্ধার।

আপডেট সময় ০৫:২০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

র‌্যাবের অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হতে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতাসহ ০৪ জন প্রতারক গ্রেফতার: বিপুল পরিমাণ ভূয়া নিয়োগপত্র, জাল অফিস আদেশ ও সিল উদ্ধার।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র‌্যাব বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়াল ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী আলোচিত বেশ কয়েকটি প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় এনে সর্বস্তরের জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব।

 

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল জানতে পারে যে, রাজধানীর মিরপুর এবং মতিঝিল এলাকায় চাকুরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াত চক্রের কতিপয় সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায় ও দুস্থ মানুষদেরকে হয়রানি ও কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে ৩১/০৫/২০২২ তারিখ রাতে রাজধানীর মিরপুর এবং মতিঝিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারণা ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতা (১) মোঃ হেলাল উদ্দিন (৫১), সাং-বাওইটোনা, থানা-সোনাতলা, জেলা-বগুড়া ও তার সহযোগী (২) মোঃ মফিজুল ইসলাম @ লেবু (৪৭), সাং-রামেশ্বর শর্মা, থানা-উলিপুর, জেলা-কুড়িগ্রাম, (৩) মোঃ খন্দকার মারুফ (৩৭), সাং-পাচুরিয়া, থান-গোপালগঞ্জ, জেলা-গোপালগঞ্জ এবং (৪) মোঃ আব্দুল কাদের @ রাজু (২৯), সাং-মুক্তারাম, থানা-কুড়িগ্রাম সদর, জেলা-কুড়িগ্রামদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। উক্ত অভিযানে বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সিলমোহর ২৪ টি, ভূয়া নিয়োগপত্র ১১ পাতা, নিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তিপত্র ০৩ পাতা, মোবাইল ফোন ০৮ টি এবং নগদ ২১,৫০০/-টাকা উদ্ধার করা হয়।

 

ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত মোঃ হেলাল উদ্দিন প্রতারণা ও জালিয়াত চক্রের মূলহোতা। সে বিভিন্ন লোকের কাছে মোহাম্মদপুর থানার ওসি, কোথাও থানার এসআই হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে আসছে। সে ভুক্তভোগীদের সাথে অত্যন্ত চতুরতার আশ্রয় নিয়ে কথার জালে ফাঁসিয়ে, চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত। জালিয়াত চক্রের প্রধান হিসেবে সে বিভিন্ন লোকের নিকট হতে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যা পরবর্তীতে প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের মাঝে ভাগাভাগি করে নিত। চাকুরিপ্রার্থী ভুক্তভোগীদের আর্থিক অবস্থানভেদে সে প্রার্থী প্রতি পাঁচ লক্ষ থেকে নয় লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়ে আসছে।

 

 

গ্রেফতারকৃত মোঃ মফিজুল ইসলাম লেবু এবং মোঃ আব্দুল কাদের রাজু দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে লালমনিরহাট, বগুড়া, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকুরিপ্রার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের মোঃ হেলাল উদ্দিন এর কাছে নিয়ে আসতো। মূলহোতা হেলাল উদ্দিন বস সেজে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ভুক্তভোগীদের ইন্টারভিউ নিত। পরবর্তীতে উবারের একটি গাড়ি ভাড়া করে, যা সে নিজের গাড়ি বলে দাবি করে সরকারি বিভিন্ন অফিসে সামনে নিয়ে সে গাড়ি থেকে নেমে অফিসের ভিতরে প্রবেশ ও বাহির হয়ে চাকুরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করত।

 

 

অতঃপর বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সিলমোহর ও উর্দ্ধতন কর্মকর্তার ভূয়া স্বাক্ষর সম্বলিত বিভিন্ন অফিস আদেশ এবং ভুয়া নিয়োগপত্র খামে বন্দি করে ভুক্তভোগীদের হাতে ধরিয়ে দিত। ভুক্তভোগীদের সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপন ও বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য চাকুরির মেডিকেলের নামে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়ে যেত। প্রথমে তারা প্রতিশ্রæতি দিত যে, চাকুরি হওয়ার পর টাকা নেয়া হবে। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন অজুহাতে চাকুরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের নিকট হতে অগ্রীম টাকা গ্রহণ করত এবং ভূয়া নিয়োগ দেয়ার পূর্বের রাত্রে তারা বলত যে, আরো টাকা দিতে হবে, না হলে আগামীকাল চাকুরি কনফার্ম করা যাবে না। ভুক্তভোগীরা চাকুরি পাওয়ার আশায় তাদের চাহিদামত অগ্রীম টাকা প্রদান করতে বাধ্য হতো।

 

গ্রেফতারকৃত খন্দকার মারুফ উক্ত চক্রের মূলহোতা মোঃ হেলাল উদ্দিনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে। চাকুরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের অধিক বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মোঃ হেলাল উদ্দিন, খন্দকার মারুফ এর সহায়তা নিত। মারুফ কথা বলার মাঝেই অত্যন্ত চতুরতার সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা এবং একটি বিশেষ অঞ্চলের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেকে জাহির করে আরও বিশ্বস্থতা অর্জনে মোঃ হেলাল উদ্দিনকে সহায়তা করতো।

 

এভাবেই এই চক্রটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার চাকুরি প্রার্থীদের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছে। যদিও তারা কোন ব্যক্তিকে চাকুরি দিতে সক্ষম হয় নাই। গত ০৫ বছর যাবৎ এই চক্রটি ৫০ জন চাকুরিপ্রার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে এভাবে প্রতারণা করে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা প্রত্যেকেই আর্থিক লাভের আশায় এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে মর্মে তাদের কৃতকর্মের বিষয়টি স্বীকার করেছে।

 

 

ধৃত মোঃ হেলাল উদ্দিন বগুড়ার একটি কলেজ থেকে ডিগ্রী পাশ করেছে। সে নিজেকে মোহাম্মদপুর থানার অবসর প্রাপ্ত ওসি হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। ধৃত মোঃ খন্দকার মারুফ এইচএসসি পাশ। সে অত্যন্ত চতুরতার সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা এবং একটি বিশেষ অঞ্চলের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেকে জাহির করে আরও বিশ্বস্থতা অর্জনে মোঃ হেলাল উদ্দিনকে সহায়তা করতো।

 

 

ধৃত মোঃ মফিজুল ইসলাম @ লেবু এসএসসি পাশ। সে কুড়িগ্রাম জেলার অলিপুর থানার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার। ধৃত মোঃ আব্দুল কাদের @ রাজু একটি বেসরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠান হতে ডিপ্লোমা পাশ। মোঃ মফিজুল ইসলাম লেবু এবং মোঃ আব্দুল কাদের রাজু দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে লালমনিরহাট, বগুড়া, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকুরি প্রার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের মোঃ হেলাল উদ্দিন এর কাছে নিয়ে আসত। ধৃত আসামীদের বর্তমানে কোন দৃশ্যমান পেশা নেই। প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎই তাদের বর্তমান পেশা। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বীণা রানী দাস, পিপিএম, পিপিএম (সেবা)
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
সহকারী পরিচালক (অপস্ ও ইন্ট শাখা)
পক্ষে পরিচালক