বাংলাদেশ ০৭:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
এসএসসি (ভোকেশনাল) বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলে ধনবাড়ীর শিক্ষার্থী ফাতেমা সারাদেশে দ্বিতীয় ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ কতৃক -৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার, ৯ টি ওয়ারেন্ট নিষ্পত্তি প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তরে ঔষধ ও মেডিক্যাল সামগ্রী ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্রতারণা ও জালিয়াতির প্রতারক চক্রের মূলহোতা সহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। স্কুলে শিক্ষাথীর সংখ্যা ১১,এসএসসিতে অকৃতকার্য ১১ ঠাকুরগাঁওয়ে ভূট্রা ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি পাঠাগারের নতুন সভাপতি জহির ও সাধারণ সম্পাদক লিটন এবার চার বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি। বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ ১ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার। অভিনব কায়দায় পাচারের সময় গাঁজাসহ ০১ জন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। কুবিতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন অ্যাসাইলাম আবেদন প্রত্যাখান হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আ.লীগের সংস্কৃতি-বিষয়ক উপকমিটির সদস্য হলেন রাবির ড. সুজন সেন দেশে গণমানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে: রাবি উপ-উপাচার্য হিন্দু শিক্ষার্থীকে শিবির আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি রাবি ছাত্রলীগ নেতার আবারো তাজা প্রাণ গেল এক যুবকের।

পাটশাকের জানা-অজানা গুণাগুণ 

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:৫০:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ মে ২০২২
  • ১৭৯৯ বার পড়া হয়েছে

পাটশাকের জানা-অজানা গুণাগুণ 

মাহফুজ হাসান, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
সবুজ রঙের যেকোনো শাক বা সবজি আমাদের জন্য যে ভীষণ উপকারী, একথা তো সবারই জানা। সবুজ শাকের প্রসঙ্গ এলে সবার আগে মনে পড়ে পালংশাক কিংবা মেথি শাকের কথা। এদিকে পুষ্টিগুণে ভরপুর পাট শাকের কথা থেকে যায় আড়ালেই।
আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পাট চাষ হয়। কিশোরগঞ্জ জেলার বাড়িতে বাড়িতে গরমকালে পাট শাক রান্নার চল বহু যুগের। এটি খেলে পেট ঠান্ডা হয়, এমনই বলেন অনেকে।
গরমে বহু  বাড়িতেই পাট শাক খাওয়া হয়। প্রচলিত আছে, এই শাক খেলে পেট ঠান্ডা হয়। কিন্তু সেটিই কি সব? নাকি, পাট শাকের আরও নানা ধরনের প্রভাব আছে শরীরের উপর? দেখে নেওয়া যাক।
কচি পাটের পাতা শাক হিসাবে খাওয়া হয়। রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি স্যুপ ও সস বানিয়েও এই শাক ব্যবহার করা হয়। পাট শাক ভেজেও খান অনেকে। শুধু স্বাদ নয়, পাট শাকের অনেক গুণও আছে।
জানা যায়,পাট শাকে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। তাই এটি নানা ধরনের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে আছে লাইকোপিন। এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শরীরকে দূষণমুক্ত করে এটি।
এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামও আছে। তাই নিয়মিত পাট শাক খেলে হাড় ভালো থাকে।
পাট শাকে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। তাই পাট শাক খেলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ শক্তি। বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে এটি।
কারা পাট শাক খাবেন না?
অনেকের অনেক শাকে অ্যালার্জি থাকে। পাট শাক খেলেও কারও কারও অ্যালার্জি সমস্যা হয়। চুলকানি বা র‍্যাশ হতে পারে। যাঁদের এই জাতীয় সমস্যা আছে, তাঁরা এই শাক খাবেন না।
বিভিন্ন দেশে কীভাবে পাট শাক খাওয়া হয়:
নাইজিরিয়ায় পাট পাতা ও শুকনো মাছ দিয়ে ‘ইয়েডু’ নামের স্যুপ খাওয়া হয়।
মিশরে পাট পাতা কুচিয়ে তার মধ্যে লেবুর রস ও অলিভ অয়েল দিয়ে খাওয়া হয়। এর নাম মুলুখিয়া।
পাট শাকের চা খাওয়া হয় জাপানে।
ভারত, বাংলাদেশে পাট শাকের নানা পদ খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।
দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে বানাবেন মিষ্টি পাট শাকের ঝোল:
কী কী লাগবে
মিষ্টি পাট শাক: ২মুঠো
রসুন: ১২ কোয়া
শুকনো লঙ্কা: ১টি
পাঁচ‌ফোড়ন:১ চা চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ
হলুদ গুঁড়ো: আধ চা চামচ
নুন: স্বাদ অনুযায়ী
চিনি: ১ চা চামচ
কীভাবে বানাবেন
পাট শাক ছোট করে কেটে বেছে ধুয়ে নিন। জল ঝরিয়ে দিন।
কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে শুকনো লঙ্কা, পাঁচফোড়ন ও রসুন থেঁতো করে দিয়ে দিন।
সুগন্ধ বেরোলে পাট শাক দিন। নুন ও হলুদ দিয়ে ঢাকা দিন। এই রান্না‌য় একটু বেশি করে রসুন ব‍্যবহার করতে হয়।৫ মিনিট পর ঢাকা খুলে দেখুন শাকের জল বেরিয়েছে কি না। বেরোলে ঢাকা খুলে দিন।
জল শুকিয়ে নিন।পাট শাক সিদ্ধ হয়ে গেলে হালকা গরম জল এক কাপ দিন। ফুটে উঠলে চিনি দিন।
সমস্ত‌টা মিশিয়ে নিয়ে গ‍্যাস বন্ধ করে দিন।তৈরি হয়ে গেল মিষ্টি পাট শাকের ঝোল।
আয়ুর্বেদীক মতে,১/ হৃদ রোগের জন্য পাটশাক খুব উপকারী- পাট শাকে থাকা খাদ্য উপাদান মানব শরীরের রক্তে কোলেস্ট্ররেলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়।
২/ ক্যানসার প্রতিরোধে পাটশাক কার্যকরী- পাট শাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে শরীর থেকে টক্সিন মুক্ত করে রাখে। ফলে ক্যানসার হওয়ার সম্ভবনা কমে আসে।
৩/ হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্ত চাপ কমাতে পাটশাক দারুন কার্যকরী- পাটশাকে পটাশিয়াম থাকার কারণে মানব দেহে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে। এর কারণে দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও উচ্চ রক্ত চাপ বা হাই ব্লাড প্রেসারের ঝুঁকি কমায়।
৪/ অনিদ্রা দূর করিতে পাট শাকের ভূমিকা অনেক-  এই পাট শাকের মধ্যে প্রচুর মাত্রায়  ম্যাগনেশিয়াম থাকায় শরীরে দরকারি হরমোন  যোগান দিতে সাহায্য করে ফলে দেখের স্নায়ুতন্ত্র সচ্চল ও শান্ত রাখে এবং অনিদ্রা দূর করিতে সাহায্য করে।
৫/ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পাটশাক অতুলনীয়-
পাট শাকের মধ্যে ভিটামিন-A,B,E,C  থাকায় রোগের সাথে লড়াই করতে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। ভিটামিন-B রক্তে থাকা শ্বেতকণা গঠন করে এবং ভিটামিন-A ও E  চোখ, হৃৎপিণ্ডের সাথে অন্যান্য অঙ্গের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে।
৬/ হাড় গঠনে পাট শাক উপকারী-  পাটশাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রণ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম উপাদান গুলো হাড় গঠন করতে ও ক্ষয়রোধ করতে সহায়তা করে।
৭/ জীবন শক্তি বৃদ্ধিতে এই শাক অসাধারণ গুণ- এই শাকে ভরপুর মাত্রায় আয়রন থাকার জন্য রক্তে থাকা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলে।এই পাটশাকে থাকা আয়রণ  শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং জীবন শক্তি বাড়িয়ে তুলে।
৮/ হজমশক্তি বৃদ্ধিতে পাটশাক বেশ কার্যকর- পাট শাকে প্রচুর খাদ্য আঁশ থাকে যাহা খাবার হজম করতে খুব কার্যকরী এবং শরীরের পুষ্টি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে দেহের কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়ে যায়।
৯/ বাতজনিত ব্যাথা নিবারণ করিতে পাটশাক আসলে এক ঔষধি- পাটশাক বা নালিয়া শাকে পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন-E আছে। সেই জন্য শরীরে থাকা গেঁটেবাত, জ্বালাযন্ত্রণা এবং আর্থরাইটিস জনিত সমস্যার সমাধানে ইহা এক অতি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি বলা যায়।
১০/ বাড়তি শিশুর পথ্য হিসাবে পাট শাকে খাদ্য তালিকায় রাখা যায়- পাট শাকে বেশী পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। যাহা বাড়তি শিশুর শ্রীবৃদ্ধির জন্য খাদ্য তালিকায় পাটশাক রাখা অত্যন্ত লাভদায়ক।
২০২০ সালে শাকের সঙ্গে সোনালী আঁশ পাটের দু’টি নতুন জাত যুক্ত হলো। জাত দুটি হচ্ছে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) কর্তৃক অবমুক্তকৃত-বিজেআরআই দেশি পাটশাক-২ (ম্যাড়া লাল) ও বিজেআরআই দেশি পাটশাক-৩ (ম্যাড়া সবুজ)। দীর্ঘ ৫ বছরর গবেষণায় জাত দুটি উদ্ভাবন করেন বিজ্ঞানী মো. জ্যাবলুল তারেক। বুনো পাট থেকে শাকের এ দুটি জাত উদ্ভাবন করা হয়।
জ্যাবলুল তারেক ১০ ই এপ্রিল ২০২০ একটা প্রতিবেদনে প্রকাশ করেণ, স্বাদ তিতাহীন বলে এটি অধিক সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। পুষ্টিগুণসম্পন্ন হওয়ায় মানুষের শাকের চাহিদা মেটানার পাশাপাশি পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে। শাকটি মালভেসি পরিবারের, যার বৈজ্ঞানিক নাম (Corchorus capsularis)। নতুন পাটশাকের জাত দুটিতে গড়ে প্রায় ক্যালসিয়াম (২.১৫%), পটাশিয়াম (১.৬৪%), আয়রন (৭৯০.৫ মিলিগ্রাম/কেজি), প্রোটিন (২০.৫০%), ভিটামিন-এ (১২৬.৪৫ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম) এবং ভিটামিন-সি (৭৫.১৭ মিলিগ্রাম/১০০গ্রাম) বিদ্যমান।
আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

এসএসসি (ভোকেশনাল) বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলে ধনবাড়ীর শিক্ষার্থী ফাতেমা সারাদেশে দ্বিতীয়

পাটশাকের জানা-অজানা গুণাগুণ 

আপডেট সময় ১১:৫০:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ মে ২০২২
মাহফুজ হাসান, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
সবুজ রঙের যেকোনো শাক বা সবজি আমাদের জন্য যে ভীষণ উপকারী, একথা তো সবারই জানা। সবুজ শাকের প্রসঙ্গ এলে সবার আগে মনে পড়ে পালংশাক কিংবা মেথি শাকের কথা। এদিকে পুষ্টিগুণে ভরপুর পাট শাকের কথা থেকে যায় আড়ালেই।
আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পাট চাষ হয়। কিশোরগঞ্জ জেলার বাড়িতে বাড়িতে গরমকালে পাট শাক রান্নার চল বহু যুগের। এটি খেলে পেট ঠান্ডা হয়, এমনই বলেন অনেকে।
গরমে বহু  বাড়িতেই পাট শাক খাওয়া হয়। প্রচলিত আছে, এই শাক খেলে পেট ঠান্ডা হয়। কিন্তু সেটিই কি সব? নাকি, পাট শাকের আরও নানা ধরনের প্রভাব আছে শরীরের উপর? দেখে নেওয়া যাক।
কচি পাটের পাতা শাক হিসাবে খাওয়া হয়। রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি স্যুপ ও সস বানিয়েও এই শাক ব্যবহার করা হয়। পাট শাক ভেজেও খান অনেকে। শুধু স্বাদ নয়, পাট শাকের অনেক গুণও আছে।
জানা যায়,পাট শাকে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। তাই এটি নানা ধরনের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে আছে লাইকোপিন। এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শরীরকে দূষণমুক্ত করে এটি।
এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামও আছে। তাই নিয়মিত পাট শাক খেলে হাড় ভালো থাকে।
পাট শাকে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। তাই পাট শাক খেলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ শক্তি। বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে এটি।
কারা পাট শাক খাবেন না?
অনেকের অনেক শাকে অ্যালার্জি থাকে। পাট শাক খেলেও কারও কারও অ্যালার্জি সমস্যা হয়। চুলকানি বা র‍্যাশ হতে পারে। যাঁদের এই জাতীয় সমস্যা আছে, তাঁরা এই শাক খাবেন না।
বিভিন্ন দেশে কীভাবে পাট শাক খাওয়া হয়:
নাইজিরিয়ায় পাট পাতা ও শুকনো মাছ দিয়ে ‘ইয়েডু’ নামের স্যুপ খাওয়া হয়।
মিশরে পাট পাতা কুচিয়ে তার মধ্যে লেবুর রস ও অলিভ অয়েল দিয়ে খাওয়া হয়। এর নাম মুলুখিয়া।
পাট শাকের চা খাওয়া হয় জাপানে।
ভারত, বাংলাদেশে পাট শাকের নানা পদ খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।
দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে বানাবেন মিষ্টি পাট শাকের ঝোল:
কী কী লাগবে
মিষ্টি পাট শাক: ২মুঠো
রসুন: ১২ কোয়া
শুকনো লঙ্কা: ১টি
পাঁচ‌ফোড়ন:১ চা চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ
হলুদ গুঁড়ো: আধ চা চামচ
নুন: স্বাদ অনুযায়ী
চিনি: ১ চা চামচ
কীভাবে বানাবেন
পাট শাক ছোট করে কেটে বেছে ধুয়ে নিন। জল ঝরিয়ে দিন।
কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে শুকনো লঙ্কা, পাঁচফোড়ন ও রসুন থেঁতো করে দিয়ে দিন।
সুগন্ধ বেরোলে পাট শাক দিন। নুন ও হলুদ দিয়ে ঢাকা দিন। এই রান্না‌য় একটু বেশি করে রসুন ব‍্যবহার করতে হয়।৫ মিনিট পর ঢাকা খুলে দেখুন শাকের জল বেরিয়েছে কি না। বেরোলে ঢাকা খুলে দিন।
জল শুকিয়ে নিন।পাট শাক সিদ্ধ হয়ে গেলে হালকা গরম জল এক কাপ দিন। ফুটে উঠলে চিনি দিন।
সমস্ত‌টা মিশিয়ে নিয়ে গ‍্যাস বন্ধ করে দিন।তৈরি হয়ে গেল মিষ্টি পাট শাকের ঝোল।
আয়ুর্বেদীক মতে,১/ হৃদ রোগের জন্য পাটশাক খুব উপকারী- পাট শাকে থাকা খাদ্য উপাদান মানব শরীরের রক্তে কোলেস্ট্ররেলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়।
২/ ক্যানসার প্রতিরোধে পাটশাক কার্যকরী- পাট শাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে শরীর থেকে টক্সিন মুক্ত করে রাখে। ফলে ক্যানসার হওয়ার সম্ভবনা কমে আসে।
৩/ হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্ত চাপ কমাতে পাটশাক দারুন কার্যকরী- পাটশাকে পটাশিয়াম থাকার কারণে মানব দেহে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে। এর কারণে দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও উচ্চ রক্ত চাপ বা হাই ব্লাড প্রেসারের ঝুঁকি কমায়।
৪/ অনিদ্রা দূর করিতে পাট শাকের ভূমিকা অনেক-  এই পাট শাকের মধ্যে প্রচুর মাত্রায়  ম্যাগনেশিয়াম থাকায় শরীরে দরকারি হরমোন  যোগান দিতে সাহায্য করে ফলে দেখের স্নায়ুতন্ত্র সচ্চল ও শান্ত রাখে এবং অনিদ্রা দূর করিতে সাহায্য করে।
৫/ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পাটশাক অতুলনীয়-
পাট শাকের মধ্যে ভিটামিন-A,B,E,C  থাকায় রোগের সাথে লড়াই করতে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। ভিটামিন-B রক্তে থাকা শ্বেতকণা গঠন করে এবং ভিটামিন-A ও E  চোখ, হৃৎপিণ্ডের সাথে অন্যান্য অঙ্গের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে।
৬/ হাড় গঠনে পাট শাক উপকারী-  পাটশাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রণ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম উপাদান গুলো হাড় গঠন করতে ও ক্ষয়রোধ করতে সহায়তা করে।
৭/ জীবন শক্তি বৃদ্ধিতে এই শাক অসাধারণ গুণ- এই শাকে ভরপুর মাত্রায় আয়রন থাকার জন্য রক্তে থাকা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলে।এই পাটশাকে থাকা আয়রণ  শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং জীবন শক্তি বাড়িয়ে তুলে।
৮/ হজমশক্তি বৃদ্ধিতে পাটশাক বেশ কার্যকর- পাট শাকে প্রচুর খাদ্য আঁশ থাকে যাহা খাবার হজম করতে খুব কার্যকরী এবং শরীরের পুষ্টি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে দেহের কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়ে যায়।
৯/ বাতজনিত ব্যাথা নিবারণ করিতে পাটশাক আসলে এক ঔষধি- পাটশাক বা নালিয়া শাকে পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন-E আছে। সেই জন্য শরীরে থাকা গেঁটেবাত, জ্বালাযন্ত্রণা এবং আর্থরাইটিস জনিত সমস্যার সমাধানে ইহা এক অতি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি বলা যায়।
১০/ বাড়তি শিশুর পথ্য হিসাবে পাট শাকে খাদ্য তালিকায় রাখা যায়- পাট শাকে বেশী পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। যাহা বাড়তি শিশুর শ্রীবৃদ্ধির জন্য খাদ্য তালিকায় পাটশাক রাখা অত্যন্ত লাভদায়ক।
২০২০ সালে শাকের সঙ্গে সোনালী আঁশ পাটের দু’টি নতুন জাত যুক্ত হলো। জাত দুটি হচ্ছে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) কর্তৃক অবমুক্তকৃত-বিজেআরআই দেশি পাটশাক-২ (ম্যাড়া লাল) ও বিজেআরআই দেশি পাটশাক-৩ (ম্যাড়া সবুজ)। দীর্ঘ ৫ বছরর গবেষণায় জাত দুটি উদ্ভাবন করেন বিজ্ঞানী মো. জ্যাবলুল তারেক। বুনো পাট থেকে শাকের এ দুটি জাত উদ্ভাবন করা হয়।
জ্যাবলুল তারেক ১০ ই এপ্রিল ২০২০ একটা প্রতিবেদনে প্রকাশ করেণ, স্বাদ তিতাহীন বলে এটি অধিক সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। পুষ্টিগুণসম্পন্ন হওয়ায় মানুষের শাকের চাহিদা মেটানার পাশাপাশি পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে। শাকটি মালভেসি পরিবারের, যার বৈজ্ঞানিক নাম (Corchorus capsularis)। নতুন পাটশাকের জাত দুটিতে গড়ে প্রায় ক্যালসিয়াম (২.১৫%), পটাশিয়াম (১.৬৪%), আয়রন (৭৯০.৫ মিলিগ্রাম/কেজি), প্রোটিন (২০.৫০%), ভিটামিন-এ (১২৬.৪৫ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম) এবং ভিটামিন-সি (৭৫.১৭ মিলিগ্রাম/১০০গ্রাম) বিদ্যমান।