কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি।
পিরোজপুরের কাউখালী সদরে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অত্র এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বর্ষা মৌসুমে পানিবন্দী হয়ে থাকার উপক্রম হয়েছে।
উপজেলা সদরের কাজী হারুন অর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাউখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ অত্র এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বর্ষা মৌসুমে কাদা পানি ভেঙ্গে চলাচল করে। বিদ্যালয়ের পিছনে মাঠের বর্ষা মৌসুমে পানি চলাচলের কোন ব্যবস্থা না থাকায় ডেঙ্গু মশা, বিভিন্ন পোকামাকড় ও সাপের নিরাপদ স্থান এই এলাকায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ক্লাস করতে ভয় পাচ্ছে কখন না তাদের সাপে আক্রমণ করে। অভিভাবকরা তাদের কোমলমতি ছেলেমেয়েদের উক্ত বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে।
কাউখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইনুল হোসেন মনির মোল্লা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের পিছনে ডোবার পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় মশা মাছিসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের বংশবৃদ্ধি পায়। এবং এখানে বিভিন্ন ধরনের সাপের উপদ্রব লক্ষ্য করা যায়। ছাত্র-ছাত্রীরা সাপের ভয়ে আতঙ্কে থাকে।
কাজী হারুন অর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিথীকা সাহা বলেন, বিদ্যালয়ের পিছনের পানি নিষ্কাশনের তেমন কোন ব্যবস্থা না থাকায় ডোবার ভিতর ডেঙ্গু মশা, বিভিন্ন পোকামাকড় সহ সাপের উপদ্রবে ছাত্র-ছাত্রীরা আতঙ্কে থাকে।
কাউখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র জালিম মাহমুদ বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমাদের বিদ্যালয় যেতে ভয় লাগে কারণ আমাদের ক্লাসের পিছনের ডোবার পানি নিষ্কাশন না হওয়ার বিভিন্ন প্রকার সাপ ও ডেঙ্গু মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। কাজী হারুন অর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী রিদি আক্তার বলেন বিদ্যালয়ের আশেপাশে পানি থাকার কারণে বিদ্যালয় যেতে ভয় লাগে কারণ কখন না আমাদের সাপে আক্রমণ করে।
অত্র এলাকার মুরুব্বী আব্দুল বারেক বলেন, পানির নিষ্কাশনের ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ সহ বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়েও পানির নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি ফলে বাধ্য হয় এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় বাড়ি করার চেষ্টা করছি।
অত্র এলাকার বাসিন্দা সংবাদকর্মী রিয়াদ মাহমুদ সিকদার বলেন, বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় এই পানি নিষ্কাশনের সমস্যার ব্যাপারে বহুবার লেখালেখি করেও কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি এবং আমি নিজে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা , উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে বারে বারে বলা সত্ত্বেও তারা আজ পর্যন্ত কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমিসহ অত্র এলাকার জনসাধারণ স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে কাউখালী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে ডোবার সমস্যাগুলো দেখেছি। এলাকাবাসী সহযোগিতা করলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা বলেন, আমি উক্ত বিদ্যালয় দুটো পরিদর্শন করেছি এবং বিদ্যালয়ের পিছনের মাঠের পানি অবস্থা দেখেছি। সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বলেছি পানির নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।