মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি:
হ্যা, কোন পুকুর কিংবা জলাশয় না থাকলেও ছোট কিংবা বড় আকারের মৎস্য চাষ প্রকল্প তৈরী করা সম্বভ ! অভিনব পদ্ধতি মনে হলেও এটা প্রাকৃতিক পরিবেশে মৎস্য চাষ পদ্ধতি এবং প্রায়োগিক বাস্তবতা খুবই সহজ ও আনন্দের !
যাদের কোন জলাশয় নেই অথচ বড় বা ছোট ধরনের মৎস্য চাষ প্রকল্প করতে আগ্রহী তারা ইচ্ছে করলে অতি সহজে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে ভাল লাভবান হতে পারেন ।
মাছ রক্ষনাবেক্ষনে শুধু দেখভাল ছাড়া বাড়তি কোন ঝুঁকি ঝামেলা পোহাতে হয় না। জলাশয় তৈরী, সেচ বা নিরাপদ বেষ্টনী তৈরী করতে নেই বাড়তি কোন খরচ।
দক্ষিনাঞ্চলীয় জেলা বরগুনার বামনা উপজেলার হোগলপাতি গ্রামের সোনার বাংলা হ্যাচারীর মালিক কানাডা প্রবাসী গোলাম আজম একই উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামের নদীতে ১০ বছর যাবৎ ভাসমান খাঁচা পদ্ধতিতে নানা জাতের মাছ চাষ করছেন ।
এ মাছ চাষ প্রকল্প তৈরী করে তিনি বেশ লাভবান হয়েছেন বলে জানা যায়। ১০ ফুট প্রস্হ ২০ ফুট চওড়া ৬ ফুট গভীরতার = ১২০ স্কয়ার ফুট লোহার রডের তৈরী হালকা কাঠামোর ৫ তলে তিন স্তরের প্লাস্টিক নেটে তৈরী আয়াতাকার খাঁচা বড় প্লাস্টিক ড্রামের সাহায্যে পানিতে ভাসিয়ে রাখা হয়। খাঁচা প্রতি খরচ হয় ১৫০০০ টাকা।
এ রকম একাধিক খাঁচা যুক্ত করে নদী খালে ভাসিয়ে মাছ চাষ করা যায়। জোয়ার ভাটা কিংবা জলোচ্ছাসে ভাসমান খাঁচাও সমান তালে ভেসে থাকে। ১২০ স্কয়ার ফুটের খাঁচায় ৫০ গ্রাম ওজনের ১০০০ পিছ তেলাপিয়া মাছের পোনা পালন করার পরে যখন ১০০/১৫০ গ্রাম ওজন হয় তখন বাছাই করে খাঁচাপ্রতি ৬০০ পিছ পোনা মাছ পালন শেষে ২/৩ টি মাছে ১ কেজি ওজন হলে বাজারজাত করা হয়।
সোনার বাংলা হ্যাচারীর চালিতাবুনিয়ার খাচায় তেলাপিয়া মাছ চাষ প্রকল্পের ম্যানেজার মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, মাসিক ৫০০০০ টাকা বেতনে ৩ জন কেয়ার টেকার প্রায় ১০ বছর যাবৎ খাঁচা পদ্ধতিতে তেলাপিয়া মাছের চাষ করছি। নদীর জলে চাষ করা মাছের স্বাধ ও গন্ধ অতুলনীয় যে কারনে ক্রেতাদের কাছে এই মাছের চাহিদা বেশী।
বর্তমানে এখানে ৭০ টি খাঁচায় প্রায় ৩৫০০০ পিছ মাছ চাষ চলমান আছে। সমস্ত খরচ বাদে এক তৃতীয়াং লাভ থাকে। কিন্ত বর্তমানে একটন মৎস্য খাদ্য ৫৮০০০ টাকায় কিনতে হয়। যা মৎস্য চাষীদের জন্য ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। সরকারী পৃষ্টপোষকতা পেলে মাছ চাষীরা এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে উৎসাহিত হবে।
সোনার বাংলা হ্যাচারীর মালিক গোলাম আজমকে একাধিক বার মূঠোফোনে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। বামনা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মোস্তফা মূঠোফোনে বলেন, বাড়তি ঝামেলা ছাড়া নদীতে খাঁচা পদ্ধতিতে সহজে মৎস্য চাষ একটি চমৎকার উদ্যোগ, সরকারী পৃষ্ঠপোশকতা পেলে মানুষ খাঁচা পদ্ধতিতে মৎস্য চাষে উৎসাহিত হবে।