নুরুন নাহার বেবী সিলেট।
সিলেট সুনামগঞ্জ সীমান্তেরই দেড় শতাধিক স্থান দিয়ে ঢুকছে চোরা চালানের পণ্য। বর্তমানে বর্তমানে বেশি ঢুকছে ভারতীয় চিনি। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবাধে ঢুকছে ভারতীয় চোরাই চিনি। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা সহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে রাতে ট্রাকে করে চোরাই পণ্য আসছে।
সুনামগঞ্জ ও সিলেট সীমান্তেরই দেড় শতাধিক স্থান দিয়ে ঢুকছে চোরা চালানের পণ্য। তবে ইদানীং বেশি আসছে ভারতীয় চিনি। ওই চিনি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা বস্তায় ভরে বাজারজাত করা হচ্ছে। এতে কিছু লোকের মুনাফা হলেও সাধারণ ভোক্তাদের চড়া দামেই কিনতে হচ্ছে।
গত সপ্তাহে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মুজিববাজারে গিয়ে দেখা যায়, রাত ২টায় ভারতীয় চিনির বস্তা তোলা হচ্ছিল বড় ট্রাকে। এখানে চলে তাদের জমজমাট ব্যবসা। টাকার বড় অংশ যায় চেয়ারম্যান কাছে। এই টাকা নিয়ে যান বড় নেতার কাছে।
ধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিলন মিয়া সব অস্বীকার করে বলেন, স্লিপ দেওয়া আমার কাজনি? এটা নিয়ন্ত্রণ করা প্রশাসনের কাজ। দেখেন তো আমার নামে কোনো স্লিপ আছেনি? সুনামগঞ্জ ও সিলেট সীমান্তেরই দেড় শতাধিক স্থান দিয়ে ঢুকছে চোরাচালানের পণ্য। বেশি ঢুকছে ভারতীয় চিনি। সম্প্রতি সিলেটের বিশ্বম্ভরপুর দিয়ে ই বেশি আসছে।
দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবাধে ঢুকছে ভারতীয় চোরাই চিনি। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে রাতে ট্রাকে করে চোরাই পণ্য আসছে। সুনামগঞ্জ ও সিলেট সীমান্তেরই দেড় শতাধিক স্থান এখানে ব্যবসায় কোনো রিস্ক নাই।
সিলেটের পিপি ড. খায়রুল কবির রোমেন বলেন, সীমান্তে চোরা চালান ওপেন হয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সুনির্দিষ্ট ভাবে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুগ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। চিনির চাহিদা অনেক কমেছে।
মেঘনা গ্রুপের উপমহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার জানান, পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে তাঁদের কোম্পানির মোড়ক নকল করে ভারতীয় চোরাই চিনি ঢোকানো হচ্ছে। বিভিন্ন স্থান থেকে তাঁরা বস্তার নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
তাতে দেখা যায়, কয়েকটি বস্তার গায়ে প্রস্তুতকারক, মোড়কজাতকারী ও বাজারজাতকারী হিসেবে লেখা ‘মেঘনা ওয়েল অ্যান্ড সুগার কোম্পানী, মৌলভীবাজার ট্রেড সেন্টার, চকবাজার ঢাকা’। যদিও ইংরেজিতে ‘মেঘনা’ নামটি সঠিকভাবে লেখা হয়নি।
তসলিম শাহরিয়ার বলেন, চোরাই চিনি আমাদের কোম্পানির নাম ব্যবহার করে প্যাকেটে ভরে বাজারজাত হচ্ছে। এতে আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যাবে। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছে।
সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা বলেন, অবৈধভাবে আসা চিনি সিটি গ্রুপের ব্যাগে ভরে বিক্রির বিষয়টি তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনকে জানিয়েছেন।
একজন চিনি ব্যবসায়ী জানান, প্রতি কেজি চোরাই চিনি সীমান্তে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ঢাকার মৌলভীবাজারে ১২৫-১৩০ টাকায়, অন্যান্য বাজারে ১৪০-১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চোরাকারবারের বিষয়ে বিজিবির আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য মেলেনি।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে কর্মকর্তারা কোনো বক্তব্য দেবেন না।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান অবশ্য বলেন, যেকোনো উপায়ে হোক, বাজারে চিনির সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে। তবে ভারতীয় চোরাই চিনি আসায় মুষ্টিমেয় কিছু লোক উপকৃত হলেও ভোক্তাদের বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। তাই চিনির বাজারে চলছে অভ্যন্তরীণ কোন দল।
মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে শুল্কফাঁকি দিয়ে চোরাইপথে আসছে ভারতীয় চিনি। পরে তা দেশীয় প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বাজারে। কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করায় লাভবান হচ্ছে চোরাকারবারি ও সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে, প্রতারিত হচ্ছে ভোক্তারা।