উজ্জ্বল কুমার দাস (কচুয়া, বাগেরহাট) প্রতিনিধি।।
মানুষ বড় স্বার্থপর,আপন সন্তানের কাছেই মা যখন বোঝা। ঠিক এমন স্বার্থপর পৃথিবীতেও কিছু মানবিক মানুষ আছে বলেই হয়তো পৃথিবী এখনো সুন্দর।
বলছি এমন এক মানবিক মানুষের কথা যিনি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ মনিসংকর পাইক। তিনি সাবিত্রী রানী বিশ্বাস নামের এক ৮০ বছরের বৃদ্ধাকে ২ বছরের বেশি সময় ধরে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশ্রয় দিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ্য করে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাজপাট এলাকার বৃদ্ধাশ্রমে স্থানান্তরিত করার ব্যবস্থা করে মানবতার এক নজির স্থাপন করেছেন। আর এ কাজে সহায়তা করেছেন কচুয়া উপজেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অধিদপ্তর, উপজেলা পরিষদ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সহ স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম।
সন্তান প্রফুল্ল বিশ্বাস ও পুত্রবধূর নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরে ২০২২ সাল থেকে সাবিত্রী রানী বিশ্বাস মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় আশ্রয় নেয় কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। যে ঘটনা তখন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও ফলোআপ করে প্রচার হয়। তারপর ও সেখান থেকে তার সন্তান ও স্বজনরা তাকে নিতে অস্বীকার করে এবং খোঁজ খবর নেওয়া বন্ধ করে দেয়। তখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ মনিসংকর পাইকের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালেই তার জন্য ফ্রী চিকিৎসা, থাকা-খাওয়া, ঔষধ সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে তিনি সুস্থ্য হওয়ায় তার নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয়েছে।
একি সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অসহায় ঐ বৃদ্ধার জন্য কম্বল, পরিধানের কাপড়, ৬ মাসের প্রয়োজনীয় ঔষধ, বৃদ্ধাশ্রমে পৌছানোর জন্য পরিবহন ব্যবস্থা সহ পৌঁছে দেওয়ার জন্য সাথে স্টাফ দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ মনিসংকর পাইক বলেন, আমাদের এখানে সাবিত্রী মালো (বিশ্বাস) নামে যে রুগীটি ছিল তাকে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলি কিন্তু তার পরিবারের আত্মীয়- স্বজন বিশেষ করে তার ছেলে তাকে নিতে অস্বীকৃতি জানানোর পরে আমরা একটু বিপদেই পরি। পরে মানবতার খাতিরে তাকে রেখে দিতে বাধ্য হই। বর্তমানে ঝুঁকি পূর্ণ ভবন ও ভর্তি রোগীদের বেড সংকটের কারনে আমরা তাকে যে কোন ভাবেই হোক অন্য জায়গা হস্তান্তরের চিন্তা থেকে একটি বৃদ্ধাশ্রমের খোঁজ পাই। পরবর্তীতে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
একি সাথে নিয়মিত তাকে খোঁজ খবর রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।প্রয়োজনে তার মৃত্যুর পরে দাফন কাফনের দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন।