বাংলাদেশ ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ গণধর্ষণ মামলায় গ্রাম পুলিশসহ গ্রেপ্তার-২ ৪ বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই নানা আয়োজনে যশোর মুক্ত দিবস উদযাপন  বড় ভাইয়ের ইটের আঘাতে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা নারী নির্যাতন মামলা করায় বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ  মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ও সদস্য সচিব সহ চার নেতাকে গ্রেফতারে বিএনপির নিন্দা অবাধে চলছে মোবাইলে টাকা দিয়ে লুডু খেলা প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দূর্ঘটনা  বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে মারা গেলেন ছোট ভাই স্ত্রীর পরকীয়া সইতে না পেরে স্বামীর আত্মহত্যা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক পক্ষকাল ব্যাপি প্রচারাভিযান ইবি শিক্ষার্থী মানবতার সেবক মুরাদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার পিরোজপুর জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আর নেই প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

সাতক্ষীরার দেবহাটায় মামা মামীর পরকীয়ায় চোখ হারালো শিশু ভাগ্নে

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:৩৫:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ মার্চ ২০২২
  • ১৬৫৫ বার পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরার দেবহাটায় মামা মামীর পরকীয়ায় চোখ হারালো শিশু ভাগ্নে

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভিডিও প্রতিযোগিতা: বিস্তারিত ফেইসবুক পেইজে

 

এম এ আছাদ, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

বড় মামী ও ছোট মামার পরকীয়া দেখে ফেলায় তাদের অমানুষিক নির্যাতনে হত্যা চেষ্টায় সাতক্ষীরার দেবহাটায় চোখ হারিয়েছে ৬ বছরের শিশু ভাগ্নে আলিফ ফারহান। সোমবার ১৪ মার্চ উপজেলার চর বালিথায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বড় মামি রানী খাতুন (২২) ও ছোট মামা আশিকুজ্জামান ইমন (১৬) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

সোমবার দুপুরে মরিচ্চাপ নদীর পাশ্ববর্তী একটি গর্ত থেকে শিশু আলিফ ফারহানকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধারের পর তাকে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষনিক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। কিন্তু সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে এবং শিশু ফারহানের দুটি চোখে জরুরী অস্ত্রপচারের জন্য পরবর্তীতে রাজধানীর জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে শিশু ফারহান। জাতীয় চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ভিকটিমের স্বজনরা জানিয়েছে, ধারালো ছুরি দিয়ে খুচানোর কারনে ফারহানের ডান চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।

 

 

পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা মহিউদ্দীন বাদি হয়ে দেবহাটা থানায় একটি মামলা দায়ের (০৪/২৮)  করলে পুলিশ  নৃশংস ওই ঘটনায় জড়িত শিশু ফারহানের বড় মামি রানী খাতুন ও ছোট মামা আশিকুজ্জামান ইমনকে গ্রেফতার সহ ঘটনায় ব্যবহৃত চাকু এবং আসামীর রক্তমাখা জামাকাপড় উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত রানী খাতুন ও আশিকুজ্জামান ইমন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলোক জবানবন্দি দিয়েছে।

 

 

দেবহাটা থানার ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ওবায়দুল্লাহ মঙ্গলবার রাতে এক প্রেসনোটে জানান, শিশু ফারহানকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধারের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান ও দেবহাটা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জামিল আহমেদের নেতৃত্বে তদন্ত এবং সাড়াশি অভিযানে নামেন পুলিশ সদস্যরা। শুরুর দিকে ঘটনার পুরো দায় শিশুটির বড় মামি রানীর ওপর চাপিয়ে দেয় ভিকটিমের পরিবার। তাৎক্ষনিক রানী খাতুনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে নেয়া হলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরে রাতেই শিশুটির ছোট মামা আশিকুজ্জামান ইমনকেও গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে নেয়া হলে লোমহর্ষক গোটা ঘটনার রহস্যভেদ হয়।

 

 

ওসি ওবায়দুল্লাহ এসময় আরও বলেন, মা মারা যাওয়ার পর থেকে নানা বাড়িতেই থাকতো শিশু ফারহান। বড় মামি রানী খাতুনকে ডাকতো মা বলে। তার বড় মামা কাজের সুবাদে বছরের প্রায় অধিকাংশ সময়ই যশোরে থাকেন। এরই মধ্যে বড় মামি রানীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে ফারহানের ছোট মামা আশিকুজ্জামান ইমন। সোমবার দুপুরে বড় মামি রানী ও ছোট মামা ইমনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে ফারহান।

 

 

সেসময় বাড়িতে ছিলেননা শিশুটির নানা ও নানি। একপর্যায়ে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে মামি রানীর সহায়তায় ছোটমামা ইমন প্রথমে শিশু আলিফ ফারহানকে ঘরের ভিতরে ডেকে নিয়ে দুই হাত বেঁধে ফেলে। তারপর ইমন ধারালো চাকু দিয়ে নৃশংসভাবে শিশুটির দুই চোখ খুচিয়ে রক্তাক্ত করে দেয় এবং মুখমন্ডল, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান চাকু দিয়ে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করেন।

 

 

একপর্যায়ে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে গেলে সুযোগ বুঝে তাকে পার্শ্ববর্তী মরিচ্চাপ নদীর পাশ্ববর্তী একটি গর্তে ফেলে আসে আশিকুজ্জামান ইমন। বাড়িতে ফিরে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত চাকু এবং রানী খাতুনের রক্তমাখা সালোয়ার লুকিয়ে ফেলে ইমন। তাছাড়া ঘরের মেঝে থেকে রক্তের দাগও মুছে ফেলে তারা।

 

এর কিছুক্ষন পর কৌতুহল বশত ইমন ফের শিশুটিকে ফেলে আসা গর্তের কাছে যায় এবং কেউ তার ভাগ্নেকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে নাটকীয়ভাবে ডাক চিৎকার করে লোকজন জড়ো করে। পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে সাতক্ষীরায় হাসপাতালে নিয়ে যায়। শিশুটিকে হত্যাচেষ্টার পর তার ছোটমামা ইমন অত্যন্ত চতুরতার সাথে ভালো মানুষের অভিনয় করে আসছিল, যাতে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত হয় এবং পুরো ঘটনার দায় কেবলমাত্র বড় মামি রানী খাতুনের ঘাড়ে চাপে।

 

গ্রেফতারকৃত রানী ও ইমন মঙ্গলবার দুপুরে এভাবেই আদালতে স্বীকারোক্তি মুলোক জবান বন্দি দিয়ে গোটা লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা করেন এবং জবানবন্দী গ্রহন শেষে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

 

 

সাতক্ষীরার দেবহাটায় মামা মামীর পরকীয়ায় চোখ হারালো শিশু ভাগ্নে

আপডেট সময় ১০:৩৫:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ মার্চ ২০২২

 

এম এ আছাদ, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

বড় মামী ও ছোট মামার পরকীয়া দেখে ফেলায় তাদের অমানুষিক নির্যাতনে হত্যা চেষ্টায় সাতক্ষীরার দেবহাটায় চোখ হারিয়েছে ৬ বছরের শিশু ভাগ্নে আলিফ ফারহান। সোমবার ১৪ মার্চ উপজেলার চর বালিথায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বড় মামি রানী খাতুন (২২) ও ছোট মামা আশিকুজ্জামান ইমন (১৬) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

সোমবার দুপুরে মরিচ্চাপ নদীর পাশ্ববর্তী একটি গর্ত থেকে শিশু আলিফ ফারহানকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধারের পর তাকে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষনিক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। কিন্তু সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে এবং শিশু ফারহানের দুটি চোখে জরুরী অস্ত্রপচারের জন্য পরবর্তীতে রাজধানীর জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে শিশু ফারহান। জাতীয় চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ভিকটিমের স্বজনরা জানিয়েছে, ধারালো ছুরি দিয়ে খুচানোর কারনে ফারহানের ডান চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।

 

 

পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা মহিউদ্দীন বাদি হয়ে দেবহাটা থানায় একটি মামলা দায়ের (০৪/২৮)  করলে পুলিশ  নৃশংস ওই ঘটনায় জড়িত শিশু ফারহানের বড় মামি রানী খাতুন ও ছোট মামা আশিকুজ্জামান ইমনকে গ্রেফতার সহ ঘটনায় ব্যবহৃত চাকু এবং আসামীর রক্তমাখা জামাকাপড় উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত রানী খাতুন ও আশিকুজ্জামান ইমন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলোক জবানবন্দি দিয়েছে।

 

 

দেবহাটা থানার ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ওবায়দুল্লাহ মঙ্গলবার রাতে এক প্রেসনোটে জানান, শিশু ফারহানকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধারের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান ও দেবহাটা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জামিল আহমেদের নেতৃত্বে তদন্ত এবং সাড়াশি অভিযানে নামেন পুলিশ সদস্যরা। শুরুর দিকে ঘটনার পুরো দায় শিশুটির বড় মামি রানীর ওপর চাপিয়ে দেয় ভিকটিমের পরিবার। তাৎক্ষনিক রানী খাতুনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে নেয়া হলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরে রাতেই শিশুটির ছোট মামা আশিকুজ্জামান ইমনকেও গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে নেয়া হলে লোমহর্ষক গোটা ঘটনার রহস্যভেদ হয়।

 

 

ওসি ওবায়দুল্লাহ এসময় আরও বলেন, মা মারা যাওয়ার পর থেকে নানা বাড়িতেই থাকতো শিশু ফারহান। বড় মামি রানী খাতুনকে ডাকতো মা বলে। তার বড় মামা কাজের সুবাদে বছরের প্রায় অধিকাংশ সময়ই যশোরে থাকেন। এরই মধ্যে বড় মামি রানীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে ফারহানের ছোট মামা আশিকুজ্জামান ইমন। সোমবার দুপুরে বড় মামি রানী ও ছোট মামা ইমনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে ফারহান।

 

 

সেসময় বাড়িতে ছিলেননা শিশুটির নানা ও নানি। একপর্যায়ে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে মামি রানীর সহায়তায় ছোটমামা ইমন প্রথমে শিশু আলিফ ফারহানকে ঘরের ভিতরে ডেকে নিয়ে দুই হাত বেঁধে ফেলে। তারপর ইমন ধারালো চাকু দিয়ে নৃশংসভাবে শিশুটির দুই চোখ খুচিয়ে রক্তাক্ত করে দেয় এবং মুখমন্ডল, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান চাকু দিয়ে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করেন।

 

 

একপর্যায়ে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে গেলে সুযোগ বুঝে তাকে পার্শ্ববর্তী মরিচ্চাপ নদীর পাশ্ববর্তী একটি গর্তে ফেলে আসে আশিকুজ্জামান ইমন। বাড়িতে ফিরে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত চাকু এবং রানী খাতুনের রক্তমাখা সালোয়ার লুকিয়ে ফেলে ইমন। তাছাড়া ঘরের মেঝে থেকে রক্তের দাগও মুছে ফেলে তারা।

 

এর কিছুক্ষন পর কৌতুহল বশত ইমন ফের শিশুটিকে ফেলে আসা গর্তের কাছে যায় এবং কেউ তার ভাগ্নেকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে নাটকীয়ভাবে ডাক চিৎকার করে লোকজন জড়ো করে। পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে সাতক্ষীরায় হাসপাতালে নিয়ে যায়। শিশুটিকে হত্যাচেষ্টার পর তার ছোটমামা ইমন অত্যন্ত চতুরতার সাথে ভালো মানুষের অভিনয় করে আসছিল, যাতে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত হয় এবং পুরো ঘটনার দায় কেবলমাত্র বড় মামি রানী খাতুনের ঘাড়ে চাপে।

 

গ্রেফতারকৃত রানী ও ইমন মঙ্গলবার দুপুরে এভাবেই আদালতে স্বীকারোক্তি মুলোক জবান বন্দি দিয়ে গোটা লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা করেন এবং জবানবন্দী গ্রহন শেষে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।