মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুব আলম স্বপন এর বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা ও অর্থ আত্মসাৎ সহ বিস্তর অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের আটজন ইউপি সদস্য।
গত বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) এসব বিষয়ে মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত আবেদন করেছেন অভিযোগকারিরা। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মাহবুব আলম স্বপন ওই ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। লিখিত অভিযোগে ওই ইউনিয়ন পরিষদের মোট ১২ জন সদস্যের মধ্যে ৮ জন সদস্য স্বাক্ষর প্রদান করেন।
তাঁরা হলেনঃ- ইউপি সদস্য মো.মাসকুর হোসেন (১ নং ওয়ার্ড), মো.সুমন মৃধা (২ নং ওয়ার্ড), শ্রী মনিন্দ্র চন্দ্র হাওলাদার (৩ নং ওয়ার্ড), মো.ফোরকান মাতুব্বর (৭ নং ওয়ার্ড), মোঃ আউয়াল বিশ্বাস (৮ নং ওয়ার্ড), মো.সহিদ মৃধা (৯ নং ওয়ার্ড), এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোসা. নুপুর আক্তার (১,২,৩ নং ওয়ার্ড) ও মোসাঃ রেখা পারভীন (৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড)।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, ২০২১ সালে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের পর অদ্যবধি পর্যন্ত পরিষদের সদস্যের নিয়ে কোন সভা করেননি ওই চেয়ারম্যান। কিন্তু সদস্যদের (মেম্বার) ভুল বুঝাইয়া সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে নেন তিনি।
এখন পর্যন্ত গঠন করেনি প্যানেল চেয়ারম্যান। সরকার বরাদ্দকৃত কর্মসৃন প্রকল্পের টাকা নিজ নামে সিম ব্যবহার করে গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের রিলিফ টাকার বিনিময়ে নিজের পছন্দের লোকদের দিচ্ছেন তিনি।
পূর্ববর্তী চেয়ারম্যানের হোল্ডিং নাম্বার দেয়া সত্বেও পুনরায় ভুয়া হোল্ডিং নাম্বার ব্যবহার করে গ্রাহকদের কাছ থেকে ২শত টাকা করে আদায় করে আত্মসাৎ করেছেন তিনি। নিজ ভাইকে দিয়ে স্বাক্ষর ছাড়াই অবৈধভাবে ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্সের টাকা আদায় করছেন। জন্ম নিবন্ধনের নামে নিজের ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি টিউবওয়েল প্রদানে ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা করে আদায় করে আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীতে জনপ্রতি ১২০০ টাকা আদায় করে লক্ষাধীক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ সদস্যদের কোন সম্মানী ভাতা প্রদান করেন না। ইউনিয়ন পরিষদে এলজিএসপি সহ কোন খাতে কিরূপ বরাদ্দ তা কোন সদস্যদের জানান না।
এছাড়াও সদস্যদের কাছে সাদা কাগজে স্বাক্ষর চাইলে সদস্যরা স্বাক্ষর দিতে অস্বীকার করায় অকথ্য ভাষায় গালাগালিসহ দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম স্বপন এর বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে ইউনিয়ন পরিষদকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার সুযোগ প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছেন ওই অভিযোগকারি সদস্যগন।
এছাড়াও ওই ইউনিয়নের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, চেয়ারম্যানের ভাই ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে,এবং মাদক ব্যবসায়ীরা তাকে ম্যানেজ করেই ওই ইউনিয়নে তৎপরতা চালাচ্ছে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মাহবুব আলম স্বপন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। শুধুমাত্র রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ওরা এই কাজটি করছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌস বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সকল বিষয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।