বাংলাদেশ ০১:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক যুবকের লাশ প্রভাবের পরোয়া করে না ঠাকুরগাঁওয়ের ভোটাররা ইসলাম অবমাননায় স্বপ্নীলের শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে শোক সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত  অতিরিক্ত খাজনা আদায় ও সিন্ডিকেটে কমছে ধানের দাম  বিশ্ব পরিবেশ দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ফাইনালে রাবি রাবিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী ডিভিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি ক্যাম্প ফের খাবারের দাম বৃদ্ধি, রাবি প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দোকানিদের রাবিতে গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফির উপর কর্মশালা অনুষ্ঠিত ঈদুল আজহার আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইউপি সদস্য রিপন হত্যা মামলার পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিরোধ-কোন্দলে লড়াই হবে ত্রিমুখী ফুলবাড়ী খাদ্য গুদামে ইরি বোরো ধান ও চাউল সংগ্রহের শুভ উদ্বোধন  বিপুল পরিমানে ফেন্সিডিল পাঁচারকালে ২জন কুখ্যাত মাদক কারবারী আটক। বিআরটিসি লাইসেন্স ও সরকারি অনুমোদন ব্যতীত জিপিএস ট্র্যাকার, ট্রেসলক জিপিএস ট্র্যাকার, মোটোলক রিমোর্ট ও ফ্রিকোয়েন্সী যন্ত্র সামগ্রীসহ ০৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

সংঘবদ্ধ মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ০২ সদস্য গ্রেফতার, ভূয়া সিল, পাসপোর্ট, জাল ভিসা ও টিকেট তৈরির জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার উদ্ধার।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:২৫:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ অগাস্ট ২০২২
  • ১৬৭৯ বার পড়া হয়েছে

সংঘবদ্ধ মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ০২ সদস্য গ্রেফতার, ভূয়া সিল, পাসপোর্ট, জাল ভিসা ও টিকেট তৈরির জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার উদ্ধার।

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

র‌্যাবের অভিযানে রাজধানীর পল্টন এলাকা হতে সংঘবদ্ধ মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ০২ সদস্য গ্রেফতার, ভূয়া সিল, পাসপোর্ট, জাল ভিসা ও টিকেট তৈরির জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার উদ্ধার।

 

এলিট ফোর্স হিসেবে র‌্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। বর্তমান সময়ে এক শ্রেণীর সুযোগ সন্ধানী মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ফাঁদ, যেমন বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ জনগণের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ধরনের মানবপাচারকারী চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র‌্যাব সদা সচেষ্ট।

 

 

 

কতিপয় ভিকটিমের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ জানতে পারে যে, মতিঝিল এলাকায় একটি মানবপাচার ও প্রতারক চক্র মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানির প্রলোভন দেখিয়ে ভূয়া ভিসা ও টিকেট সরবরাহ করে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বেকার যুবক যুবতীদের নিকট হতে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে সর্বশান্ত করছে। সহজ সরল বিদেশ গমনে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা উক্ত ভূয়া ভিসা ও টিকেট বিমানবন্দরে প্রদর্শন করার পর ইমেগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের ভিসা ও টিকেট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর হতে ফিরিয়ে দিয়েছে।

 

 

এরকম কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল ১০ আগস্ট ২০২২ তারিখ ১৬.৩০ ঘটিকার সময় রাজধানীর পল্টন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মানবপাচার চক্রের মূলহোতাসহ ১। মোঃ জাবেদ হোসেন রকি (৩৩), পিতা-মোঃ খোকন, সাং-অশ্বদিয়া, থানা-সুধারাম, জেলা-নোয়াখালী এবং তার অন্যতম সহযোগী ২। মোঃ আবির @শুভ (২৭), পিতা-মোঃ বাকের, সাং-লালানগর, থানা-সুধারাম, জেলা-নোয়াখালীদ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের হেফাজত হতে সিপিইউ ০১ টি, পাসপোর্ট ০৫ টি, খালি স্ট্যাম্প ২০ টি, ট্রেনিং সার্টিফিকেট ১০ টি, ভূয়া ওমান কনস্যুলেটর ও দূতাবাসের সীল ০২ টি, মোবাইল ফোন ০১ টি, ভিজিটিং কার্ড ০১ বক্স, ভূয়া ভিসার ফটোকপি প্রায় শতাধিক, কোভিড-১৯ এর ভূয়া রিপোর্ট ৫০ টি এবং চেকের পাতা ০৩ টি উদ্ধার করা হয়।

 

 

প্রাথমিক অনুসন্ধান ও ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ধৃত আসামীরা সংঘবদ্ধ মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের সদস্য। ধৃত মোঃ জাবেদ হোসেন (৩৩) উক্ত চক্রের মূলহোতা এবং ধৃত অপর আসামী মোঃ আবির (২৭) তার সহযোগী। ধৃত আসামীর মাতা সেলিনা বেগম @ রোকেয়া উক্ত চক্রের সাথে জড়িত। সে ২০০৪ সাল থেকে ওমানে অবস্থান করছে। সে ওমানের একটি রিক্রুটিং এজেন্সিতে কর্মী হিসেবে কাজ করে।

 

 

 

ধৃত আসামীর মা ২০১৮ সাল হতে ওমানে অবস্থান করে উক্ত চক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবে উক্ত চক্রকে সহযোগিতা করে আসছে। তাদের জনশক্তি রপ্তানির কোন লাইসেন্স নেই। কিন্তু তারা দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রপ্তানির নামে অবৈধভাবে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে লোক প্রেরণ করে আসছে।

 

 

 

এছাড়াও উক্ত চক্র মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ বেতনে জনশক্তি প্রেরণের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বেকার যুবক যুবতিদের নিকট থেকে ০৩ হতে ০৪ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে ভূয়া ভিসা এবং ভূয়া টিকেট ভুক্তভোগীদের হাতে ধরিয়ে দেয়। ভুক্তভোগীরা উক্ত ভিসা এবং টিকেট নিয়ে বিমানবন্দরে গেলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের উক্ত ভিসা এবং টিকেট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর হতে ফিরিয়ে দেন।

 

 

 

 

এভাবে ২০১৮ সাল হতে উক্ত চক্র জনশক্তি রপ্তানির লাইসেন্স ছাড়া গত ০৪ বছরে অবৈধভাবে অর্ধশতাধিক নারীকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে প্রেরণ করে। যারা বিদেশ গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অন্যদিকে এই চক্র শতাধিক লোককে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রেরণের প্রলোভন দেখিয়ে জনপ্রতি ০৩ হতে ০৪ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে ভূয়া ভিসা এবং ভূয়া টিকেট সরবরাহ করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

 

 

 

উক্ত চক্রের মূলহোতা মোঃ জাবেদ হোসেন (৩৩) ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। ২০১১ সালে সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তার দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। জাবেদ এর পিতা দীর্ঘদিন বাবুর্চি হিসেবে দুবাই কাজ করে। বর্তমানে তার মতিঝিল এলাকায় একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর রয়েছে। ২০১২ সালে জাবেদ হোটেলের ওয়েটার ভিসায় দুবাই গিয়ে সেখানে ০৪ বছর অবস্থান করে। দেশে ফেরার পর ২০১৮ সাল হতে সে প্রতারণা এবং মানবপাচারকে তার পেশা হিসেবে বেছে নেয়। তার ট্রাভেল এজেন্সির কোন লাইসেন্স নেই।

 

 

 

 

কিন্তু সে জাবেদ ট্রাভেল এজেন্সি নামে তার অফিস পরিচালনা করে আসছে। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য প্রথমে সে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে নারী কর্মীদের মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে প্রেরণ করে। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জনের পর সে পুরুষ কর্মীদের বিদেশ প্রেরণের জন্য পাসপোর্ট ও টাকা সংগ্রহ করে প্রতারণামূলকভাবে জনপ্রতি ০৩ হতে ০৪ লক্ষ টাকা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।

 

 

 

তারপর সে তার অফিসের কম্পিউটার ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের ভূয়া ভিসা তৈরী করে এবং উক্ত ভিসায় উদ্ধারকৃত মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের নকল সিল ব্যবহার করে ভূয়া ভিসাটি আসল হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করে। অতপর ভূয়া ভিসা, নকল টিকেট ও নকল বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স ভিকটিমকে সরবরাহ করে।

 

 

 

ভুক্তভোগীরা উক্ত ভিসা এবং টিকেট নিয়ে বিমানবন্দরে গেলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের উক্ত ভিসা এবং টিকেট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর হতে ফিরিয়ে দিলে সে ভিকটিমদের পুনরায় নতুন ভিসা ইস্যু করার জন্য সময় প্রার্থনা করে। ভিকটিমদের কেউ কেউ তার কথায় আশ্বস্থ হয়ে পুনরায় নতুন ভিসা পাওয়ার অপেক্ষায় থাকে।

 

 

 

অন্যদিকে ভিকটিমদের মধ্যে কেউ টাকা ফেরত চাইলে সে ভিকটিমদের ব্যাংক চেক প্রদান করে। কিন্তু উক্ত চেক নগদায়ন করতে গেলে ভিকটিমরা জানতে পারেন তার একাউন্টে কোন টাকা নেই। এভাবে সে ভিকটিমদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। তার নামে মানবপাচার ও প্রতারনার দুইটি মামলা রয়েছে।

 

 

উক্ত চক্রের অন্যতম সহযোগী মোঃ আবির (২৭) ৭ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। সে ২০১৮ সালে এয়ারপোর্ট ক্লিনার হিসেবে ওমান গমন করে। ২০১৯ সালে দেশে ফিরে আসার পর সে তার খালাত ভাই ধৃত ১নং আসামী জাবেদ এর সাথে প্রতারণা এবং মানবপাচারকে তার পেশা হিসেবে বেছে নেয়। ধৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বীণা রানী দাস, পিপিএম (বার)
পুলিশ সুপার
স্টাফ অফিসার (মিডিয়া)
পক্ষে পরিচালক

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক যুবকের লাশ

সংঘবদ্ধ মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ০২ সদস্য গ্রেফতার, ভূয়া সিল, পাসপোর্ট, জাল ভিসা ও টিকেট তৈরির জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার উদ্ধার।

আপডেট সময় ০৫:২৫:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ অগাস্ট ২০২২

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

র‌্যাবের অভিযানে রাজধানীর পল্টন এলাকা হতে সংঘবদ্ধ মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ০২ সদস্য গ্রেফতার, ভূয়া সিল, পাসপোর্ট, জাল ভিসা ও টিকেট তৈরির জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার উদ্ধার।

 

এলিট ফোর্স হিসেবে র‌্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। বর্তমান সময়ে এক শ্রেণীর সুযোগ সন্ধানী মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ফাঁদ, যেমন বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ জনগণের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ধরনের মানবপাচারকারী চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র‌্যাব সদা সচেষ্ট।

 

 

 

কতিপয় ভিকটিমের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ জানতে পারে যে, মতিঝিল এলাকায় একটি মানবপাচার ও প্রতারক চক্র মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানির প্রলোভন দেখিয়ে ভূয়া ভিসা ও টিকেট সরবরাহ করে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বেকার যুবক যুবতীদের নিকট হতে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে সর্বশান্ত করছে। সহজ সরল বিদেশ গমনে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা উক্ত ভূয়া ভিসা ও টিকেট বিমানবন্দরে প্রদর্শন করার পর ইমেগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের ভিসা ও টিকেট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর হতে ফিরিয়ে দিয়েছে।

 

 

এরকম কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল ১০ আগস্ট ২০২২ তারিখ ১৬.৩০ ঘটিকার সময় রাজধানীর পল্টন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মানবপাচার চক্রের মূলহোতাসহ ১। মোঃ জাবেদ হোসেন রকি (৩৩), পিতা-মোঃ খোকন, সাং-অশ্বদিয়া, থানা-সুধারাম, জেলা-নোয়াখালী এবং তার অন্যতম সহযোগী ২। মোঃ আবির @শুভ (২৭), পিতা-মোঃ বাকের, সাং-লালানগর, থানা-সুধারাম, জেলা-নোয়াখালীদ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের হেফাজত হতে সিপিইউ ০১ টি, পাসপোর্ট ০৫ টি, খালি স্ট্যাম্প ২০ টি, ট্রেনিং সার্টিফিকেট ১০ টি, ভূয়া ওমান কনস্যুলেটর ও দূতাবাসের সীল ০২ টি, মোবাইল ফোন ০১ টি, ভিজিটিং কার্ড ০১ বক্স, ভূয়া ভিসার ফটোকপি প্রায় শতাধিক, কোভিড-১৯ এর ভূয়া রিপোর্ট ৫০ টি এবং চেকের পাতা ০৩ টি উদ্ধার করা হয়।

 

 

প্রাথমিক অনুসন্ধান ও ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ধৃত আসামীরা সংঘবদ্ধ মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের সদস্য। ধৃত মোঃ জাবেদ হোসেন (৩৩) উক্ত চক্রের মূলহোতা এবং ধৃত অপর আসামী মোঃ আবির (২৭) তার সহযোগী। ধৃত আসামীর মাতা সেলিনা বেগম @ রোকেয়া উক্ত চক্রের সাথে জড়িত। সে ২০০৪ সাল থেকে ওমানে অবস্থান করছে। সে ওমানের একটি রিক্রুটিং এজেন্সিতে কর্মী হিসেবে কাজ করে।

 

 

 

ধৃত আসামীর মা ২০১৮ সাল হতে ওমানে অবস্থান করে উক্ত চক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবে উক্ত চক্রকে সহযোগিতা করে আসছে। তাদের জনশক্তি রপ্তানির কোন লাইসেন্স নেই। কিন্তু তারা দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রপ্তানির নামে অবৈধভাবে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে লোক প্রেরণ করে আসছে।

 

 

 

এছাড়াও উক্ত চক্র মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ বেতনে জনশক্তি প্রেরণের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বেকার যুবক যুবতিদের নিকট থেকে ০৩ হতে ০৪ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে ভূয়া ভিসা এবং ভূয়া টিকেট ভুক্তভোগীদের হাতে ধরিয়ে দেয়। ভুক্তভোগীরা উক্ত ভিসা এবং টিকেট নিয়ে বিমানবন্দরে গেলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের উক্ত ভিসা এবং টিকেট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর হতে ফিরিয়ে দেন।

 

 

 

 

এভাবে ২০১৮ সাল হতে উক্ত চক্র জনশক্তি রপ্তানির লাইসেন্স ছাড়া গত ০৪ বছরে অবৈধভাবে অর্ধশতাধিক নারীকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে প্রেরণ করে। যারা বিদেশ গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অন্যদিকে এই চক্র শতাধিক লোককে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রেরণের প্রলোভন দেখিয়ে জনপ্রতি ০৩ হতে ০৪ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে ভূয়া ভিসা এবং ভূয়া টিকেট সরবরাহ করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

 

 

 

উক্ত চক্রের মূলহোতা মোঃ জাবেদ হোসেন (৩৩) ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। ২০১১ সালে সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তার দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। জাবেদ এর পিতা দীর্ঘদিন বাবুর্চি হিসেবে দুবাই কাজ করে। বর্তমানে তার মতিঝিল এলাকায় একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর রয়েছে। ২০১২ সালে জাবেদ হোটেলের ওয়েটার ভিসায় দুবাই গিয়ে সেখানে ০৪ বছর অবস্থান করে। দেশে ফেরার পর ২০১৮ সাল হতে সে প্রতারণা এবং মানবপাচারকে তার পেশা হিসেবে বেছে নেয়। তার ট্রাভেল এজেন্সির কোন লাইসেন্স নেই।

 

 

 

 

কিন্তু সে জাবেদ ট্রাভেল এজেন্সি নামে তার অফিস পরিচালনা করে আসছে। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য প্রথমে সে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে নারী কর্মীদের মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে প্রেরণ করে। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জনের পর সে পুরুষ কর্মীদের বিদেশ প্রেরণের জন্য পাসপোর্ট ও টাকা সংগ্রহ করে প্রতারণামূলকভাবে জনপ্রতি ০৩ হতে ০৪ লক্ষ টাকা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।

 

 

 

তারপর সে তার অফিসের কম্পিউটার ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের ভূয়া ভিসা তৈরী করে এবং উক্ত ভিসায় উদ্ধারকৃত মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের নকল সিল ব্যবহার করে ভূয়া ভিসাটি আসল হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করে। অতপর ভূয়া ভিসা, নকল টিকেট ও নকল বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স ভিকটিমকে সরবরাহ করে।

 

 

 

ভুক্তভোগীরা উক্ত ভিসা এবং টিকেট নিয়ে বিমানবন্দরে গেলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের উক্ত ভিসা এবং টিকেট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর হতে ফিরিয়ে দিলে সে ভিকটিমদের পুনরায় নতুন ভিসা ইস্যু করার জন্য সময় প্রার্থনা করে। ভিকটিমদের কেউ কেউ তার কথায় আশ্বস্থ হয়ে পুনরায় নতুন ভিসা পাওয়ার অপেক্ষায় থাকে।

 

 

 

অন্যদিকে ভিকটিমদের মধ্যে কেউ টাকা ফেরত চাইলে সে ভিকটিমদের ব্যাংক চেক প্রদান করে। কিন্তু উক্ত চেক নগদায়ন করতে গেলে ভিকটিমরা জানতে পারেন তার একাউন্টে কোন টাকা নেই। এভাবে সে ভিকটিমদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। তার নামে মানবপাচার ও প্রতারনার দুইটি মামলা রয়েছে।

 

 

উক্ত চক্রের অন্যতম সহযোগী মোঃ আবির (২৭) ৭ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। সে ২০১৮ সালে এয়ারপোর্ট ক্লিনার হিসেবে ওমান গমন করে। ২০১৯ সালে দেশে ফিরে আসার পর সে তার খালাত ভাই ধৃত ১নং আসামী জাবেদ এর সাথে প্রতারণা এবং মানবপাচারকে তার পেশা হিসেবে বেছে নেয়। ধৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বীণা রানী দাস, পিপিএম (বার)
পুলিশ সুপার
স্টাফ অফিসার (মিডিয়া)
পক্ষে পরিচালক