স্টাফ রিপোর্টার : বিয়ের ৪ মাস পরেই শাহিনা নামে এক গৃহবধূ বিদেশ ফেরত স্বামীর গচ্ছিত রাখা নগত অর্থসহ প্রায় ৪ লক্ষাধীক টাকার মালামাল নিয়ে ঐ গৃবধুর স্বামীর আপন বিয়াই আল-আমিন (৩০) এর সহিত পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ঐ ভুক্তভোগী স্বামী ন্যার্য বিচারসহ স্ত্রীকে ফিরে পেতে ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭নং আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার নথি ও ভুক্তভোগীর ভাষ্য মতে জানা যায়, গত ২০২১ সালের ২৯ শে আগস্ট জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ইচাখালি গ্রামের মো: সামছেল শেখ এর পুত্র বিদেশ ফেরত মো: তুহিন শেখ (২৮) এর সহিত একই উপজেলার সেলাহাটি গ্রামের শাহজাহান শেখ এর কণ্যা শাহিনা (১৯) এর সহিত উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তবে বিবাহের পরই স্ত্রী শাহিনা বেগম তারই দেবর অর্থ্যাৎ তুহিন শেখ এর আপন ছোট ভাইয়ের সাথে পরকিয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পরে।
এরই ধারাবাহিকতায় ঐ দুজনকে বেশ কয়েকবার আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়ার পর প্রত্যেকবারই শাহিনার পিতাকে বিষয়টি জানানো হয়। শাহিনার পিতা ও তাদের এলাকার স্থানীয় কয়েকজন কে সাথে নিয়ে তুহিনের বাড়িতে যায় এবং ঘরোয়া সালিশের মাধ্যমে এমন কর্মকান্ড আর হবেনা মর্মে তুহিনের কাছে প্রত্যেকবারই অঙ্গিকার করেন শাহজাহান শেখ।
একই সাথে শাহজাহান এর দেওয়া এমন মিথ্যা আশ^াস সরল মনে বিশ^াস করে তুহিন পুনরায় শাহিনার সাথে ঘরসংসার করার চেষ্টা করে। তবে এবার শাহিনার কুদৃষ্টি পরে তুহিনেরই বিয়াই গোপালগঞ্জ জেলার কোটালী পাড়া উপজেলার অরোজ মোল্লার পুত্র আল আমিন (৩০) এর দিকে। শুরু হয় আল আমিন ও শাহিনার অবৈধ প্রেম কাহিনী। তুহিনের বিয়াই হওয়ার সুবাদে আল-আমিন প্রায়ই ওদের বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে এবং তারা পরকিয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। একপর্যায়ে আল আমিন ও শাহিনার অবৈধ মেলামেশার বিষয়টি তুহিন ও তার পরিবারের দৃষ্টিগোচর হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় তুহিন তার বিয়াই আল আমিনকে তাদের বাড়ি আসতে নিষেধ করলে আল আমিন ও শাহিনা দুজনই ক্ষিপ্ত হয়। তবে সেই মুহুর্তে আলআমিন ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও ২০২২ সালের ১২ ই জানুয়ারী পুনরায় আলআমিন তুহিনের বাড়িতে হাজির হয়। আলআমিন আতœীয় হওয়ায় তাৎক্ষনিক ভাবে তাকে কিছু না বলে নিজ কর্মে বাড়ি থেকে চলে যায় তুহিন।
এই সুযোগে আলআমিন শাহিনা কে ফুসলিয়ে শাহিনার নিকট তুহিনের গচ্ছিত রাখার নগত ১লক্ষ টাকা, দুই ভড়ি ওজনের দুইটি স্বর্ণের রুলি, এক ভড়ি ওজনের একটি সোনার চেইন, ৪ আনা ওজনের একটি সোনার আংটি, ৮ আনা ওজনের এক জোড়া কানের দুল ও পোশাক পরিচ্ছদসহ প্রায় ৪ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
পরে তুহিন বাড়িতে এসে ঐ দুজনকে না পেয়ে বিভিন্ন যায়গায় তল্লাসী করতে করতে একপর্যায়ে তার শ^সুর বাড়ির এলাকার লোকজন মারফত জানতে পারে, আলআমিন ও শাহিনা একত্রে সংসার করার আশায় পালিয়ে গেছে। তুহিন অভিযোগে জানায় স্ত্রীকে ফিরে পাবার আশায় শাহিনার পিতাকে বার বার অবগত করলেও তিনি কোন কর্ণপাত করেননি।
পরে বিদেশে থেকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলিয়ে আমার সারা জীবনের কষ্টার্জিত সঞ্চয় ও আমার স্ত্রীকে ফিরে পাবার আশায় ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭নং আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। তবে এ মামলা দায়ের এর কিছুদিন পরই শাহিনা তার বাবার বাড়ি ফিরে আসে। বর্তমানে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পুর্বক কষ্টার্জিত সঞ্চয় ও স্ত্রী শাহিনাকে ফিরে পাবার আশায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা কাছে তুহিন ও তার পরিবারসহ এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে জানার জন্য শাহিনার মুঠোফোন ০১৭৪৩৫১৫১৮৪ নম্বরে যোগাযোগ করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। আনিত অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত আলআমিন এর মোবাইল ০১৯৮৩২৯১০১৪ নম্বরে বিষয়টি জানার জন্য ফোন দিলে উক্ত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে শাহিনার মা অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে জানান, তুহিনের ভাই বা আলআমিন এর সাথে আমার মেয়ে শাহিনার কোন অবৈধ সম্পর্ক ছিলোনা।
শুধু মাত্র একদিন ভুল করে আমার মেয়েকে একটি চুমু দিয়েছিলো। এ বিষয়ে শাহিনার পিতা শাহজাহান শেখ সংবাদটি প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে তুহিনই শাহিনাকে তাদের বাড়িতে রেখে আসছে বলে তুহিনের আনিত অভিযোগগুলি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।