মোস্তফা মিয়া পীরগঞ্জ রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বর্তমান ১৪ নং চতরা ইউনিয়নের বসোবাস রতো, সে সে জনগণ ও প্রতিষ্ঠান সেবায় থাকতে ভালোবাসেন। সে যেগুলো চেয়েছেন সেগুলো পেয়েছেন। জজ সাহেবের বাবা-মাও যেটা চেয়েছেন সেটা হয়েছে।
তাঁর সন্তান অনেক বড় হবে।হ্যাঁ,মাতৃগর্ভে থাকতেই বাবা-মায়ের সাধ,ছেলে হলে নাম হবে “হাকিম”–ছেলে হবে ‘জজ’। হ্যাঁ,আব্দুল হাকিম মন্ডল ”তারা জজ”- তাঁর কথাই বলছি। বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণের প্রকৃষ্ট উদহারন তিনি। প্রত্যন্ত এলাকার এক আলোকিত মানুষ।
জন্ম ৩০ এপ্রিল ১৯৫৩। পিতা. মরহুম আলহাজ্ব আহসান উল্লাহ্ মন্ডল (সাবেক চেয়ারম্যান ১৫ নং কাবিলপুর ইউনিয়ন) মাতা.মরহুমা রহিমা বেগম। মেধাবী আ.হাকিম মন্ডল গাংজোয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে পড়াশোনা শেষ করে, ১৯৬৮ সালে চতরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ,১৯৭০ সালে কারমাইকেল কলেজ, রংপুর থেকে এইচএসসি , ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স, ১৯৭৬ সালে এমএ ও ১৯৭৭ সালে এলএলবি ডিগ্রি কৃতিত্বের সাথে অর্জন করেন।
চাকুরী জীবন শুরু করেন ১৯৮০ সালের প্রথমার্ধে রুপালী ব্যাংকের অফিসার হিসেবে, পরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সি.অফিসার। কিন্তু তাঁর অদম্য ইচ্ছা থেমে থাকেনি। ইচ্ছে যে ‘জজ’ হবার? তাই ১৯৮১ সালে বিসিএস-এ অংশগ্রহন করেন এবং উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী জজ হিসেবে রাজশাহীতে যোগদান করেন।
পরবর্তীতে মুন্সেফ,মুন্সেফ ম্যাজিট্রেট ও ১৯৮৫ সালে সহকারী সচিব হিসেবে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন। অতঃপর ১৯৮৯ সালে পদোন্নতি লাভ করে বগুড়ায় সাবজজ, ১৯৯১ সালে হাইকোর্টের ডিপুটি রেজিস্ট্রার, ১৯৯২ সালে পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ,১৯৯৯ সালে পদোন্নতি পেয়ে জেলা জজ বিভাগীয় নির্বাচন ট্রাইবুনাল রাজশাহী, ২০০১ সালে নরসিংদির জেলা জজ, ২০০২ সালে রাজশাহীতে বিভাগীয় স্পেশাল জজ,২০০৪ সালে নওগাঁয় জেলা ও দায়রা জজ, ২০০৮ সালে বগুড়ায় জেলা ও দায়রা জজ , ২০০৯ সালে চেয়ারম্যান শ্রম আদালত, চট্রগ্রাম ও ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত জামালপুরের জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে চাকুরী জীবন অতিবাহিত করেন।
আ.হাকিম মন্ডল বর্ণাঢ্য চাকুরী জীবনে একজন সৎ,বিচক্ষণ, একনিষ্ঠ ও ন্যায় বিচারক হিসেবে সর্বজন সমাদৃত। এই শিক্ষানুরাগী সমাজসেবক মানুষটি – মানুষের মাঝে যুগযুগ ধরে বেঁচে থাকবার প্রয়াসে ১৯৯২ সালে লালদিঘী গার্লস একাডেমি, ১৯৯৪ সালে চতরা ডিগ্রি কলেজ, ১৯৯৯ সালে চতরা মহিলা কলেজ ও একই সালে নিজ জমিতে হলদিবাড়ি মডেল হাইস্কুল স্থানীয় বিদ্যুৎসাহী ব্যক্তিগনকে সাথে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন।
এছাড়াও ১৯৯৪ সালে উপজেলা সদরের বাহিরে চতরা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র, হলদিবাড়ি ডাকঘর, হলদিবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিক,হলদিবাড়ি কবরস্থান, হলদিবাড়ি জামে মসজিদ ও হলদিবাড়ি ঈদগাহ্ ময়দান তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফসল।
সামাজিক দায়বদ্ধ মানুষ হিসেবে এলাকার প্রায় ৫৫ জন গরীব,অসহায় বেকারের সরকারি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি আত্মীয় -স্বজন বন্ধু-বান্ধব ও গরীব-দুঃখীদের বিবাহের ব্যবস্থাপনায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন ও করে যাচ্ছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। ১৯৭৬ সালে বেগম আকতার জাহানের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।আকতার জাহান বর্তমানে এডভোকেট রংপুর জজ কোর্ট (নন প্রাক্টটিসিং)।এই রত্নগর্ভা মাতা, তিন কন্যা সন্তানের জননী।প্রথম মেয়ে শারমিন জাহান শিমুল -জেলা জজ,দ্বিতীয় মেয়ে ডা.জান্নাতুন নাঈম (এফসিপিএস ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও তৃতীয় মেয়ে নওরিন আহসান ঐশী -অফিসার, সাউথ ইষ্ট ব্যাংক।
আব্দুল হাকিম মন্ডল সর্বক্ষেত্রেই সফল মানুষ। একাধারে ন্যায় বিচারক, শিক্ষানুরাগী, দানশীল, উদারচিন্তার সামাজিক দায়বদ্ধ মানুষ ও সফল অভিভাবক বটে। তিনি বর্তমানে ১৪ নং চতরা ইউনিয়নের চতরাহাটে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তাঁর বাড়ির দরজা সবসময়ই সবার জন্য অবারিত।
আসুন– আমরা সবাই মিলে এই সর্বগুণে গুণান্বিত সাদামনের মানুষটির জন্য দোওয়া করি,সৃষ্টিকর্তা যেন তাকে যুগযুগ ধরে সুস্থতার সাথে মানুষের মাঝে বেঁচে রাখেন।