কক্সবাজারের পেকুয়ার বারবাকিয়া ছনখোলার ঝুম এলাকায় দুর্ধর্ষ ডাকাত সরদার ও ৩৪ মামলার আসামি জাফর আলমের (৬৫) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় মগনামা, টইটং, শীলখালী ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের এবং চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ছাত্রসহ ১৪ জন নিরহ লোককে দায়েরকৃত মামলায় আসামি করা হয়। নিরহ লোকদের আসাসী করার খবর চাউর হলে সচেতনমহলসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠে।
গত বুধবার (২৭ জুলাই) নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় একাধিক নিরহ লোকদের আসামি করা হয়েছে । মামলার ২০ আসামিদের মধ্যে নিরহ আসামিরা হলেন, উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের পাহাড়িয়াখালী এলাকার আবু জাফরের ছেলে আলমগীর, মৃত নূর আহমদের ছেলে আবু জাফর, মৃত আহমদ হোছনের ছেলে নাছির, গিয়াস উদ্দিন, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আনছার উদ্দিন, মৃত রহিমদাদের ছেলে আবু মূসা ও আবু জাফরের ছেলে আশফাক।
এছাড়াও বছর-দেড়েক আগে নেজাম হত্যার স্বাক্ষীকেও এ মামলায় আসামী করা হয়েছে। এছাড়া এজাহারনামীয় ২০ আসামির মধ্যে মগনামার ৫ জন, শীলখালীর ১ জন ও টইটং ইউনিয়নের ৩ জন।
আসামী করা হয়েছে বিগত ২ বছর আগে পরপর ২ বার স্ট্রোক করে পঙ্গুত্ববরণকারী মগনামা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য খোরশেদ মেম্বার। অথচ নিরহ লোকগুলো ঈদুল আযহার পরদিন থেকে ব্যবসায়িক কাজে তাদের চট্রগ্রামের বাসায় অবস্থান করছেন। যা তাদের কাজকর্মের সি সি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে নিশ্চিত হওয়া যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ডাকাত জাফরের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার পরপরই স্থানীয় কয়েক প্রভাবশালীর পরামর্শে বাদী মনোয়ারা ও থানা প্রশাসনকে প্রভাবিত করে এ মামলাটি রুজু হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, প্রভাবশালী মহল ডাকাত জাফরের স্ত্রী মনোয়ারাকে প্রভাবিত করে বারবাকিয়া, মগনামা, শীলখালী ও টইটং ইউনিয়নের লোককে মামলায় আসামী করা হয়েছে শুধুমাত্র মামলা বাণিজ্য করার জন্য।
বর্তমান ওসি মোহাম্মদ ফরহাদ আলী দায়িত্ব মানুষ আশা করছিল পেকুয়ায় আগের ওসির মত পেকুয়া শান্ত ও নিরাপদ রাখবে। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই কয়েকটি রেকর্ডকৃত মামলার আাসামী হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েন সচেতন মহল।
মামলায় মিথ্যাভাবে আসামী হওয়া গিয়াস উদ্দিন জানান, স্বপরিবারে আমি চট্রগ্রামে থাকি। ঈদুল আযহার ২ দিন পর আমি চট্টগ্রাম চলে এসেছি। গত ২৫ জুলাই ডাকাত জাফরের মৃত্যু নিয়ে মামলায় আমিসহ পরিবারের সদস্য আলমগীর ও আনছারসহ বেশ কয়েকজন লোককে মিথ্যাভাবে আসামি করা হয়েছে। আমি জানি না পেকুয়া থানার ওসি মহোদয়ের দায়িত্বটা কি? এর বিচার আমি পেকুয়াবাসী ও মহান আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মোঃ ফরহাদ আলী বলেন, বাদীর দেয়া এজাহার অনুযায়ী মামলা রুজু হয়েছে। যদি কেউ নিরপরাধ হয়ে থাকে তা তদন্তে প্রমাণ হলে তাদের বাদ দেয়া হবে। কোন নিরহ লোক হয়রানি হবে না।