বাংলাদেশ ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
এপেক্স শো-রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি লাইব্রেরিয়ান রফিকুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলার আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। প্রচণ্ড তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন: পথচারীদের সহায়তায় এগিয়ে আসছে তরুণ ঐক্য ব্লাড ডোনার ও স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন রাবিতে প্রথমবারের মতো হাসান আজিজুল হক সাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠিত রাবিতে নেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র: উদ্বেগ প্রকাশ করে সংযুক্তের দাবি রাজশাহী নগরীর কেদুরমোড় এলাকার মাদক কারবারী তোসলি গ্রেফতার গণধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত প্রধান আসামী মোক্তার গ্রেফতার। পিরোজপুর জেলা সরকারি কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের নতুন কমিটির পরিচিতি সভা প্রচণ্ড গরমের পর টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী‌তে স্বস্তির বৃষ্টি। কালকিনিতে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় আজ শুভ উদ্বোধন হলো শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। পাথরঘাটায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাইবার মামলা প্রতিবাদে মানববন্ধন ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাঈল কর্তৃক বর্বর গনহত্যার প্রতিবাদে সিলেট মহানগর শিবিরের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত। মুলাদী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার তালুকদারের উড়োজাহান প্রতিকের সমর্থনে গনসংযোগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ- সভাপতি হলেন কোরবান শেখ

বাগেরহাটের অযোধ্যা মঠের ইতিহাস ঐতিহ্য 

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৭:৫৬:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জুলাই ২০২২
  • ১৮২৮ বার পড়া হয়েছে

বাগেরহাটের অযোধ্যা মঠের ইতিহাস ঐতিহ্য 

উজ্জ্বল কুমার দাস (প্রতিনিধি): অযোধ্যা মঠ ঘুরে কোদলা মঠ বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক অবকাঠামো। বাগেরহাট জেলা শহর থেকে আনুমানিক ১০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে পুরাতন রূপসা-বাগেরহাট সড়কের যাত্রাপুর বাজার হতে প্রায় ৩ কিলোমিটার ভেতরে বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের অযোধ্যা গ্রামে প্রাচীন ভৈরব নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত। আর বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় ১০ কি.মি. উত্তরে অবস্থিত।
১৬শ শতকের উড়িষ্যা স্থাপত্যের আদলে এই প্রত্নতাত্ত্বিক অবকাঠামোটি আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে কিংবা সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে তৈরি করা হয়েছিলো। এ মঠের নাম কোদলা মঠ হলেও স্থানীয়ভাবে অযোধ্যা মঠ নামে বেশি পরিচিত। বই পুস্তক ও বিভিন্ন লেখা প্রকাশনায় অযোধ্যার মঠ বা কোদলার মঠ দুটি নামই দেখা যায়। প্রায় সম্পূর্ণ মঠটিই একসময়ে পোড়ামাটির ফলকে আচ্ছাদিত ছিল। কেউ কেউ এটাকে প্রাচীন হিন্দু মন্দির হিসাবেও মনে করে থাকেন। এই প্রত্নতাত্ত্বিক অবকাঠামোটি ক্রমাগত সৌন্দর্য হারাতে বসলেও এখনো অযোধ্যা বা কোদলা মঠের বিশেষ আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এর বাইরের অপূর্ব কারুকাজ সমৃদ্ধ অলঙ্করণ।
বহুকাল আগে মঠের দক্ষিণ কার্নিসের নিচে প্রায় অদৃশ্যমান দুই লাইনের একটি ইটে খোদাই করা লিপি পাওয়া যায়।সে সময় সংক্ষিপ্ত ও খন্ডলিপিটির সঠিক অর্থ নিরুপন করা না গেলেও সে লিপি অনুযায়ী ধারণা করা হয় সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে দেবতার অনুগ্রহ লাভের আশায় এ মঠটি একজন ব্রাহ্মণ (শর্মনা) কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। মঠের নির্মাণ নিয়ে যে সকল তথ্য জানা যায় এবং সবচেয়ে বেশি স্বীকৃত বারো ভুঁইয়ার অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্যের উদ্যেগে তার গুরু (সভাপন্ডিত) অবিলম্ব সরস্বতীর স্মতিস্তম্ভ হিসাবে মঠটি নির্মান করা হয়।
রাজা প্রতাপাদ্যিতের শাসনমাল থেকে জানা যায়, সে সময় সমগ্র বাগেরহাট প্রতাপাদিত্যের শাসনাধীন ছিল। বিশেষ করে প্রতাপাদিত্যের কাকা বসন্ত রায়ের মৃত্যুর (প্রতাপাদিত্য তার কাকাকে হত্যা করে) বলেশ্বর নদী পর্যন্ত শাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। প্রতাপাদিত্য কাকা, জামাইকে হত্যা চেষ্টা করার স্বত্বেও বহু পন্ডিতকে বৃত্তি দিতেন। সভাপন্ডিতদের মধ্যে অন্যতম প্রতাপাদিত্যর বন্ধুকবি অবিলম্ভ সরস্বতী। তিনি মুখে মুখে দ্রুত কবিতা রচনা করতে পারতেন বলে তার নাম অবিলম্ব সরস্বতী হয়েছিল।
বর্গাকার চতুস্কোণ বিশিষ্ট ভিতের উপর নির্মিত হয়েছে অযোধ্যা বা কোদলার মঠটি।এর উচ্চতা আনুমানিক ১৮.২৯ মিটার। প্রাচীরগুলি চিকন ইটের তৈরি, পুরুত্ব ৩.১৭ মিটার। ভেতরের প্রত্যেক দেয়াল বর্গাকার, দৈর্ঘ্য ২.৬১ মিটার। দেয়ালের ইট লাল পালিশ করা। অযোধ্যা বা কোদলার মঠের প্রবেশ পথ ৩টি। পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণে এ প্রবেশ পথগুলি। ধারণা করা হয় দক্ষিণ দিকের পথটি মূল প্রবেশ পথ। দক্ষিণ দিকের প্রবেশ পথের উপরে আদি বাংলায় মঠটির সম্পর্কে খোদাই করা হয়েছিল।তাছাড়া মঠের একেবারে উপরিভাগের কিছু অংশ ভেঙ্গে পরেছে বলে ধারনা করা হয়।
উড়িষ্যা অঞ্চলে খ্রীষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত যে ‘রেখা’ নমুনার মন্দির নির্মাণ পদ্ধতি দেখা যায় তার প্রভাব এ মঠে আছে বলে ধারণা করা হয়। হয়তো অযোধ্যার মঠ বা কোদলার মঠ কোন দেব মন্দির নয়, সম্ভবত মৃত: মহাত্মার সমাধি স্তম্ভ হিসাবে অনুমান করা হয়। মঠের বাইরের দিকের প্রত্যেক পার্শ্ব দেয়াল বহুভূজ এবং পাঁচটি করে কুলুঙ্গি রয়েছে। বাইরের দিকের সম্মুখ ভাগের প্রত্যেক অংশে ছয়টি সমতল এবং এগারোটি কুলুঙ্গি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে বহুভূজ আকৃতির এই পাঁচটি কুলুঙ্গি।
বাইরের দেয়ালের ডিজাইনে নিচ থেকে উপরের দিকে ক্রমান্বয়ে চক্রাকারে বলয় তৈরি করে উঁচুতে সরল অনুভূমিক রেখা সৃষ্টি করে উঠে গিয়েছে। কোদলা মঠের বহির্ভাগের এ অলংকরণই মন্দিরের প্রধান আকর্ষণীয় স্থান। পিরামিডের অনুরূপ উঁচু স্থাপত্যিক গঠনই একে শিখর স্টাইলের সঙ্গে অঙ্গীভূত করেছে। মঠের ভেতরের অংশে ১২/১৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা গুম্বুজ ফাঁকা তলদেশর আকারে উপরে উঠে গিয়ে শেষ হয়েছে। অনেকে ধারণা করেন এর উপরেও মঠের অভ্যন্তরে শূন্য/ফাপা আছে।
সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রাচীন এই স্থাপনা। মঠের উপরিভাগের অনেকটা জায়গা জুড়ে বেড়ে উঠেছে গাছ-গাছালি। মঠের উপরি ভাগের বাহিরের ছোট অসংখ্য কুঠরীতে বাসা বেঁধেছে শালিক সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। স্থাপনা প্রাঙ্গনে বিচরণ করে গরু-ছাগল।প্রবেশ পথ নেই সুরক্ষিত। এ অবস্থায় দ্রুত প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে সংস্কার করে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ও সচেতন মহল।
যদিও প্রবেশ পথে পুরাতন একটি সাইনবোর্ডে লেখা আছে, কোন ব্যক্তি এই পুরাকীর্তির কোন রকম ধংশ বা অনিষ্ট সাধন করলে বা এর কোন বিকৃতি বা অংগচ্ছেদ ঘটালে বা এর কোন অংশের উপর কিছু লিখলে বা খোদাই করলে বা কোন চিহ্ন বা দাগকাটলে ১৯৬৮ সালের ১৪ নং পুরাকীর্তি আইনের ১৯ ধারার অধিনে তিনি সর্বাধিক ১ বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দন্ডনীয় হবেন কিন্তু আইন যথাযোগ্য বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ বা নজির চোখে পরেনি।
যদি এমন ভাবে বাংলাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ অযত্নে আর অবহেলার পরে থাকে।তবে অচিরেই হারিয়ে যাবে ইতিহাস ঐতিহ্যের নিদর্শন গুলি। যা কিনা সঠিক রক্ষনা-বেক্ষনের মাধ্যমে সামান্য তদারকি করলে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশও পরিচিত লাভ করতে পারে। হতে পারে পর্যটন শিল্পের এক অপার সম্ভাবনা ময় খাত। আয় হতে পারে কটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা।
আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

এপেক্স শো-রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি

বাগেরহাটের অযোধ্যা মঠের ইতিহাস ঐতিহ্য 

আপডেট সময় ০৭:৫৬:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জুলাই ২০২২
উজ্জ্বল কুমার দাস (প্রতিনিধি): অযোধ্যা মঠ ঘুরে কোদলা মঠ বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক অবকাঠামো। বাগেরহাট জেলা শহর থেকে আনুমানিক ১০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে পুরাতন রূপসা-বাগেরহাট সড়কের যাত্রাপুর বাজার হতে প্রায় ৩ কিলোমিটার ভেতরে বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের অযোধ্যা গ্রামে প্রাচীন ভৈরব নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত। আর বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় ১০ কি.মি. উত্তরে অবস্থিত।
১৬শ শতকের উড়িষ্যা স্থাপত্যের আদলে এই প্রত্নতাত্ত্বিক অবকাঠামোটি আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে কিংবা সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে তৈরি করা হয়েছিলো। এ মঠের নাম কোদলা মঠ হলেও স্থানীয়ভাবে অযোধ্যা মঠ নামে বেশি পরিচিত। বই পুস্তক ও বিভিন্ন লেখা প্রকাশনায় অযোধ্যার মঠ বা কোদলার মঠ দুটি নামই দেখা যায়। প্রায় সম্পূর্ণ মঠটিই একসময়ে পোড়ামাটির ফলকে আচ্ছাদিত ছিল। কেউ কেউ এটাকে প্রাচীন হিন্দু মন্দির হিসাবেও মনে করে থাকেন। এই প্রত্নতাত্ত্বিক অবকাঠামোটি ক্রমাগত সৌন্দর্য হারাতে বসলেও এখনো অযোধ্যা বা কোদলা মঠের বিশেষ আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এর বাইরের অপূর্ব কারুকাজ সমৃদ্ধ অলঙ্করণ।
বহুকাল আগে মঠের দক্ষিণ কার্নিসের নিচে প্রায় অদৃশ্যমান দুই লাইনের একটি ইটে খোদাই করা লিপি পাওয়া যায়।সে সময় সংক্ষিপ্ত ও খন্ডলিপিটির সঠিক অর্থ নিরুপন করা না গেলেও সে লিপি অনুযায়ী ধারণা করা হয় সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে দেবতার অনুগ্রহ লাভের আশায় এ মঠটি একজন ব্রাহ্মণ (শর্মনা) কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। মঠের নির্মাণ নিয়ে যে সকল তথ্য জানা যায় এবং সবচেয়ে বেশি স্বীকৃত বারো ভুঁইয়ার অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্যের উদ্যেগে তার গুরু (সভাপন্ডিত) অবিলম্ব সরস্বতীর স্মতিস্তম্ভ হিসাবে মঠটি নির্মান করা হয়।
রাজা প্রতাপাদ্যিতের শাসনমাল থেকে জানা যায়, সে সময় সমগ্র বাগেরহাট প্রতাপাদিত্যের শাসনাধীন ছিল। বিশেষ করে প্রতাপাদিত্যের কাকা বসন্ত রায়ের মৃত্যুর (প্রতাপাদিত্য তার কাকাকে হত্যা করে) বলেশ্বর নদী পর্যন্ত শাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। প্রতাপাদিত্য কাকা, জামাইকে হত্যা চেষ্টা করার স্বত্বেও বহু পন্ডিতকে বৃত্তি দিতেন। সভাপন্ডিতদের মধ্যে অন্যতম প্রতাপাদিত্যর বন্ধুকবি অবিলম্ভ সরস্বতী। তিনি মুখে মুখে দ্রুত কবিতা রচনা করতে পারতেন বলে তার নাম অবিলম্ব সরস্বতী হয়েছিল।
বর্গাকার চতুস্কোণ বিশিষ্ট ভিতের উপর নির্মিত হয়েছে অযোধ্যা বা কোদলার মঠটি।এর উচ্চতা আনুমানিক ১৮.২৯ মিটার। প্রাচীরগুলি চিকন ইটের তৈরি, পুরুত্ব ৩.১৭ মিটার। ভেতরের প্রত্যেক দেয়াল বর্গাকার, দৈর্ঘ্য ২.৬১ মিটার। দেয়ালের ইট লাল পালিশ করা। অযোধ্যা বা কোদলার মঠের প্রবেশ পথ ৩টি। পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণে এ প্রবেশ পথগুলি। ধারণা করা হয় দক্ষিণ দিকের পথটি মূল প্রবেশ পথ। দক্ষিণ দিকের প্রবেশ পথের উপরে আদি বাংলায় মঠটির সম্পর্কে খোদাই করা হয়েছিল।তাছাড়া মঠের একেবারে উপরিভাগের কিছু অংশ ভেঙ্গে পরেছে বলে ধারনা করা হয়।
উড়িষ্যা অঞ্চলে খ্রীষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত যে ‘রেখা’ নমুনার মন্দির নির্মাণ পদ্ধতি দেখা যায় তার প্রভাব এ মঠে আছে বলে ধারণা করা হয়। হয়তো অযোধ্যার মঠ বা কোদলার মঠ কোন দেব মন্দির নয়, সম্ভবত মৃত: মহাত্মার সমাধি স্তম্ভ হিসাবে অনুমান করা হয়। মঠের বাইরের দিকের প্রত্যেক পার্শ্ব দেয়াল বহুভূজ এবং পাঁচটি করে কুলুঙ্গি রয়েছে। বাইরের দিকের সম্মুখ ভাগের প্রত্যেক অংশে ছয়টি সমতল এবং এগারোটি কুলুঙ্গি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে বহুভূজ আকৃতির এই পাঁচটি কুলুঙ্গি।
বাইরের দেয়ালের ডিজাইনে নিচ থেকে উপরের দিকে ক্রমান্বয়ে চক্রাকারে বলয় তৈরি করে উঁচুতে সরল অনুভূমিক রেখা সৃষ্টি করে উঠে গিয়েছে। কোদলা মঠের বহির্ভাগের এ অলংকরণই মন্দিরের প্রধান আকর্ষণীয় স্থান। পিরামিডের অনুরূপ উঁচু স্থাপত্যিক গঠনই একে শিখর স্টাইলের সঙ্গে অঙ্গীভূত করেছে। মঠের ভেতরের অংশে ১২/১৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা গুম্বুজ ফাঁকা তলদেশর আকারে উপরে উঠে গিয়ে শেষ হয়েছে। অনেকে ধারণা করেন এর উপরেও মঠের অভ্যন্তরে শূন্য/ফাপা আছে।
সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রাচীন এই স্থাপনা। মঠের উপরিভাগের অনেকটা জায়গা জুড়ে বেড়ে উঠেছে গাছ-গাছালি। মঠের উপরি ভাগের বাহিরের ছোট অসংখ্য কুঠরীতে বাসা বেঁধেছে শালিক সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। স্থাপনা প্রাঙ্গনে বিচরণ করে গরু-ছাগল।প্রবেশ পথ নেই সুরক্ষিত। এ অবস্থায় দ্রুত প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে সংস্কার করে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ও সচেতন মহল।
যদিও প্রবেশ পথে পুরাতন একটি সাইনবোর্ডে লেখা আছে, কোন ব্যক্তি এই পুরাকীর্তির কোন রকম ধংশ বা অনিষ্ট সাধন করলে বা এর কোন বিকৃতি বা অংগচ্ছেদ ঘটালে বা এর কোন অংশের উপর কিছু লিখলে বা খোদাই করলে বা কোন চিহ্ন বা দাগকাটলে ১৯৬৮ সালের ১৪ নং পুরাকীর্তি আইনের ১৯ ধারার অধিনে তিনি সর্বাধিক ১ বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দন্ডনীয় হবেন কিন্তু আইন যথাযোগ্য বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ বা নজির চোখে পরেনি।
যদি এমন ভাবে বাংলাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ অযত্নে আর অবহেলার পরে থাকে।তবে অচিরেই হারিয়ে যাবে ইতিহাস ঐতিহ্যের নিদর্শন গুলি। যা কিনা সঠিক রক্ষনা-বেক্ষনের মাধ্যমে সামান্য তদারকি করলে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশও পরিচিত লাভ করতে পারে। হতে পারে পর্যটন শিল্পের এক অপার সম্ভাবনা ময় খাত। আয় হতে পারে কটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা।