বাংলাদেশ ১২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
রাবি ছাত্রলীগের চার নেতা বহিষ্কার বেলালের বিজয়ী উল্লাসের মধ্য দিয়ে সময় পার করছে গোদাগাড়ী উপজেলা বাসি মাদক মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতার। ধনবাড়ী‌তে (সিএজি) কার্যালয়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। হিজলা উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক মোঃ এ কে আজাদ প্রতারণার নতুন কৌশল মসজিদ,মাদরাসাসহ পাকা বসতবাড়ী নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা শিক্ষার্থীদের ‘যাতায়াত’ সুবিধার্থে বন্ধ ক্যাম্পাসে বাস দিলো কুবি রাবি সফরে আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদল জগন্নাথপুরে ডিবির অভিযানে ৭০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার-২ পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড়পত্র না থাকায় মন্ডল প্লাস্টিক এন্ড রাবার রিসাইক্লিং এ জরিমানা সুনামগঞ্জে ৬৫০ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুল ড্রেস বিতরণ করেন মেয়র নাদের বখত দেবিগঞ্জে নেশা জাতীয় ট্যাপেন্ডাডল ট্যাবলেট সহ এক নারী মাদক ব্যবসায়ীকে আটক। সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পাশ হতাশাজনক কেন? শিক্ষক ও শিক্ষা বোর্ডের মতামত ভালুকায় নবনির্মিত ৩টি রাস্তার উদ্ধোধন গাজাসহ ০২ জন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে মাদক পরিবহনের সময় গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

লাইলাতুল কদর এক মঙ্গলময় ও মর্যাদাময় রজনী

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:৪৭:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ এপ্রিল ২০২২
  • ১৭১৬ বার পড়া হয়েছে

লাইলাতুল কদর এক মঙ্গলময় ও মর্যাদাময় রজনী

গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির।।
 মুসলিম জীবনে লাইলাতুল কদর এক অনন্য রজনী। মর্যাদাময় এ রাতটিতে রয়েছে শান্তি ও কল্যাণ। এ রজনী ভাস্বর হয়ে আছে পবিত্র কোরআন নাজিলের মহিমায়, ভাস্বর হয়ে থাকবে স্বল্প সময়ে অধিক পুণ্য লাভের নিশ্চয়তায়। এ রাতের সম্মানেই পবিত্র কোরআনে ‘সূরা কদর’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা অবতীর্ণ হয়েছে।
লাইলাতুল কদরের অর্থ : ‘লাইলাতুন’ শব্দের অর্থ হচ্ছে রাত। ‘কদর’ শব্দের অর্থ হচ্ছে পরিমাপ, পরিমাণ, নির্ধারণ ও ভাগ্য নিরূপণ। ‘কদর’ থেকেই ‘তাকদির’ শব্দ। অবশ্য কদর শব্দের অন্য অর্থ সম্মান, গৌরব, মর্যাদা ও মহিমা। সুতরাং ‘লাইলাতুল কদর’ এর মহিমান্বিত রজনী, সম্মানিত রাত্রি, ভাগ্য নিরূপণ, বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ রজনী অর্থে সাধারণত ব্যবহৃত হয়ে থাকে। হযরত আবুবক রা: বর্ণনা করেন, এ রাতকে এ জন্য ‘লাইলাতুল কদর’ বলা হয় যে, যে ব্যক্তি ইতঃপূর্বে কোনো ইবাদত বন্দেগি করে ‘কদর’ বা সম্মানের অধিকারী হয়নি, সে ব্যক্তি এ রাতে তওবা ইস্তিগফার করে ইবাদত-বন্দেগি করলে ‘কদর’ বা সম্মানের অধিকারী হতে পারবে।
লাইলাতুল কদরের উৎপত্তি : ইবনে জারির র. এর বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সা: একবার ইসরাঈল গোত্রের জনৈক ইবাদতকারী সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তিনি একাধারে এক হাজার মাস যাবত সমস্ত রাত্রি ইবাদতে মশগুল থাকতেন এবং সকাল হলেই জেহাদে বের হয়ে যেতেন। মুসলমানরা এ কথা শুনে বিস্মিত হন। রাসূলুল্লাহ সা: তার উম্মতের জন্য শুধু এক রাত্রির ইবাদতকেই সে ইবাদাতকারীর এক হাজার মাসের ইবাদত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ প্রতিপন্ন করেছেন। (তাফসিরে মাজহারি)
কদর কোন রজনীতে : পবিত্র কোরআনের সুস্পষ্ট বর্ণনায় লাইলাতুল কদর রমজান মাসেই। তবে কবে? এ নিয়ে আলেমদের একাধিক মতামত পরিলক্ষিত হয়। তাফসিরে মাজহারির বর্ণনা মতে, ‘এ রাত রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের মধ্যে আসে। কিন্তু এরও কোনো নির্দিষ্ট তারিখ নেই। সহিহ হাদিস দৃষ্টে এই ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে ‘লাইলাতুল কদর’ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মহানবী সা: বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে তালাশ করো। (বুখারি)
মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের রমজানের শেষ ১০ দিন অধিক ইবাদত করার প্রতি আকৃষ্ট করার জন্যই মূলত লাইলাতুল কদরকে প্রচ্ছন্ন রেখেছেন। তারপরও অধিক সম্ভাব্য রাত হিসেবে ২৭তম রাতকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: গণিত সূত্র দিয়ে এর অধিক সম্ভাব্যতা প্রমাণ করেছেন। যেমন ‘সূরা কদর’-এ ‘লাইলাতুল কদর’ শব্দটি তিনবার উল্লেখ আছে। আরবি বর্ণমালা অনুযায়ী ‘লাইলাতুল কদর’ লিখতে ৯টি অক্ষরের প্রয়োজন হয়। ৩ কে ৯-এর সাথে গুণ করলে গুণফল ২৭ হয়। উপর্যুক্ত হিসেবে ‘লাইলাতুল কদর’ রমজানের ২৭ তারিখ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। (তাফসিরে রুহুল বয়ান)
লাইলাতুল কদরের ইবাদত : রাসূলুল্লাহ সা: যেভাবে এ রাত কাটাতেন এর পূর্ণ অনুসরণ করাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমাদের নিম্নে বর্ণিত কাজগুলো করা আবশ্যক। নিজে রাত জেগে ইবাদত করা এবং পরিবারের সদস্য ও অধীনস্থদের ইবাদতে উদ্বুদ্ধ করা। তারাবির সালাত আদায়ের পর রাতে তাহাজ্জুদ ও সালাতুত তাসবিহ আদায় করা। নফল নামাজের সিজদার মধ্যে তাসবিহ পাঠ শেষে দোয়া করা। কেননা, সেজদাবনত অবস্থায় মানুষ তার রবের অতি নিকটে চলে যায়। ফলে তখন দোয়া কবুল হয়।
নিজের কৃত পাপরাশির জন্য বেশি বেশি তওবা করা। ভবিষ্যতে যাতে আর কোনো পাপ না হয় তার জন্য দৃঢ়সঙ্কল্প করা।
অধিক পরিমাণে কোরআন তিলাওয়াত করা। উত্তম হবে অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ কোরআন অধ্যায়ন করা। সাধ্য অনুযায়ী জিকির আজকার ও তসবিহ তাহলিল আদায় করা।
কবুল হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে নিজ, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, জীবিত-মৃত ব্যক্তিদের জন্য সর্বপরি দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে একাগ্রচিত্তে দোয়া করা। বিশেষ করে মহানবী সা:-এর শিখানো এই দু’আটি বেশি বেশি করে পড়া, হে আল্লাহ তুমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে তুমি ভালোবাস, অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও।
লাইলাতুল কদরের ফজিলত : অগণিত ফজিলতে পূর্ণ এ রাতটির কতিপয় ফজিলত নিম্নে বর্ণনা করা হলো-এ রাতের ফজিলত বর্ণনা করে এ রাতেই একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা অবতীর্ণ হয়েছে, যার নাম সূরাতুল কদর।
এ এক রজনীর ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। এ রাতে পৃথিবীতে অসংখ্য ফেরেশতা নেমে আসেন এবং তারা তখন দুনিয়ায় কল্যাণ, বরকত ও রহমত বর্ষণ করতে থাকেন। এ রাতে ইবাদতে লিপ্ত বান্দাদেরকে ফেরেশতারা জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তির বাণী শোনান।
এ রাতে নফল সালাত আদায় করলে মুমিনদের অতীতের সগিরা গুনাহগুলো মাফ করে দেয়া হয়। মহানবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াব লাভের আশায় কদরের রাতে নফল সালাত আদায় ও রাত জেগে ইবাদত করে আল্লাহ তার ইতঃপূর্বের যাবতীয় সগিরা গোনাহ ক্ষমা করে দেন’। (বুখারি, মুসলিম)।
এ রাতে তওবা কবুল হয়।
এরাতটি চিহ্নিত করার কিছু আলামত : এ রাতকে চিহ্নিত করার কিছু আলামত হাদিস শরিফে পাওয়া যায়। যেমন রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না। নাতিশীতোষ্ণ হবে। মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে। ইবাদতে অধিক তৃপ্তি পাবে। বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে। হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে, যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো। (বুখারি, মুসলিম)
লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির উত্তম মাধ্যম : লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির সুবর্ণ সুযোগ হচ্ছে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করা। মহানবী সা: প্রতি রমজানের শেষ ১০ দিন নিয়মিত ইতিকাফ করতেন। মুমিন বান্দাদের জন্য লাইলাতুল কদর অত্যন্ত মঙ্গলময় এবং বরকতময় রাত। এক রাত ইবাদত করে এক হাজার মাসেরও অধিক সময়ের ইবাদতের সাওয়াব পাওয়া যাবে, এর চেয়ে বড় সুবর্ণ সুযোগ আর কী হতে পারে? এ রাতের ইবাদত হতে বিমুখ ব্যক্তি সত্যিই হতভাগা। মহানবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শবে কদর থেকে বঞ্চিত হয়েছে সে ব্যক্তি সর্ব প্রকার মঙ্গল থেকেই বঞ্চিত হলো। আর যে বঞ্চিত হলো প্রকৃতপক্ষে সে সব কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো’ (নাসাঈ)।
আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

রাবি ছাত্রলীগের চার নেতা বহিষ্কার

লাইলাতুল কদর এক মঙ্গলময় ও মর্যাদাময় রজনী

আপডেট সময় ০১:৪৭:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ এপ্রিল ২০২২

লাইলাতুল কদর এক মঙ্গলময় ও মর্যাদাময় রজনী

গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির।।
 মুসলিম জীবনে লাইলাতুল কদর এক অনন্য রজনী। মর্যাদাময় এ রাতটিতে রয়েছে শান্তি ও কল্যাণ। এ রজনী ভাস্বর হয়ে আছে পবিত্র কোরআন নাজিলের মহিমায়, ভাস্বর হয়ে থাকবে স্বল্প সময়ে অধিক পুণ্য লাভের নিশ্চয়তায়। এ রাতের সম্মানেই পবিত্র কোরআনে ‘সূরা কদর’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা অবতীর্ণ হয়েছে।
লাইলাতুল কদরের অর্থ : ‘লাইলাতুন’ শব্দের অর্থ হচ্ছে রাত। ‘কদর’ শব্দের অর্থ হচ্ছে পরিমাপ, পরিমাণ, নির্ধারণ ও ভাগ্য নিরূপণ। ‘কদর’ থেকেই ‘তাকদির’ শব্দ। অবশ্য কদর শব্দের অন্য অর্থ সম্মান, গৌরব, মর্যাদা ও মহিমা। সুতরাং ‘লাইলাতুল কদর’ এর মহিমান্বিত রজনী, সম্মানিত রাত্রি, ভাগ্য নিরূপণ, বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ রজনী অর্থে সাধারণত ব্যবহৃত হয়ে থাকে। হযরত আবুবক রা: বর্ণনা করেন, এ রাতকে এ জন্য ‘লাইলাতুল কদর’ বলা হয় যে, যে ব্যক্তি ইতঃপূর্বে কোনো ইবাদত বন্দেগি করে ‘কদর’ বা সম্মানের অধিকারী হয়নি, সে ব্যক্তি এ রাতে তওবা ইস্তিগফার করে ইবাদত-বন্দেগি করলে ‘কদর’ বা সম্মানের অধিকারী হতে পারবে।
লাইলাতুল কদরের উৎপত্তি : ইবনে জারির র. এর বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সা: একবার ইসরাঈল গোত্রের জনৈক ইবাদতকারী সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তিনি একাধারে এক হাজার মাস যাবত সমস্ত রাত্রি ইবাদতে মশগুল থাকতেন এবং সকাল হলেই জেহাদে বের হয়ে যেতেন। মুসলমানরা এ কথা শুনে বিস্মিত হন। রাসূলুল্লাহ সা: তার উম্মতের জন্য শুধু এক রাত্রির ইবাদতকেই সে ইবাদাতকারীর এক হাজার মাসের ইবাদত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ প্রতিপন্ন করেছেন। (তাফসিরে মাজহারি)
কদর কোন রজনীতে : পবিত্র কোরআনের সুস্পষ্ট বর্ণনায় লাইলাতুল কদর রমজান মাসেই। তবে কবে? এ নিয়ে আলেমদের একাধিক মতামত পরিলক্ষিত হয়। তাফসিরে মাজহারির বর্ণনা মতে, ‘এ রাত রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের মধ্যে আসে। কিন্তু এরও কোনো নির্দিষ্ট তারিখ নেই। সহিহ হাদিস দৃষ্টে এই ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে ‘লাইলাতুল কদর’ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মহানবী সা: বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে তালাশ করো। (বুখারি)
মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের রমজানের শেষ ১০ দিন অধিক ইবাদত করার প্রতি আকৃষ্ট করার জন্যই মূলত লাইলাতুল কদরকে প্রচ্ছন্ন রেখেছেন। তারপরও অধিক সম্ভাব্য রাত হিসেবে ২৭তম রাতকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: গণিত সূত্র দিয়ে এর অধিক সম্ভাব্যতা প্রমাণ করেছেন। যেমন ‘সূরা কদর’-এ ‘লাইলাতুল কদর’ শব্দটি তিনবার উল্লেখ আছে। আরবি বর্ণমালা অনুযায়ী ‘লাইলাতুল কদর’ লিখতে ৯টি অক্ষরের প্রয়োজন হয়। ৩ কে ৯-এর সাথে গুণ করলে গুণফল ২৭ হয়। উপর্যুক্ত হিসেবে ‘লাইলাতুল কদর’ রমজানের ২৭ তারিখ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। (তাফসিরে রুহুল বয়ান)
লাইলাতুল কদরের ইবাদত : রাসূলুল্লাহ সা: যেভাবে এ রাত কাটাতেন এর পূর্ণ অনুসরণ করাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমাদের নিম্নে বর্ণিত কাজগুলো করা আবশ্যক। নিজে রাত জেগে ইবাদত করা এবং পরিবারের সদস্য ও অধীনস্থদের ইবাদতে উদ্বুদ্ধ করা। তারাবির সালাত আদায়ের পর রাতে তাহাজ্জুদ ও সালাতুত তাসবিহ আদায় করা। নফল নামাজের সিজদার মধ্যে তাসবিহ পাঠ শেষে দোয়া করা। কেননা, সেজদাবনত অবস্থায় মানুষ তার রবের অতি নিকটে চলে যায়। ফলে তখন দোয়া কবুল হয়।
নিজের কৃত পাপরাশির জন্য বেশি বেশি তওবা করা। ভবিষ্যতে যাতে আর কোনো পাপ না হয় তার জন্য দৃঢ়সঙ্কল্প করা।
অধিক পরিমাণে কোরআন তিলাওয়াত করা। উত্তম হবে অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ কোরআন অধ্যায়ন করা। সাধ্য অনুযায়ী জিকির আজকার ও তসবিহ তাহলিল আদায় করা।
কবুল হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে নিজ, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, জীবিত-মৃত ব্যক্তিদের জন্য সর্বপরি দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে একাগ্রচিত্তে দোয়া করা। বিশেষ করে মহানবী সা:-এর শিখানো এই দু’আটি বেশি বেশি করে পড়া, হে আল্লাহ তুমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে তুমি ভালোবাস, অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও।
লাইলাতুল কদরের ফজিলত : অগণিত ফজিলতে পূর্ণ এ রাতটির কতিপয় ফজিলত নিম্নে বর্ণনা করা হলো-এ রাতের ফজিলত বর্ণনা করে এ রাতেই একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা অবতীর্ণ হয়েছে, যার নাম সূরাতুল কদর।
এ এক রজনীর ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। এ রাতে পৃথিবীতে অসংখ্য ফেরেশতা নেমে আসেন এবং তারা তখন দুনিয়ায় কল্যাণ, বরকত ও রহমত বর্ষণ করতে থাকেন। এ রাতে ইবাদতে লিপ্ত বান্দাদেরকে ফেরেশতারা জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তির বাণী শোনান।
এ রাতে নফল সালাত আদায় করলে মুমিনদের অতীতের সগিরা গুনাহগুলো মাফ করে দেয়া হয়। মহানবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াব লাভের আশায় কদরের রাতে নফল সালাত আদায় ও রাত জেগে ইবাদত করে আল্লাহ তার ইতঃপূর্বের যাবতীয় সগিরা গোনাহ ক্ষমা করে দেন’। (বুখারি, মুসলিম)।
এ রাতে তওবা কবুল হয়।
এরাতটি চিহ্নিত করার কিছু আলামত : এ রাতকে চিহ্নিত করার কিছু আলামত হাদিস শরিফে পাওয়া যায়। যেমন রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না। নাতিশীতোষ্ণ হবে। মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে। ইবাদতে অধিক তৃপ্তি পাবে। বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে। হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে, যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো। (বুখারি, মুসলিম)
লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির উত্তম মাধ্যম : লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির সুবর্ণ সুযোগ হচ্ছে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করা। মহানবী সা: প্রতি রমজানের শেষ ১০ দিন নিয়মিত ইতিকাফ করতেন। মুমিন বান্দাদের জন্য লাইলাতুল কদর অত্যন্ত মঙ্গলময় এবং বরকতময় রাত। এক রাত ইবাদত করে এক হাজার মাসেরও অধিক সময়ের ইবাদতের সাওয়াব পাওয়া যাবে, এর চেয়ে বড় সুবর্ণ সুযোগ আর কী হতে পারে? এ রাতের ইবাদত হতে বিমুখ ব্যক্তি সত্যিই হতভাগা। মহানবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শবে কদর থেকে বঞ্চিত হয়েছে সে ব্যক্তি সর্ব প্রকার মঙ্গল থেকেই বঞ্চিত হলো। আর যে বঞ্চিত হলো প্রকৃতপক্ষে সে সব কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো’ (নাসাঈ)।