মোঃ অপু খান চৌধুরী।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় গোমতী নদী ও সালদা নদী ভাঙ্গনের ফলে সৃষ্ট বন্যায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল। বন্যার পানি কমে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ফিরতে শুরু করেছে বন্যা কবলিত বানভাসি মানুষেরা। আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরে পরেছে আরও সংকটে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বানভাসি মানুষেরা আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরে দেখেন, অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পরেছে কারোর ঘর হেলে পরেছে এবং অনেকের ঘরবাড়িতে কাঁদা মাটিতে ঢেকে আছে।
কথা হয় ব্রাহ্মণপাড়া ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে সার্বিক সহযোগিতাকারী সমন্বয়ক শাকিল এর সাথে, তিনি বলেন এই আশ্রয় কেন্দ্রটিতে প্রায় ১৫ শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল বর্তমানে ৩ হতে ৪ শত মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রটিতে আছে।
এ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ধান্যদৌল গ্রামের জামাল মিয়া বলেন, বাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় পর ১৫ দিন যাবত এই আশ্রয় কেন্দ্র আছি। আমার বসত ঘরে পানি উঠলেও এখন পানি নেমে গেছে। সব কিছু এখনো ভেঁজা। এছাড়া পাকের ঘর স্যাতস্যাতে অবস্থায় আছে। শুকনো কোন লাকড়ি খড়ি নেই রান্না করার জন্য। তবুও নিজের বাড়িতে চলে আসছি বউ বাচ্চা নিয়ে, খাবারের কোন একটা ব্যবস্থা হবে।
সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা জয়নাল মিয়া জানান, বন্যার পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় অনেকে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে চলে গেছে। আমি প্রত্যেকদিন বাড়িতে গিয়ে আমার ঘরবাড়ি ঠিককরার চেষ্টা করছি। রাতের বেলায় আশ্রয় কেন্দ্র চলে আসি। কারণ এখানে থাকা এবং খাওয়ার কোন চিন্তা করতে হয় না। ঘরবাড়ি প্রস্তুত করতে আরও অনেকদিন সময় লাগবে এরই মধ্যে আমি পরিবার নিয়ে বাড়িতে চলে যাব।
এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরত কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে থাকতে শুকনো খাবার ও বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রীর সহযোগিতা পাওয়া যেত। এখন বাড়িতে ফিরে আসায় এ সহযোগিতাগুলো আর পাচ্ছিনা। রান্নার করার চুলা ভেঙ্গে যাওয়ায় এবং শুকনো লাকরির অভাবে রান্না করতে পারছি না ফলে তাদের কষ্ট আরও দ্বিগুণ হচ্ছে। বাড়ির আশেপাশে পানি থাকার কারণে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে সবসময় আতঙ্কে থাকতে হয় কখন পানিতে পরে যায়। এছাড়া অনেকের বাড়িঘরে বিষাক্ত সাপেরও উপস্থিতি টের পাওয়া গেছে।