নিজস্ব প্রতিবেদক।।
সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত জেলা বাস্তবায়ন ও সমন্বয় কমটির এক সভা সোমবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসন এ সভার আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম সভায় সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু সাঈদ, আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাফিউল মাজলুবিন রহমান, জেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল মালেক, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মকছুদুল কবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম সারোয়ার হোসেন, জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান মনিরা পারভীন, জ্যেষ্ঠ গণমাধ্যমকর্মী শহীদুল ইসলাম শহীদ বক্তব্য দেন।
সভায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে মাঠ পর্যায়ে জনসচেতনা সৃস্টির লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে জনসচেতনা সৃস্টিতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন, ধর্মীয় নেতা এবং গণমাধ্যকর্মীদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের অর্থনৈতিক সুরক্ষার জন্য সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছেন। এই কর্মসূচির আওতায় জেলার সকল তফসিল ব্যাংক ও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের খোলা অ্যাকাউন্টে প্রবাস, সুরক্ষা, সমতা, প্রগতি স্কিম নামে মোট ৪ প্রকার পেনশন স্কিম খোলা যাবে।
তিনি বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে জনগণকে সম্যকভাবে অবহিত ও আগ্রহী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে সভা-সমাবেশ, র্যালি, উদ্বুদ্ধকরণ মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি আয়োজন করতে হবে। এরূপ উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রমে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী ইত্যাদি কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে। উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভাসহ বিভিন্ন সভায় ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়ন অগ্রগতি’ শীর্ষক এজেন্ডা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
অধিক জনসমাগম হয় এমন স্থান যেমন: হাটবাজার, গ্রোথ সেন্টার, গ্রামীণ মেলা প্রভৃতি জায়গায় তথ্য অফিসের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিজ্ঞাপন, জিঙ্গেল, ভিডিও নিয়মিত প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সম্ভাব্য টার্গেট জনগোষ্ঠীর মাঝে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত লিফলেট, বুকলেট, ফ্লায়ার ইত্যাদি বিতরণ করা এবং এ স্কিমের সুফল সম্পর্কে ধারণা প্রদান করতে হবে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দাফতরিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল এনজিওকে এ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল সরকারি দফতরকে এ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে হবে। উঠান বৈঠক, তথ্য আপা, কমিউনিটি ক্লিনিক ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচারণার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
স্থানীয় ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে টিভি স্ক্রল প্রদর্শনের উদ্যোগ গ্রহণ করা। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে সচেতন করে তাদের মাধ্যমে অভিভাবকদের উদ্বুদ্ধ করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হবে। ইমাম/পুরোহিতদের মাধ্যমে মসজিদ/উপসনালয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে বয়ান/খুতবা কিংবা আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করার পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক।
সভায় জানানো হয়, রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলা এ স্কিমের আওতায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। প্রথম স্থানে আছে দিনাজপুর সেখানে অবশ্য উপজেলা ও জনসংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেশি সে হিসেবে ধরা হলে পঞ্চগড় জেলা প্রথম অবস্থানে রয়েছে। পঞ্চগড় জেলার মধ্যে উপজেলা ভিত্তিক স্কিম গ্রহণকারীর সংখ্যা তেঁতুলিয়ায় এক হাজার ৩৮১, সদরে ৯৫৬ দেবীগঞ্জে ৩৪১ এবং আটোয়ারীতে ২২৯ জন। জেলায় মোট স্কিম গ্রহণকারীর সংখ্যা তিন হাজার ২১১ জন।