বাংলাদেশ ১০:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
তানোরে নির্বাচন ঘিরে পুলিশ প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে ডিসি”এসপি কালকিনিতে বজ্রপাতে প্রতিবন্ধীর মৃত্যু বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পদক বহিষ্কার মুলাদী উপজেলায় হুমায়ুন কবির শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত রাবিতে হলরুমে আটকে তিনঘণ্টা যাবৎ নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে পথের ধারে সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে বসেছে লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া তানোরে রাত পোহালেই ভোট গ্রহন’ কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পুরো এলাকা কাউখালীতে বাড়ছে অপমৃত্যুর প্রবণতা।  ভান্ডারিয়ার কৃতি সন্তান আকাশ ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক রাজশাহীতে সাড়ে ৩ কোটি টাকার হেরোইনসহ মাদক কারবারীকে গ্রেফতার ২ রাজশাহী নগরীতে তরুণী ধর্ষণ মামলার আসামী গ্রেফতার পানি সংকটে মারা যাচ্ছে রুয়েটে সৌন্দর্য বর্ধনের ফুলগাছ, অভিযোগ পথচারীদের কৃষকদেরকে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে অভ্যস্ত হতে হবে পেকুয়ায় খাল থেকে ভাসমান মরদেহ উদ্ধার ভালুকায় ৪০০ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার গ্রেফতার- ২

তাড়াশে লোকালয়ে অবৈধ পুরাতন ব্যাটারি কারখানায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকীর মুখে

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:২৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
  • ১৬৫৯ বার পড়া হয়েছে

তাড়াশে লোকালয়ে অবৈধ পুরাতন ব্যাটারি কারখানায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকীর মুখে

 

 

তাড়াশ ( সিরাজগঞ্জ ) প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অবৈধ পুরাতন ব্যাটারি কারখানার গড়ে উঠায় পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রে  হুমকীর  মুখে পড়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তালম ইউনিয়নের  কুন্দাশন-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়কের পাশে ফসলি জমিতেই গড়ে উঠেছে পুরাতন ব্যাটারির কারখানা।
সেই ব্যাটারির বিষাক্ত অ্যাসিডের পানি ও সীসা পোঁড়ানোর ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আশেপাশের পরিবেশ ও ফসলী জমির ধান।
পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই ফসলি জমির মাঠে এমন স্পর্শকাতর পদার্থের কারখানা তৈরি করা এলাকার জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
পুরাতন, অটোরিকশা ও চার্জার ভ্যানের ব্যাটারি অর্ধেক দামে কিনে এসব পুরাতন ব্যাটারিতে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা হচ্ছে। পুরাতন ব্যাটারি থেকে বিষাক্ত অ্যাসিডের পানি ও সিসা পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা হয়। এসব ব্যাটারির বিষাক্ত অ্যাসিড, সিসা, প্লাস্টিকের বর্জ্য থেকে বের হওয়া বিভিন্ন উপাদানে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কারখানার পাশের জমির ফসল। দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।
পরিবেশের অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও অন্যান্য শর্ত পূরণ না করে চালানো এসব কারখানা থেকে প্রতিনিয়ত নির্গত হচ্ছে পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর সিসা, ধোঁয়া, বর্জ্য পদার্থ।
স্থানীয় কুন্দাশন গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জুয়েল অভিযোগ করে বলেন, ফসলী জমিতে পুরাতন ব্যাটারির কারখানা করায়  এলাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন কারখানা অচিরেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, কারখানার পাশেই আমার ১৫ বিঘা ধানী জমি রয়েছে। ব্যাটারি কারখানা স্থাপনের ফলে আমার ফসল ক্ষেত পুড়ে গেছে। এমনকি আশেপাশের সব জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, রাত গভীর হলে পোড়ানো হয় পুরানো ব্যাটারির বিভিন্ন যন্ত্রাশং। আগুনে পুড়িয়ে পুরাতন ব্যাটারি থেকে ভেতরের সিসা বের করা হয়। পরে এসব পোড়া ব্যাটারির নির্গত সিসা ও অন্যান্য পদার্থ পুনরায় ব্যাটারি তৈরির কারখানায় বিক্রি করা হয়।
পুরাতন ব্যাটারির এই কারখানায় কাজ করা বেশির ভাগ লোকই নওগাঁ, বগুড়া, গাইবান্ধার। তারা ব্যাটারির সব যন্ত্রাংশ খুলে আলাদা করে ও ব্যাটারি পুড়িয়ে তা বগুড়ায় পাঠায়। সেখানে নতুন ব্যাটারিতে পুনরায় এসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়। পুরাতন ব্যাটারির অ্যাসিডের কাজে কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সর্তকতা নেই বললেই চলে। মুখে মাস্ক ছাড়াই কাজ করছেন এসব শ্রমিকেরা।
ব্যাটারি কারখানায় কর্মরত শ্রমিক ইয়াছিন আলী বলেন, গরীব মানুষ কাজ না থাকায় জীবনের ঝুকি নিয়েই ব্যাটারি কারখানায় কাজ করছি।
অনুমোদন হীন ব্যাটারি কারখানার মালিক গাইবান্ধা জেলার সৈয়দ আব্দুল হাদী বলেন, সারাদেশের সব জায়গায় এভাবেই পুরাতন ব্যাটারি প্রক্রিয়া করা হয়। তাড়াশে আমিই প্রথম এটা নিয়ে এসেছি। যখন কারখানা স্থাপন করা হয়েছিল, তখন মাঠে ফসল ছিল না। কোনো অনুমোদন বা লাইসেন্স নেই বলেও তিনি জানান। তবে সবাইকে ম্যানেজ করেই কারখানা চালাচ্ছি।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল আল মামুন বলেন, ফসলী জমিতে এ ধরনের দাহ্য পদার্থের কারখানা করা সম্পূর্ণ নিষেধ। এতে ফসলী  জমির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ফসলি জমিতে যে কোনো ধরনের অ্যাসিডের কারণে মাটির পিএইচ বেড়ে যায়। এতে মাটি অতিরিক্ত ক্ষার হয়ে যায়। ফলে গাছপালা মাটি থেকে তার খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না। গাছের ফলন হয় না এবং গাছ বাড়েও না।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরী তাসমিন উর্মি বলেন, অনুমোদন বিহীন এ সব কারখানায় অচিরেই অভিমান পরিচালনা করা হবে।
এ প্রসঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ তামিম হাসান জানান, আমাদের অফিস থেকে কোন অনুমোদন নেয়নি।অটোরিকশার ব্যাটারিতে সালফিউরিক অ্যাসিডসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মো. মাহবুবুর রহমান জানান, আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরে নির্বাচন ঘিরে পুলিশ প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে ডিসি”এসপি

তাড়াশে লোকালয়ে অবৈধ পুরাতন ব্যাটারি কারখানায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকীর মুখে

আপডেট সময় ০৯:২৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩

 

 

তাড়াশ ( সিরাজগঞ্জ ) প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অবৈধ পুরাতন ব্যাটারি কারখানার গড়ে উঠায় পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রে  হুমকীর  মুখে পড়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তালম ইউনিয়নের  কুন্দাশন-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়কের পাশে ফসলি জমিতেই গড়ে উঠেছে পুরাতন ব্যাটারির কারখানা।
সেই ব্যাটারির বিষাক্ত অ্যাসিডের পানি ও সীসা পোঁড়ানোর ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আশেপাশের পরিবেশ ও ফসলী জমির ধান।
পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই ফসলি জমির মাঠে এমন স্পর্শকাতর পদার্থের কারখানা তৈরি করা এলাকার জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
পুরাতন, অটোরিকশা ও চার্জার ভ্যানের ব্যাটারি অর্ধেক দামে কিনে এসব পুরাতন ব্যাটারিতে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা হচ্ছে। পুরাতন ব্যাটারি থেকে বিষাক্ত অ্যাসিডের পানি ও সিসা পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা হয়। এসব ব্যাটারির বিষাক্ত অ্যাসিড, সিসা, প্লাস্টিকের বর্জ্য থেকে বের হওয়া বিভিন্ন উপাদানে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কারখানার পাশের জমির ফসল। দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।
পরিবেশের অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও অন্যান্য শর্ত পূরণ না করে চালানো এসব কারখানা থেকে প্রতিনিয়ত নির্গত হচ্ছে পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর সিসা, ধোঁয়া, বর্জ্য পদার্থ।
স্থানীয় কুন্দাশন গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জুয়েল অভিযোগ করে বলেন, ফসলী জমিতে পুরাতন ব্যাটারির কারখানা করায়  এলাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন কারখানা অচিরেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, কারখানার পাশেই আমার ১৫ বিঘা ধানী জমি রয়েছে। ব্যাটারি কারখানা স্থাপনের ফলে আমার ফসল ক্ষেত পুড়ে গেছে। এমনকি আশেপাশের সব জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, রাত গভীর হলে পোড়ানো হয় পুরানো ব্যাটারির বিভিন্ন যন্ত্রাশং। আগুনে পুড়িয়ে পুরাতন ব্যাটারি থেকে ভেতরের সিসা বের করা হয়। পরে এসব পোড়া ব্যাটারির নির্গত সিসা ও অন্যান্য পদার্থ পুনরায় ব্যাটারি তৈরির কারখানায় বিক্রি করা হয়।
পুরাতন ব্যাটারির এই কারখানায় কাজ করা বেশির ভাগ লোকই নওগাঁ, বগুড়া, গাইবান্ধার। তারা ব্যাটারির সব যন্ত্রাংশ খুলে আলাদা করে ও ব্যাটারি পুড়িয়ে তা বগুড়ায় পাঠায়। সেখানে নতুন ব্যাটারিতে পুনরায় এসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়। পুরাতন ব্যাটারির অ্যাসিডের কাজে কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সর্তকতা নেই বললেই চলে। মুখে মাস্ক ছাড়াই কাজ করছেন এসব শ্রমিকেরা।
ব্যাটারি কারখানায় কর্মরত শ্রমিক ইয়াছিন আলী বলেন, গরীব মানুষ কাজ না থাকায় জীবনের ঝুকি নিয়েই ব্যাটারি কারখানায় কাজ করছি।
অনুমোদন হীন ব্যাটারি কারখানার মালিক গাইবান্ধা জেলার সৈয়দ আব্দুল হাদী বলেন, সারাদেশের সব জায়গায় এভাবেই পুরাতন ব্যাটারি প্রক্রিয়া করা হয়। তাড়াশে আমিই প্রথম এটা নিয়ে এসেছি। যখন কারখানা স্থাপন করা হয়েছিল, তখন মাঠে ফসল ছিল না। কোনো অনুমোদন বা লাইসেন্স নেই বলেও তিনি জানান। তবে সবাইকে ম্যানেজ করেই কারখানা চালাচ্ছি।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল আল মামুন বলেন, ফসলী জমিতে এ ধরনের দাহ্য পদার্থের কারখানা করা সম্পূর্ণ নিষেধ। এতে ফসলী  জমির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ফসলি জমিতে যে কোনো ধরনের অ্যাসিডের কারণে মাটির পিএইচ বেড়ে যায়। এতে মাটি অতিরিক্ত ক্ষার হয়ে যায়। ফলে গাছপালা মাটি থেকে তার খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না। গাছের ফলন হয় না এবং গাছ বাড়েও না।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরী তাসমিন উর্মি বলেন, অনুমোদন বিহীন এ সব কারখানায় অচিরেই অভিমান পরিচালনা করা হবে।
এ প্রসঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ তামিম হাসান জানান, আমাদের অফিস থেকে কোন অনুমোদন নেয়নি।অটোরিকশার ব্যাটারিতে সালফিউরিক অ্যাসিডসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মো. মাহবুবুর রহমান জানান, আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।