নিজস্ব সংবাদ : 
এম. মতিন, চট্টগ্রাম ব্যুরো।
মুষলধারে বৃষ্টি আর বজ্রপাত উপেক্ষা করে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হয়েছে যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার রানীরহাট বাজার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু।
জানা যায়, গত ৮ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংগঠনিক কমিটির জন্য ১নং রাজানগর ইউনিয়ন কমিটিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা ও ১৮ অক্টোবর ত্রিবার্ষিক সম্মেলন করার তারিখ ঘোষণা করা হয়। মুলত সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে শীর্ষ পদ নিজেদের দখলে রাখতে পদপ্রত্যশীরা যে যার মতো লবিং তদবির করে যাচ্ছেন। সড়ক ও অলিতে-গলিতে নানান রঙ্গের ফেস্টুন, ব্যানার, পোস্টারে ভরে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ নিজ নেতাদের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন কর্মীরা। শেষ মুহুর্তে এসে কেউ কেউ ঘুরছেন যুবলীগের জেলা উপজেলার নেতাদের দুয়ারে দুয়ারে। আবার কেউবা ধরনা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের কাছে। শেষ মুহূর্তে সভাপতি পদের জন্য ২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ৫ জনের আবেদন জমা পড়ে। তারা হলেন সভাপতি পদে সভাপতি বর্তমান সভাপতি এম. আবু তৈয়ব তালুকদার ও আবু মনছুর এবং সা: সম্পাদক পদে বর্তমান সাঃ সম্পাদক লোকমান গণি চৌধুরী, এরশাদুল আলম, আশরাফ হোসেন রানা, আবুল কালাম, মো. ইউনুচ। তবে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীর চেয়ে কর্মী-সমর্থকদের মাঝে হিসাব-নিকাশ চলছে বেশি। সব মিলিয়ে সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করতে দেখা যায়।
ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এম. আবু তৈয়ব তালুকদারের সভাপতিত্বে ও লোকমান গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি: শামসুল আলম তালুকদার। প্রধান বক্তা ছিলেন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুচ।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন মোস্তফা জাহাঙ্গীর, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন, নজরুল ইসলাম তালুকদার স্বপন, মুক্তিযোদ্ধা আবু সৈয়দ তালুকদার, কামাল উদ্দিন চৌধুরী ও বি কে চৌধুরী লিটন।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন, যুবলীগের নেতা মোহাম্মদ পারভেজ, হাছান তালুকদার, নুর মোহাম্মদ আজাদ, ওমর ফারুক, জাসেদ মিয়া চৌধুরী, নাছির উদ্দীন, মাহমুদুল হাসান, আজিজ হোসেন, শাহাজাহান, হাছান মুরাদ ও মোহাম্মদ আলম প্রমূখ।
প্রধান অতিথি উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি: শামসুল আলম তালুকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির প্রচেষ্ঠায় রাঙ্গুনিয়ায় চলছে মেগা প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদককারবারিসহ কোনো অপকর্মে লিপ্ত এমন কাউকে যুবলীগের কমিটি রাখা হবে না। দলে যারা অবহেলিত, অবজ্ঞার শিকার হয়েছেন, যাদের ত্যাগে-শ্রমে যুবলীগ হয়েছে সমৃদ্ধ এবং দুঃসময়ের যারা দলের সঙ্গে ছিলেন, তাদের দিয়েই এ কমিটি গঠন করা হবে। এতে করে দলকে গতিশীল করা, তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সক্রিয় করা, অচলায়তন ভেঙে প্রবাহমান ধারায় আসবে বলে আমি আশা করছি।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু বলেন, যুবলীগকে সর্বত্র সজাগ থাকতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার বিরোধী সব ধরণের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। স্বাধীনতা সংগ্রামে যুবলীগের যে ভূমিকা তা ইতিহাস হয়ে থাকবে। তৃণমূল যুবলীগকে শক্তিশালী করে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে হবে। যুবলীগ হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রাণ, আমাদের নেতা ড. হাছান মাহমুদ এমপির আস্থার প্রতীক।
প্রধান বক্ত মো ইউনুচ বলেন, রাজানগর যুবলীগের নতুন কমিটিতে বিতর্কিতদের স্থান হবে না। যোগ্যতায় যারা এগিয়ে থাকবেন, তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। যারা ছাত্রলীগ করেছে, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং দলের প্রতি নিবেদিত এমন নতুন-পুরনো মিলিয়েই কমিটি হবে। পুরনো যারা যুবলীগ করেছেন, তারাও থাকবেন। তবে বিতর্কিতরা কোনোভাবেই পদে আসতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে উপজেলা কমিটি।
এদিকে প্রথম অধিবেশন শেষে বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন কোন কমিটি ঘোষণা করা না হলেও সভাপতি পদে ২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৫ জনের জীবন বৃত্তান্ত যাচাই-বাছাই করে কমিটি ঘোষণা হবে বলে জানান উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুচ।
