বাংলাদেশ ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
শ্রীমঙ্গলে আড়াই বছরের প্রতিবন্ধী শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা কালকিনিতে স্ত্রীর জন্য শিক্ষকদের কাছে ভোট চাওয়ার অভিযোগ সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন- ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা নব-নির্বাচিত ময়না চেয়ারম্যানকে গণসংবর্ধনা রাবি শিক্ষার্থী জিসানের শতাধিক নিরীক্ষাধর্মী ছবি নিয়ে একক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী রাবি সায়েন্স ক্লাবের ” Win the Career Race” কর্মশালার আয়োজন অনিয়মের অভিযোগে ইটভাটায় অর্থদন্ড করে ভ্রাম্যমাণ আদালত রাবিতে শুরু হল দুই দিনব্যাপী আরিইউসিসি জব ফেয়ার কেন্দ্রীয় ম‌হিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠ‌নিক সৈয়দা রা‌জিয়া মোস্তফা’র পৈত্রিক বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড যতদিন বাচবো মুলাদীর মানুষের সাথে থাকবো-মিঠু খান মির্জাগঞ্জের উপজেলা নির্বাচনে, প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটের মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা কয়রায় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত আট বছরের ঘুমন্ত শিশুকে কোলে করে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা নাগরপুরে নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির নেতাদের সাথে মতবিনিময় করলেন – পান্না সিলেট আসার পথে দুর্ঘটনায় ব্যান্ড শিল্পী আহসান তানভীর পিয়াল নিহত।

ভ্যাপসা গরমে নিকলীর তালপাখার বেড়েছে কদর।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:০২:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • ১৫৯৭ বার পড়া হয়েছে

ভ্যাপসা গরমে নিকলীর তালপাখার বেড়েছে কদর।

মাহফুজ রাজা, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
“তুমার হাত পাখার বাতাসে আমার প্রাণ জুড়িয়ে আসে”গরমের আরামে হাতপাখা যুগ যুগ ধরে এক অনন্য মাধ্যম। পাখার উপযোগিতা নিয়ে এখনও বাংলা সিনেমার এই গানটি হৃদয় ছুয়ে যায়। এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় গরমের দাপট বেশি। প্রখর রোদে ভ্যাপসা গরমে যখন গোদের ওপর বিষফোঁড়া হিসাবে দেখা দেয় লোডশেডিং, তখন মানুষের প্রাণ হয়ে যায় ওষ্ঠাগত। এমন সময় শরীর জুড়াতে অনেকেরই ভরসা হয়ে উঠে হাতপাখা।
সেই তালপাতার তৈরি হাতপাখার সাথে জড়িয়ে আছে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার দামপাড়ার প্রায় দুই শ’ পরিবারের জীবন-জীবিকা।
দামপাড়া ইউনিয়নের দুটি গ্রামের নারীদের তৈরি তালপাতার হাতপাখায় ঘোরে সংসারের চাকা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দুই গ্রামের অন্তত ৩৪ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে শুরু হয় নারীদের সংগ্রাম। সংসারের চাকা ঘোরাতে অনেকে বেছে নেন তালপাতার হাতপাখা বানানোর কাজ।
এখানকার হাতপাখা যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।প্রতিবছরের চৈত্র, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে তালপাখার চাহিদা বেড়ে যায়। তখন নিকলীর দামপাড়ার নোয়ারহাটি, টেকপাড়া ও বর্মনপাড়ায় ঘরে ঘরে পাখা তৈরির ধুম পড়ে।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কারিগররা বাড়ির উঠানজুড়ে দল বেধে হাতপাখা তৈরির কাজ করেন। তবে এই তিন মাসের তালপাখার বাজারকে কেন্দ্র করে কারিগরদের ব্যস্ততা থাকে বছরের অন্য সময়ও।
এবার লোডশেডিং বেশি থাকায় এবং প্রচণ্ড গরমের কারণে তালপাখার চাহিদাও বেড়েছে। সারাদেশে যাচ্ছে নিকলীর হাতপাখা।
গ্রামের ভানুমতি সূত্রধর (৭৮) বলেন, ৫০ থেকে ৬০ বছর অইবো আমরা হাতপাখা তৈরির কাজ করতাছি। ৭১ সালে এই গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ করে। তহন আমাদের অনেকের স্বামীরে মাইরা ফালায়। আমরা বিপদে পইরা যাই। তহন কী কইরা চলবাম। এই কাজ কইরাই আমরা সংসার চালায়া আইতাছি। এহন আমার পুতের বউ, নাতিরাও এই কাজ করে।
গ্রামে তালপাখা তৈরির কাজটা করেন মূলত নারীরাই। পুরুষেরা শুধু সরঞ্জাম এনে দেন। বাড়ির শিশুরা উঠানে বসে নারীদের হাতপাখা তৈরির কাজে সহযোগিতা করে।বংশপরম্পরায় এ গ্রামে এখনো কিশোর-তরুণ বয়সীরা পাখা তৈরির পেশা বেছে নিচ্ছে।
গ্রামের প্রবীণ কারিগররা জানান, স্বাধীনতার আগে একটি পাখা তৈরিতে খরচ হতো আট আনা। বিক্রি হতো এক থেকে দেড় টাকায়। এখন একটি পাখা তৈরিতে গড়ে খরচ পড়ে ৫০ টাকা। বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা টাকায়। পাংখা বিক্রি করতে বাজারে নেয়া লাগে না। পাইকাররা বাড়িত থেকে এসে নিয়া যায়।
পাখার কারিগর মনসা বর্মন (৪২) বলেন, একটা পাংখা বানাইতে প্লাস্টিক লাগে, জালি বেত লাগে, তালপাতা লাগে, এরপরে বাঁশ লাগে, চুঙ্গি লাগে। এসব দিয়ে তৈরি করতে হয়। সবশেষে রং দেওন লাগে। রং না দিলে বেশি সুন্দর হয় না তাই বেশি চলে না।
আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীমঙ্গলে আড়াই বছরের প্রতিবন্ধী শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা

ভ্যাপসা গরমে নিকলীর তালপাখার বেড়েছে কদর।

আপডেট সময় ০৩:০২:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
মাহফুজ রাজা, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
“তুমার হাত পাখার বাতাসে আমার প্রাণ জুড়িয়ে আসে”গরমের আরামে হাতপাখা যুগ যুগ ধরে এক অনন্য মাধ্যম। পাখার উপযোগিতা নিয়ে এখনও বাংলা সিনেমার এই গানটি হৃদয় ছুয়ে যায়। এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় গরমের দাপট বেশি। প্রখর রোদে ভ্যাপসা গরমে যখন গোদের ওপর বিষফোঁড়া হিসাবে দেখা দেয় লোডশেডিং, তখন মানুষের প্রাণ হয়ে যায় ওষ্ঠাগত। এমন সময় শরীর জুড়াতে অনেকেরই ভরসা হয়ে উঠে হাতপাখা।
সেই তালপাতার তৈরি হাতপাখার সাথে জড়িয়ে আছে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার দামপাড়ার প্রায় দুই শ’ পরিবারের জীবন-জীবিকা।
দামপাড়া ইউনিয়নের দুটি গ্রামের নারীদের তৈরি তালপাতার হাতপাখায় ঘোরে সংসারের চাকা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দুই গ্রামের অন্তত ৩৪ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে শুরু হয় নারীদের সংগ্রাম। সংসারের চাকা ঘোরাতে অনেকে বেছে নেন তালপাতার হাতপাখা বানানোর কাজ।
এখানকার হাতপাখা যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।প্রতিবছরের চৈত্র, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে তালপাখার চাহিদা বেড়ে যায়। তখন নিকলীর দামপাড়ার নোয়ারহাটি, টেকপাড়া ও বর্মনপাড়ায় ঘরে ঘরে পাখা তৈরির ধুম পড়ে।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কারিগররা বাড়ির উঠানজুড়ে দল বেধে হাতপাখা তৈরির কাজ করেন। তবে এই তিন মাসের তালপাখার বাজারকে কেন্দ্র করে কারিগরদের ব্যস্ততা থাকে বছরের অন্য সময়ও।
এবার লোডশেডিং বেশি থাকায় এবং প্রচণ্ড গরমের কারণে তালপাখার চাহিদাও বেড়েছে। সারাদেশে যাচ্ছে নিকলীর হাতপাখা।
গ্রামের ভানুমতি সূত্রধর (৭৮) বলেন, ৫০ থেকে ৬০ বছর অইবো আমরা হাতপাখা তৈরির কাজ করতাছি। ৭১ সালে এই গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ করে। তহন আমাদের অনেকের স্বামীরে মাইরা ফালায়। আমরা বিপদে পইরা যাই। তহন কী কইরা চলবাম। এই কাজ কইরাই আমরা সংসার চালায়া আইতাছি। এহন আমার পুতের বউ, নাতিরাও এই কাজ করে।
গ্রামে তালপাখা তৈরির কাজটা করেন মূলত নারীরাই। পুরুষেরা শুধু সরঞ্জাম এনে দেন। বাড়ির শিশুরা উঠানে বসে নারীদের হাতপাখা তৈরির কাজে সহযোগিতা করে।বংশপরম্পরায় এ গ্রামে এখনো কিশোর-তরুণ বয়সীরা পাখা তৈরির পেশা বেছে নিচ্ছে।
গ্রামের প্রবীণ কারিগররা জানান, স্বাধীনতার আগে একটি পাখা তৈরিতে খরচ হতো আট আনা। বিক্রি হতো এক থেকে দেড় টাকায়। এখন একটি পাখা তৈরিতে গড়ে খরচ পড়ে ৫০ টাকা। বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা টাকায়। পাংখা বিক্রি করতে বাজারে নেয়া লাগে না। পাইকাররা বাড়িত থেকে এসে নিয়া যায়।
পাখার কারিগর মনসা বর্মন (৪২) বলেন, একটা পাংখা বানাইতে প্লাস্টিক লাগে, জালি বেত লাগে, তালপাতা লাগে, এরপরে বাঁশ লাগে, চুঙ্গি লাগে। এসব দিয়ে তৈরি করতে হয়। সবশেষে রং দেওন লাগে। রং না দিলে বেশি সুন্দর হয় না তাই বেশি চলে না।