বাংলাদেশ ০৬:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
সড়কে ধান মাড়াই,বিড়াম্বনায় পথচারিরা স্বপ্নীলকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে কুবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি গাঁজাসহ ০৩ জন মাদক কারবারীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। কাউখালীর ঐহিত্যবাহী শীতল পাটির কদর দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে বাতিল নয় !হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে আপত্তি থাকলে ভুক্তভোগীরা আপত্তি জানাতে পারবেন। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে শোকজ কোন রক্ত চক্ষুকে ভয় পাই না- আপনাদেরকে অভয় দিচ্ছি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হবে জনগনের ভালবাসায় এগিয়ে ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী চায়না খানম কালকিনিতে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল ইসলাম নন্দীগ্রামে মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচন বানচাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ভ্রাম্যমাণ যৌন কর্মীদের কাছ থেকে সাংবাদিক ও পুলিশ চাঁদা আদায়-১ ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ০৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতেও ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী -ড. আনোয়ার হোসেন খান এমপি গরমে কদর বেড়েছে পানিতালার। নন্দীগ্রামে ধান বোঝাই ট্রাক চুরি, চোর চক্রের ৩ জন গ্রেফতার

পঞ্চগড়ের নাতির হাতে নানা খুন

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:২২:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪
  • ১৫৯৪ বার পড়া হয়েছে

 

 

 

 

মোঃ আব্দুল্লাহ আল মুকিম রাজু, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ

পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে নাতি (ভাতিজির ছেলে) ও স্থানীয় বাজারের মাছ বিক্রেতা নাসিরুল ইসলাম (২২) ও তার স্বজন ফজর, রফিকুল, তরিকুলদের মারধরে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নানা মজিবর রহমানের (৬৫) মৃত্যু হয়েছে।

গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে উপজেলার হাড়িভাসা বাজারের মাছহাটিতে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে বাসায় নেয়া হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে বৃদ্ধ মজিবরকে প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে এবং পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে আলাল উদ্দীন বাদী হয়ে নাসিরুল সহ। কয়েকজনকে আসামি করে শনিবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করছেন বলে জানা গেছে। এদিকে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে সদর থানা পুলিশ।

নিহত বৃদ্ধের বাড়ি উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের খাংকিপাড়া এলাকায়। তিনি মাছ ধরার পাশাপাশি অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজও করতেন। মারধরকারী নাসিরুল একই এলাকার আলতাফ হোসেনের ছেলে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই নাসিরুল, ফজর, তরিকুল, রফিকুল পলাতক রয়েছেন।

পরিবারের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যার পরে উপজেলার হাড়িভাসা বাজারের মাছহাটিতে নিজ ভাতিজির ছেলে (নাতি) নাসিরুল ইসলামের কাছে স্ত্রী তনজিনা বেগমকে নিয়ে দুধ বিক্রির ২৫০ টাকা চাইতে যান বৃদ্ধ মজিবর।

এ সময় টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন নাসিরুল। এ নিয়ে বাগ- বিতণ্ডা শুরু হলে একপর্যায়ে নাতি নাসিরুল মাছ কুটার ডাম্বেল (মাছ বিক্রেতারা মাছ কুটার সময় ব্যবহার করেন) দিয়ে তার নানার বুকে দুই- তিনবার আঘাত করেন। এ সময় তিনি মাটিতে পড়ে যান।

পরে তাকে বাঁচাতে বৃদ্ধের কয়েকজন স্বজন এগিয়ে এলে তাদেরকেও বেধড়ক মারধর করে নাসিরুলসহ তার স্বজনেরা।

এ সময় তারা ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন। পরে তাকে উদ্ধার করে বাসায় নেয়া হলে মেয়ে ফুলজান বানুর কাছে পানি খেতে চান বৃদ্ধ মজিবর রহমান। মেয়ের হাতে পানি খেয়েই রক্তবমি শুরু হয় বৃদ্ধ মজিবরের।

পরে তাকে স্থানীয় হাড়িভাসা বাজারে পল্লী চিকিৎসকের কাছে নেয়া হলে তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃদ্ধ মজিবরের মৃত্যু হয়। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি নাসিরুল মাছ কুটার ডাম্বেল দিয়ে বৃদ্ধ মজিবর রহমানের বুকে আঘাত করায় তার ক্ষত চিহ্ন বুকেই রয়ে গেছে।

নিহতের বড় মেয়ে ফুলজান বানু বলেন, আমার চাচাতো বোনের ছেলে নাসিরুলের কাছে দুধ বিক্রির ২৫০ টাকা পেতাম। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই পাওনা টাকা চাইতে যান আমার বাবা-মা। তবে সে এখনই টাকা না দিয়ে উল্টো তাকে গালিগালাজ শুরু করে।

 

একপর্যায়ে আমার বাবাকে মাছ কুটার ডাম্বেল দিয়ে বুকে আঘাত করে। পরে তার সাথে ফজর, তরিকুল, রফিকুলেরা যোগ দেয়। আমার বাবাকে বাচাতে এলে তারা আমার ভাতিজা নুরুজ্জামান, চাচাতো ভাই সুজনকেও মারধর করে। পরে বাসায় এসে বাবা আমার কাছে পানি খেতে চান। পানি খেয়েই বাবা বমি শুরু করেন। এ সময় গলা দিয়ে রক্তও বের হয়। পরে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালেই মারা যান। আমি বাবার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

নিহতের ভাতিজা সুজন আলী বলেন, আমি বড় আব্বার সাথেই ছিলাম। তিনি আমার ভাগিনা নাসিরুলের কাছে পাওনা টাকা চাইতে যান। পরে সে মাছ কুটার ডাম্বেল দিয়ে বড় আব্বার বুকে জোরে আঘাত করতে থাকে। আমি তাকে বাঁচাতে গেলে নাসিরুলেরা আমাকেও মারধর করে। তাদের মারধরেই বড় আব্বার মৃত্যু হয়েছে।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, নিহতের মরদেহ সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে নাসিরুলসহ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলার এজহার দিয়েছেন। মামলা দ্রুতই আমলে নিয়ে আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান শুরু হবে।

 

 

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

সড়কে ধান মাড়াই,বিড়াম্বনায় পথচারিরা

পঞ্চগড়ের নাতির হাতে নানা খুন

আপডেট সময় ১১:২২:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

 

 

 

 

মোঃ আব্দুল্লাহ আল মুকিম রাজু, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ

পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে নাতি (ভাতিজির ছেলে) ও স্থানীয় বাজারের মাছ বিক্রেতা নাসিরুল ইসলাম (২২) ও তার স্বজন ফজর, রফিকুল, তরিকুলদের মারধরে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নানা মজিবর রহমানের (৬৫) মৃত্যু হয়েছে।

গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে উপজেলার হাড়িভাসা বাজারের মাছহাটিতে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে বাসায় নেয়া হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে বৃদ্ধ মজিবরকে প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে এবং পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে আলাল উদ্দীন বাদী হয়ে নাসিরুল সহ। কয়েকজনকে আসামি করে শনিবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করছেন বলে জানা গেছে। এদিকে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে সদর থানা পুলিশ।

নিহত বৃদ্ধের বাড়ি উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের খাংকিপাড়া এলাকায়। তিনি মাছ ধরার পাশাপাশি অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজও করতেন। মারধরকারী নাসিরুল একই এলাকার আলতাফ হোসেনের ছেলে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই নাসিরুল, ফজর, তরিকুল, রফিকুল পলাতক রয়েছেন।

পরিবারের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যার পরে উপজেলার হাড়িভাসা বাজারের মাছহাটিতে নিজ ভাতিজির ছেলে (নাতি) নাসিরুল ইসলামের কাছে স্ত্রী তনজিনা বেগমকে নিয়ে দুধ বিক্রির ২৫০ টাকা চাইতে যান বৃদ্ধ মজিবর।

এ সময় টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন নাসিরুল। এ নিয়ে বাগ- বিতণ্ডা শুরু হলে একপর্যায়ে নাতি নাসিরুল মাছ কুটার ডাম্বেল (মাছ বিক্রেতারা মাছ কুটার সময় ব্যবহার করেন) দিয়ে তার নানার বুকে দুই- তিনবার আঘাত করেন। এ সময় তিনি মাটিতে পড়ে যান।

পরে তাকে বাঁচাতে বৃদ্ধের কয়েকজন স্বজন এগিয়ে এলে তাদেরকেও বেধড়ক মারধর করে নাসিরুলসহ তার স্বজনেরা।

এ সময় তারা ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন। পরে তাকে উদ্ধার করে বাসায় নেয়া হলে মেয়ে ফুলজান বানুর কাছে পানি খেতে চান বৃদ্ধ মজিবর রহমান। মেয়ের হাতে পানি খেয়েই রক্তবমি শুরু হয় বৃদ্ধ মজিবরের।

পরে তাকে স্থানীয় হাড়িভাসা বাজারে পল্লী চিকিৎসকের কাছে নেয়া হলে তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃদ্ধ মজিবরের মৃত্যু হয়। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি নাসিরুল মাছ কুটার ডাম্বেল দিয়ে বৃদ্ধ মজিবর রহমানের বুকে আঘাত করায় তার ক্ষত চিহ্ন বুকেই রয়ে গেছে।

নিহতের বড় মেয়ে ফুলজান বানু বলেন, আমার চাচাতো বোনের ছেলে নাসিরুলের কাছে দুধ বিক্রির ২৫০ টাকা পেতাম। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই পাওনা টাকা চাইতে যান আমার বাবা-মা। তবে সে এখনই টাকা না দিয়ে উল্টো তাকে গালিগালাজ শুরু করে।

 

একপর্যায়ে আমার বাবাকে মাছ কুটার ডাম্বেল দিয়ে বুকে আঘাত করে। পরে তার সাথে ফজর, তরিকুল, রফিকুলেরা যোগ দেয়। আমার বাবাকে বাচাতে এলে তারা আমার ভাতিজা নুরুজ্জামান, চাচাতো ভাই সুজনকেও মারধর করে। পরে বাসায় এসে বাবা আমার কাছে পানি খেতে চান। পানি খেয়েই বাবা বমি শুরু করেন। এ সময় গলা দিয়ে রক্তও বের হয়। পরে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালেই মারা যান। আমি বাবার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

নিহতের ভাতিজা সুজন আলী বলেন, আমি বড় আব্বার সাথেই ছিলাম। তিনি আমার ভাগিনা নাসিরুলের কাছে পাওনা টাকা চাইতে যান। পরে সে মাছ কুটার ডাম্বেল দিয়ে বড় আব্বার বুকে জোরে আঘাত করতে থাকে। আমি তাকে বাঁচাতে গেলে নাসিরুলেরা আমাকেও মারধর করে। তাদের মারধরেই বড় আব্বার মৃত্যু হয়েছে।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, নিহতের মরদেহ সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে নাসিরুলসহ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলার এজহার দিয়েছেন। মামলা দ্রুতই আমলে নিয়ে আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান শুরু হবে।