আল মাহমুদ দোলন
বিলুপ্তির পথে থাকা ঘানি শিল্পের কলু গাছিরা এখন প্রাণ ফিরে পেয়েছে, তাদের আদি পেশায়। ভোজ্য তেলের চাহিদা বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে দেশের সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় সুদিন ফিরেছে কলুঘানি শিল্পের।
‘তিন দশক’ আগে ভোজ্য তেলের চাহিদার ৮০% ভাগ পূরণ করা হতো সরিষা তেলের মাধ্যমে। দেশের সরিষার আবাদ কমে যাওয়ায় সয়াবিন তেলের আমদানি বেড়ে যায়, এখন দেশে সরিষার আবাদ বেড়ে যাওয়ায় এবং বিশুদ্ধ তেলের নিশ্চয়তা থাকায় সরিষা তেলের ব্যাবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধুকেধুকে টিকে থাকা ঘানি পেশার কলু ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যাবসার সুদিন ফিরে পেয়েছেন। ফলে আবারও হাট বাজারে কলুর ঘানিতে মাড়াই করা সরিষা তেলের দোকান বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভোক্তা হাবিবুর রহমান জানান, চোখের সামনে ঘানি থেকে সরিষা মাড়াই করে, সেই বিশুদ্ধ তেল পরিবার সহ সবাই রান্না করে খাই যেটা ভেজালের ভয় থাকেনা।
বিশুদ্ধ তেল রান্না ছাড়াও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা বেড়ে যাওয়ায় দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সরিষার তেলের ব্যবহার। পুষ্টি গুন সমৃদ্ধ ও উপকারী এ তেল মানুষের দেহে নানা উপকারে আসে, এমনটাই বললেন পুষ্টিবিদ মো: ডা: লুৎফর কবির, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
‘তিনি বলেন’ সরিষার তেল অন্যান্য তেলের তুলনায় মানবদেহের অনেকটাই উপকারী। যেমন সরিষার তেলে আছে ভিটামিন-ই যেটা চুলের জন্য উপকারী, ওমেগা’থ্রি ফ্যাটি এ্যাসিড, ওমেগা সিক্স ফ্যাটি এসিড, যেগুলি কোলেস্টেরল কমাতে অনেকখানি সাহায্য করে। এবং সরিষার তেলের মধ্যে যে ঝাঁঝালো গন্ধ আছে, সেটাও কিন্তু সর্দি কাশির সময় কাজে লাগে।
বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের ভালো মানের সরিষা বীজ সরবরাহ ও কৃষি বিভাগের অধিকতর তদারকি বাড়ানো গেলে সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদার বিরাট একটা অংশ পূরণ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।