মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ-
ঝালকাঠির রাজাপুরের রোলা মহিলা মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রী ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এ ঘটনায় সংকটাপন্ন ওই ছাত্রী বরিশাল শেবাচিমে দুইদিন ধরে মৃত্যুর সাথে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকলেও ঘটনার পর থেকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত রোলা দিঘিরপাড় এলাকার বাবুল হাওলাদারের ছেলে আরিফ হাওলাদার (২০) আত্মগোপনে রয়েছে।
বুধবার এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ না পেলেও পুলিশ ঘটনাস্থলসহ উভয় পক্ষের বাড়িতে গিয়ে পরির্দশন করে ঘটনা সম্পর্কে খোজখবর নিয়েছে। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা মুঠোফোনে অভিযোগ করে জানান, দীর্ঘদিন মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথিমধ্যে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ইভটিজিং করে আসছিলো। গত ৩০ আগস্ট দুপুর দেড়টার দিকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্ত আরিফ ও তার সহযোগী বারবাকপুর গ্রামের বাবুল মৃধার ছেলে রহিম মৃধা (২০) পথরোধ করে ইভটিজিং করলে ওই ছাত্রী তার বাবাকে খবর দেয়।
স্থানীয়দের নিয়ে মৃধাবাড়ি এলাকায় গিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্তদের ধরে হাজিরহাট নিয়ে এলে স্থানীয় ইউপি সদস্যের পরামর্শে আর ইভটিজিং করবে না এমন মুচলেকা রেখে গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আরিফের দাদা সালামসহ তাদের স্বজনদের জিম্মায় দিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীর পথরোধ করে ফের ওই ছাত্রীকে টানাহেচড়া করে মোবাইল নেয়ার চেষ্টা চালায় এবং ওই ছাত্রীকে তুলে নিতে চায়। খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর পিতাসহ স্থানীয়রা গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং কিছুক্ষণ পর ওই ছাত্রী বমি শুরু করে।
ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, ইভটিজিংয়ের এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে লোকলজ্জার ভয়ে বিষপান করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে উদ্ধার করে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শেবাচিমে প্রেরণ করে। বর্তমানে অচেতন অবস্থায় রয়েছে বলেও জানায় ছাত্রীর বাবা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আরিফ হাওলাদারের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।
তার মা নাসিমা বেগম দাবি করে জানান, ওই ছাত্রীর সাথে তার ছেলের যোগাযোগ ছিল এবং তারা দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তার ছেলেকে গত ৩০ আগষ্ট দুপুর আটকে স্থানীয়রা মারধর করায় যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে এবং তার ছেলে চট্টগ্রামে জাহাজে চাকুরি করে সেখানে মঙ্গলবার চলে গেছে।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই ছাত্রীর বা তার পরিবার কোন অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।