তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে চিহ্নিত মাদক সম্রাট হেলাল হোসেন (৫২) ও তার সহযোগী সোবাহান (২২) র্যাবের হাতে আটক হওয়ায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন এলাকাবাসী। সোমবার সকালে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের মহিষলুটি বাজারে ওই আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন এলাকার সূধীজন। জানা যায়, গত বুধবার সন্ধায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে উল্লাপাড়া উপজেলার ধোপাকান্দি এলাকায় হানিফ হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট এর সামনে থেকে হেলাল হোসেন ও তার সহযোগী সোবাহানকে ১৩৮ গ্রাম হেরোইন ও ২৯ পিচ ইয়াবাসহ আটক করে র্যাব-১২।
ওই সময় র্যাব-১২ আটককৃতদের নিকট থেকে ১ টি প্রাইভেট কার, ৩ টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪৭ হাজার টাকা জব্দ করে। হেলাল হোসেন তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের ঘরগ্রাম পূর্বপাড়া এলাকার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে ও তার সহযোগী সোবাহান ওই একই গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। আটককৃত হেলাল দীর্ঘদিন যাবত মাদক ও সুদের ব্যবসার সাথে সাথে জড়িত। এদিকে মাদক কারবারি হেলাল হোসেনের আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। এবং আইনশৃংখলা বাহিনী র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১২ কে সাধুুবাদ জানান। এলাকাবাসীর অভিযোগ হেলাল মাদক, জুয়া ও সুদ কারবার করে রাতারাতি অঢেল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
অপরদিকে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার চেক মামলা করে নিঃস্ব করেছে শতাধিক পরিবার। সে মহিষলুটি তিনতলা অফিস বানিয়ে নিজেকে বড় ক্ষমতাধর প্রচার করে সেখান থেকে নানান অপকর্ম পরিচালনা করে আসছিল। স্থানীয় ভুক্তভোগী মাসুদ রানা কান্না জড়িতকণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, হেলালের কাছ থেকে পারিবারিক প্রয়োজনে এক বছর পূর্বে ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলাম। তিনি আমার কাছ থেকে চারটি ফাঁকা চেক নিয়েছিলো। ২০ লক্ষ টাকা আমি দিলেও সে ইচ্ছে মতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে মোট ১ কোটি ৯০ লক্ষ ১০ হাজার ৫’শ টাকার মামলা দায়ের করেছে। র্যাব তাকে আটক করায় আমরা স্বস্তি পেয়েছি। আমরা চাই প্রত্যেক অপরাধীর বিচার হোক।
একই অভিযোগ তুলে আব্দুল খালেক বিএসসি বলেন, মাদক ও সুদকারবারি হেলাল হোসেনের কাছ থেকে তিন দফায় ৫ লাখ টাকা নেই। বিনিময়ে তিনটি সাক্ষরযুক্ত সাদা চেক দেয়। সুদ আসল মিলে পরিশোধ করলেও আমার বিরুদ্ধে তিনি সিরাজগঞ্জ কোর্টে ২০ লাখ টাকার মামলা করেছে। স্থানীয় আকতার মাস্টার বলেন, হেলাল মাদক ও সুদের ব্যবসা করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। তাকে র্যাব আটক করায় এলাকায় স্বস্থি ফিরেছে। আমরা তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।
র্যাব-১২’র মিডিয়া অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তাদের আটক করার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তিনি দীর্ঘদিন যাবত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধনেশা জাতীয় মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল। পরে সলঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ প্রসঙ্গে সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।