সাইদুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের বুড়িরহাট ভাঙ্গামাল্লি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম
এর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগে লিখিত অভিযোগ করছেন সাবেক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের।
লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে একটি নতুন ভবন ও সীমানা প্রাচীরের কাজ চলমান। এই প্রাচীর করার স্বার্থে প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম পূর্বের ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নির্মিত প্রায় ৩০০ ফিট দীর্ঘ ৫ ফিট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর এবং ৭টি পুরাতন ল্যাট্টিন অপসারণ করেছেন। যেখানে প্রায় ১৫ হাজার ইট, ৭টি দরজা, রড ও পুরাতন স্টিল ব্রেন্চ ছিলো।
এগুলো প্রধান শিক্ষক অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন। বিক্রি করায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং এই সুযোগে নিলামকৃত গাছের বাহিরে তিনি অারো গাছ কর্তন করেছেন। নিলামে ৫ফিট বেড়ের একটি মেহগনি গাছ ছিলো যা নতুন ভবনের কাজ করার স্বার্থে ২কড়াই ২টি মেহগনি ও ২অাম গাছ কর্তন করেছেন। নতুন করে রাতের অন্ধকারে নাম্বার বসিয়ে ৫ফিট ৫ ইঞ্চি বেড়ের একটি মেহগনি গাছ নিলাম বহির্ভূত ভাবে বিক্রি করেন। যা নতুন ভবন থেকে ২০ফিট পুর্বে অবস্থিত। আর এই গাছটি কর্তনে ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ শওকত বাধা প্রদান করিলে চর টাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ বিষয়টি তিনি মৌখিক ভাবে উর্ধতন কর্মকর্তাকে ঘটনার সময়ই অবগত করেন।
অভিযোগ সুত্রে আরো জানা যায়, প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম প্রতিবছর বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত স্লিপ এর টাকার কাজ না করে একাই আত্নসাত করেছেন। তিনি এলাকার মানুষের নিকট থেকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে তালবাহনা করছেন।
ইতিপূর্বে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগও করেছিলেন এক শিক্ষক। সেই পরিবার গুলো চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের মধ্য বিদ্যুৎ নামে ভুক্তভোগী একজন জানান তিনি এখনো ৫০হাজার টাকা পান। আজ দেই কাল দেই শুধু এই বলে যাচ্ছেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন একজন।
স্থানীয়রা জানান, অবৈধ ভাবে গাছ কাটা নিয়ে শিক্ষক শওকত ও সাইফুল ইসলামের বেশ বাক-বিতন্ডা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগকারী মধুপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের বলেন, এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি লিখিত অভিযোগ জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে করছি।
চরটাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, নিলামের বাহিরে যে গাছটি কাটা হয়েছে এটি মুলত ভুলবশত কাটা হয়েছে।
শিক্ষক শওকত বলেন, আমার সন্দেহ হলে আমি জিজ্ঞাসা করতে গেলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায় যায় শিক্ষক সাইফুল ইসলাম। তিনি ছাত্র-ছাএীদের সামনে আমাকে অপমান অপদস্ত করেন। তখন আমি উর্ধতন কর্মকর্তাকে মৌখিক ভাবে অবগত করি।
ভাঙ্গামাল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে যা বলার তিনি বলেছেন।
উপজেলা বন কর্মকর্তা নুরুন্নবী বলেন, গাছের বিষয়টি জেনেছি। অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে কাউনিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ সরকার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য সরেজমিনে গিয়ে গাছ ব্যবসায়ী আশিকুর দর্জির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, নিলামে যিনি পেয়েছেন তার কাছ থেকে ক্রয় করে নিয়েছি। আর ঐ গাছটি নিলামকৃত গাছ নয়। ওই গাছ কাটা নিয়ে পার্শ্ববর্তী স্কুলের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলামের সাথে এই স্কুলের শিক্ষক শওকতের বাকবিতন্ডাও হয়েছে।