বাংলাদেশ ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট যশোর জেলা কমিটির পথচারীদের মাঝে পানি ও শরবত বিতরণ  হাইকোর্টের নির্দেশে মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসার ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ। দুই স্ত্রী হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। রাবির জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ফাইনালে ঢাবির দুই দল ঝালকাঠীর দুর্ঘটনায় অতিরিক্ত গতি-সড়ক অবকাঠামো দায়ী। সোনারগাঁয় শেষ হলো পনেরো দিনব্যাপী বৈশাখীমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান  নাগরপুরে সার্বজনীন পেনশন স্কিম অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত।  স্বাস্থ্য প্রকৌশলী আনোয়ার আলীর বিরুদ্ধে শত কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২০০০ রিকশাচালকের মাঝে শোভনের ক্যাপ বিতরণ রাঙ্গাবালী খালে পাওয়া টর্পেডো উদ্ধার করে নিয়ে গেছে নৌবাহিনী। পঞ্চগড়ে ট্রাফিক পুলিশের উদ্যেগে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ উপাচার্য-ট্রেজারের অপসারণের দাবিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা শিক্ষক সমিতির ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিআরটিএ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ ক্লিন,গ্রীন ও স্মার্ট সি‌লেট গড়ার ল‌ক্ষ্যে সিসিক মেয়র এর সা‌থে আন্তর্জা‌তিক ব্যবসায়ীদের বৈঠক ফুলবাড়ীতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক আলী নূর হত্যা মামলার মূল আসামী আহিনা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:১৯:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ অগাস্ট ২০২২
  • ১৭১৭ বার পড়া হয়েছে

চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক আলী নূর হত্যা মামলার মূল আসামী আহিনা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

 

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ

সাভারের আশুলিয়ায় ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক আলী নূর হত্যা মামলার মূল আসামী আহিনা খাতুন (২৯)কে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

 

 

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।

 

 

র‌্যাব-৪ বিগত দিনগুলোতে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যাকান্ডের আসামী গ্রেফতারের অভিযান পরিচালনা করে উল্লেখযোগ্য আসামী গ্রেফতার করে যার মধ্যে সাভারের অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মন হত্যার রহস্য উদঘাটনপূর্বক আসামীদের গ্রেফতার, চাঞ্চল্যকর শাহীন উদ্দিন হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার, সাভারের ক্লুলেস ফাতিমা হত্যা আশুলিয়ার গার্মেন্টসকর্মী সাহিদা হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ অসংখ্য ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করা এবং আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া অসংখ্য দুধর্ষ খুনী, জঙ্গি অবৈধ অস্ত্রধারী, ডাকাত এবং ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়। যার প্রেক্ষিতে সার্বিক মূল্যায়নে ২০২১ সালে র‌্যাব-৪ ক্লুলেস অপরাধ রহস্য উদঘাটনে প্রথম স্থান লাভ করে।

 

 

 

এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল সাভারের আশুলিয়ায় চা ল্যকর অটোরিকশা চালক আলী নূর বিশ্বাস হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোছাঃ আহিনা খাতুন (২৯)’কে গতকাল রাতে নারায়নগঞ্জ জেলার কাঁচপুর এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

 

 

 

গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ভিকটিম আলী নূর বিশ^াস মাগুড়া জেলার শ্রীপুর থানার হোগলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। সে চাকুরির সন্ধানে ২০১৪ সালে ঢাকায় এসে প্রথমে গার্মেন্টসকর্মী হিসাবে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে বিগত কিছুদিন যাবৎ অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। আসামীর বক্তব্য অনুযায়ী প্রায় তিন বছর আগে ভিকটিমের সাথে আসামীর পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে গভীর সখ্যতা গড়ে উঠে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে তারা দুজনই একসাথে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেয়।

 

 

 

এমতাবস্থায় বিবাহ ব্যতিরেকে তারা নিজ নিজ পরিবারকে না জানিয়েই স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে আশুলিয়া এলাকায় বিভিন্ন বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতে থাকে। তবে তার বক্তব্যে অনুযায়ী গত ০৩ বছরে তারা ০৫ বার বাসা পরিবর্তন করেছে। জুলাই মাসের শুরুতে হত্যার শিকার ভিকটিম আলী নূর বিশ^াস কিছু দিনের জন্য মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার গ্রামের বাড়ি গেলে আহিনা খাতুন জানতে পারে যে, গত ১৪/০৭/২২ তারিখে আলী নূর তার গ্রামের বাড়িতে ভিকটিম অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে। ভিকটিম আলী নূর ১৭ জুলাই ঢাকায় ফিরে আসে। ভিকটিম আলী নূর এর বিয়ের কথা জানতে পেরে আসামীর মনে প্রচন্ড ক্রোধ এবং প্রতিহিৎসার সৃষ্টি হয়।

 

 

 

কিন্তু প্রতিহিৎসা ও ক্রোধের বিষয়টি সে আসামির নিকট গোপন রেখে ভিকটিম আলী নূর’কে গোপনে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাদের মধ্যকার মান-অভিমান চলতে থাকলেও ভিকটিম গ্রামের বাড়ি হতে আশুলিয়ায় আসার পর আসামী দুরভিসন্ধিমূলকভাবে ভিকটিমকে কৌশলে গত ২৯/০৭/২২ তারিখ আশুলিয়ার জিরাবো নামাপাড়া এলাকায় জনৈক দেলোয়ার বেপারী এর টিনশেড বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতে শুরু করে।

 

 

 

গত ৩০/০৭/২২ রাতের খাবার শেষে উভয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু আসামী ঘুমের ভান করে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সে ঘুমায়নি। হত্যার পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক আসামি আহিনা খাতুন সেদিন ভোররাতে ভিকটিমকে ঘুমন্ত অবস্থায় বটি দিয়ে মাথা, গলা এবং বুকে নৃশংশভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

 

 

আসামীর বক্তব্য অনুযায়ী রক্তাক্ত লাশ দেখে সে কিছুটা ভয় পেয়ে যায় এবং লাশটি কাঁথা চাপা দিয়ে রাখে। হত্যার পরে তার থালা-বাসন, কাপড় চোপর এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি একট্ িবস্তায় ভরে অনুমান ভোর ০৬.০০ ঘটিকায় ঘড়ে তালা দিয়ে বস্তাটি নিয়ে হেটে প্রথমে জিরাবো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসে। সেখান থেকে বাস যোগে আবদুল্লাহপুর আসে। আব্দুল্লাহপুর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার বাসযোগে কুড়িল বিশ^রোডে আসে।

 

 

পরবর্তীতে কুড়িল বিশ^রোড হতে বাসযোগে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুর এলাকায় আসে। সেখানে আসামী আহিনা নিজেকে চাকুরীপ্রত্যাশী গার্মেন্টসকর্মী পরিচয় দিয়ে ২২০০ টাকায় ভাড়ায় জনৈক বয়স্ক ব্যাক্তি মজিবুরের সহযোগীতায় একটি টিনশেড বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠে এবং আত্মগোপনে চলে যায়।

 

 

পরবর্তীতে আসামী আহিনা বিবেকের তাড়নায় ৩১ জুলাই বিকাল ০৪.০০ ঘটিকার দিকে ভিকটিম আলী নূর এর মোবাইলের মাধ্যমে ভিকটিমের ভগ্নিপতি জনৈক জাকিরকে জানায় যে, আলীনূর অসুস্থ অবস্থায় আছে তাকে বাঁচাতে তার পরিবার যেন দ্রুত আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় দেলোয়ার বেপারীর টিনশেড ভাড়া বাসায় যান।

 

 

০১ আগস্ট অনুমান ০২.১৫ ঘটিকার দিকে সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন জিরাবো এলাকায় দেলোয়ার বেপারীর ভাড়া দেওয়া টিনশেড বাসায় গিয়ে দেখতে পায় যে রুমের দরজা বাহির হতে তালাবদ্ধ। তারা বাসার মালিক ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় জানালা খুললে রুমের ভিতর হতে তীব্র দুর্গন্ধসহ মেঝেতে কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় চিৎ হয়ে ভিকটিম আলী নূরের লাশ দেখতে পায়।

 

 

 

পরবর্তীতে আশুলিয়া থানা পুলিশ উক্ত ঘরের তালা ভেঙ্গে রুমের ভিতর থেকে লাশটি উদ্ধার করে। উক্ত ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে সুরতহাল ও ময়না তদন্ত শেষে গত ০২/০৮/২০২২ ইং তারিখ ভিকটিমের বড় ভাই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-৪ আসামী গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

 

 

পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামী মোছাঃ আহিনা খাতুন (২৯)’কে র‍্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে নারায়নগঞ্জ জেলার কাঁচপুর এলাকা হতে আসামীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।

 

 

 

আসামীর জীবন বৃত্তান্তঃ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী স্থানীয় নীলফামারীর একটি স্কুল থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে। তাদের ০৫ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। ২০১২ সালে জনৈক মোঃ মিজানুর রহমানের সাথে তার প্রথম বিবাহ হলেও পারিবারিক কলহের জেরে দেড় বছর পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।

 

 

 

উক্ত পরিবারে তার ০১ টি ছেলে সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে জীবিকার তাগিদে তার সন্তানকে মায়ের কাছে রেখে ২০১৮ সালে ঢাকায় আসেন এবং আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টস এ চাকুরি নেন। চাকুরির সুবাদে ভিকটিমের সাথে তার পরিচয় হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

 

 

মোঃ জিয়াউর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার
সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার)
পক্ষে পরিচালক

 

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট যশোর জেলা কমিটির পথচারীদের মাঝে পানি ও শরবত বিতরণ 

চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক আলী নূর হত্যা মামলার মূল আসামী আহিনা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

আপডেট সময় ০৪:১৯:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ অগাস্ট ২০২২

 

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ

সাভারের আশুলিয়ায় ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক আলী নূর হত্যা মামলার মূল আসামী আহিনা খাতুন (২৯)কে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

 

 

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।

 

 

র‌্যাব-৪ বিগত দিনগুলোতে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যাকান্ডের আসামী গ্রেফতারের অভিযান পরিচালনা করে উল্লেখযোগ্য আসামী গ্রেফতার করে যার মধ্যে সাভারের অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মন হত্যার রহস্য উদঘাটনপূর্বক আসামীদের গ্রেফতার, চাঞ্চল্যকর শাহীন উদ্দিন হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার, সাভারের ক্লুলেস ফাতিমা হত্যা আশুলিয়ার গার্মেন্টসকর্মী সাহিদা হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ অসংখ্য ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করা এবং আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া অসংখ্য দুধর্ষ খুনী, জঙ্গি অবৈধ অস্ত্রধারী, ডাকাত এবং ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়। যার প্রেক্ষিতে সার্বিক মূল্যায়নে ২০২১ সালে র‌্যাব-৪ ক্লুলেস অপরাধ রহস্য উদঘাটনে প্রথম স্থান লাভ করে।

 

 

 

এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল সাভারের আশুলিয়ায় চা ল্যকর অটোরিকশা চালক আলী নূর বিশ্বাস হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোছাঃ আহিনা খাতুন (২৯)’কে গতকাল রাতে নারায়নগঞ্জ জেলার কাঁচপুর এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

 

 

 

গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ভিকটিম আলী নূর বিশ^াস মাগুড়া জেলার শ্রীপুর থানার হোগলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। সে চাকুরির সন্ধানে ২০১৪ সালে ঢাকায় এসে প্রথমে গার্মেন্টসকর্মী হিসাবে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে বিগত কিছুদিন যাবৎ অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। আসামীর বক্তব্য অনুযায়ী প্রায় তিন বছর আগে ভিকটিমের সাথে আসামীর পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে গভীর সখ্যতা গড়ে উঠে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে তারা দুজনই একসাথে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেয়।

 

 

 

এমতাবস্থায় বিবাহ ব্যতিরেকে তারা নিজ নিজ পরিবারকে না জানিয়েই স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে আশুলিয়া এলাকায় বিভিন্ন বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতে থাকে। তবে তার বক্তব্যে অনুযায়ী গত ০৩ বছরে তারা ০৫ বার বাসা পরিবর্তন করেছে। জুলাই মাসের শুরুতে হত্যার শিকার ভিকটিম আলী নূর বিশ^াস কিছু দিনের জন্য মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার গ্রামের বাড়ি গেলে আহিনা খাতুন জানতে পারে যে, গত ১৪/০৭/২২ তারিখে আলী নূর তার গ্রামের বাড়িতে ভিকটিম অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে। ভিকটিম আলী নূর ১৭ জুলাই ঢাকায় ফিরে আসে। ভিকটিম আলী নূর এর বিয়ের কথা জানতে পেরে আসামীর মনে প্রচন্ড ক্রোধ এবং প্রতিহিৎসার সৃষ্টি হয়।

 

 

 

কিন্তু প্রতিহিৎসা ও ক্রোধের বিষয়টি সে আসামির নিকট গোপন রেখে ভিকটিম আলী নূর’কে গোপনে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাদের মধ্যকার মান-অভিমান চলতে থাকলেও ভিকটিম গ্রামের বাড়ি হতে আশুলিয়ায় আসার পর আসামী দুরভিসন্ধিমূলকভাবে ভিকটিমকে কৌশলে গত ২৯/০৭/২২ তারিখ আশুলিয়ার জিরাবো নামাপাড়া এলাকায় জনৈক দেলোয়ার বেপারী এর টিনশেড বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতে শুরু করে।

 

 

 

গত ৩০/০৭/২২ রাতের খাবার শেষে উভয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু আসামী ঘুমের ভান করে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সে ঘুমায়নি। হত্যার পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক আসামি আহিনা খাতুন সেদিন ভোররাতে ভিকটিমকে ঘুমন্ত অবস্থায় বটি দিয়ে মাথা, গলা এবং বুকে নৃশংশভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

 

 

আসামীর বক্তব্য অনুযায়ী রক্তাক্ত লাশ দেখে সে কিছুটা ভয় পেয়ে যায় এবং লাশটি কাঁথা চাপা দিয়ে রাখে। হত্যার পরে তার থালা-বাসন, কাপড় চোপর এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি একট্ িবস্তায় ভরে অনুমান ভোর ০৬.০০ ঘটিকায় ঘড়ে তালা দিয়ে বস্তাটি নিয়ে হেটে প্রথমে জিরাবো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসে। সেখান থেকে বাস যোগে আবদুল্লাহপুর আসে। আব্দুল্লাহপুর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার বাসযোগে কুড়িল বিশ^রোডে আসে।

 

 

পরবর্তীতে কুড়িল বিশ^রোড হতে বাসযোগে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুর এলাকায় আসে। সেখানে আসামী আহিনা নিজেকে চাকুরীপ্রত্যাশী গার্মেন্টসকর্মী পরিচয় দিয়ে ২২০০ টাকায় ভাড়ায় জনৈক বয়স্ক ব্যাক্তি মজিবুরের সহযোগীতায় একটি টিনশেড বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠে এবং আত্মগোপনে চলে যায়।

 

 

পরবর্তীতে আসামী আহিনা বিবেকের তাড়নায় ৩১ জুলাই বিকাল ০৪.০০ ঘটিকার দিকে ভিকটিম আলী নূর এর মোবাইলের মাধ্যমে ভিকটিমের ভগ্নিপতি জনৈক জাকিরকে জানায় যে, আলীনূর অসুস্থ অবস্থায় আছে তাকে বাঁচাতে তার পরিবার যেন দ্রুত আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় দেলোয়ার বেপারীর টিনশেড ভাড়া বাসায় যান।

 

 

০১ আগস্ট অনুমান ০২.১৫ ঘটিকার দিকে সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন জিরাবো এলাকায় দেলোয়ার বেপারীর ভাড়া দেওয়া টিনশেড বাসায় গিয়ে দেখতে পায় যে রুমের দরজা বাহির হতে তালাবদ্ধ। তারা বাসার মালিক ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় জানালা খুললে রুমের ভিতর হতে তীব্র দুর্গন্ধসহ মেঝেতে কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় চিৎ হয়ে ভিকটিম আলী নূরের লাশ দেখতে পায়।

 

 

 

পরবর্তীতে আশুলিয়া থানা পুলিশ উক্ত ঘরের তালা ভেঙ্গে রুমের ভিতর থেকে লাশটি উদ্ধার করে। উক্ত ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে সুরতহাল ও ময়না তদন্ত শেষে গত ০২/০৮/২০২২ ইং তারিখ ভিকটিমের বড় ভাই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-৪ আসামী গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

 

 

পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামী মোছাঃ আহিনা খাতুন (২৯)’কে র‍্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে নারায়নগঞ্জ জেলার কাঁচপুর এলাকা হতে আসামীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।

 

 

 

আসামীর জীবন বৃত্তান্তঃ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী স্থানীয় নীলফামারীর একটি স্কুল থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে। তাদের ০৫ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। ২০১২ সালে জনৈক মোঃ মিজানুর রহমানের সাথে তার প্রথম বিবাহ হলেও পারিবারিক কলহের জেরে দেড় বছর পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।

 

 

 

উক্ত পরিবারে তার ০১ টি ছেলে সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে জীবিকার তাগিদে তার সন্তানকে মায়ের কাছে রেখে ২০১৮ সালে ঢাকায় আসেন এবং আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টস এ চাকুরি নেন। চাকুরির সুবাদে ভিকটিমের সাথে তার পরিচয় হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

 

 

মোঃ জিয়াউর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার
সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার)
পক্ষে পরিচালক