মেহেরপুর থেকে হিরক খান
বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই ভিক্ষাবৃত্তি করেই চলে দিনাতিপাত । বয়সের ভারে এখন আর আগের মতো ছুটতে পারে না। তাই আয় রোজগারও কম। কোন রকম চলে জীবন জীবিকা। জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে এখন একটিই ভাবনা মৃত্যুর পরে কাফনের কাপড় কোথায় পাবো। বলছিল মেহেরপুর সদর উপজেলার নব গঠিত বারাদী ইউনিয়নের হাসানাবাদ গ্রামের মৃত সদর উদ্দীনের মেজ ছেলে মঙ্গলের কথা। বর্তমানে তিনি পেশায় একজন ভিক্ষুক। আর ভিক্ষাবৃত্তি করেই চলছে তার তিন সদস্যের সংসার। ব্যক্তিগত জীবনে ছিল তার দুই সংসার। ১ম পক্ষে ছিল ৩ ছেলে তার মধ্যে একটি মারা যায়। প্রথম স্ত্রী মারা গেলে সংসারের হাল ধরতে ঘরে আনেন ২য় স্ত্রী। এ ঘরেও জন্ম নেয় তিন মেয়ে এক ছেলে।
এর মধ্যে দুই মেয়েকে করেছেন পাত্রস্থ। ছেলেরা সবাই এখন আলাদা, নিজের সংসার নিয়েই ব্যস্ত। ছোট মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়েই এখন তার সংসার। শারীরিক কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ায় বেছে নিয়েছেন ভিক্ষাবৃত্তি পেশা। সারাদিন ঘুরে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনমতে চলে সংসার। বাড়ীর জমিটুকু ছাড়া নেই কোন সম্বল। জীবনের এই শেষ লগ্নে এসে তার একটিই ভাবনা। মারা যাবার পরে কাফনের কাপড় কাথা থেকে পাবো। সেই চিন্তাতেই ভিক্ষা করতে এসে বারাদী বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী সালেহা মেডিকো ও উৎস মেডিকেলের সত্বাধীকারী আব্দুল মালেকের কাছে কাফনের কাপড়ের জন্য আকুতি জানায়।
মঙ্গলের কথায় মনে রেখাপাত করে আব্দুল মালেক, তিনি সেটা দিতে রাজি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে ডেকে উপহার হিসেবে দেন জায়নামাজ টুপি আতর মিসওয়াক তসবি ও কাফনের জন্য দশগজ সাদা থান কাপড় । এসময় উপস্থিত ছিলেন মোমিনপুর জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মনিরুল ইসলাম। উপহার পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে মনে অজান্তেই গড়িয়ে পড়ে দুফোঁটা অশ্রু। দুহাত তুলে দোয়া করেন মহান আল্লাহ পাকের দরবারে।